Thank you for trying Sticky AMP!!

গ্যাসের ব্যথা বলে অবহেলা নয়

কোনো উৎসব অনুষ্ঠানের পর হঠাৎ বুকে ব্যথা অনুভব করছেন। ভাবছেন, ভাজাপোড়া বা ভারী খাবার খেয়ে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা। তাই বাড়ির ড্রয়ারে রাখা গ্যাসের ট্যাবলেট বা সিরাপ খেয়ে শুয়ে পড়লেন। কিন্তু অস্বস্তি বা বুকের ব্যথা পুরোপুরি কমল না। ভোরে ব্যথা বাড়ল, সঙ্গে প্রচুর ঘাম। কাছাকাছি হাসপাতালে নেওয়ার পর জানা গেল, হার্ট অ্যাটাক হয়েছে এবং অবস্থা খুব সংকটপূর্ণ।

এমন ঘটনা প্রায়ই ঘটে। দীর্ঘ ছুটি বা উৎসবের দিনগুলোয় সাধারণ সমস্যাগুলো আমরা পাত্তা দিতে চাই না। ভাবি, এ সময় হয়তো ডাক্তার বা সেবা পাওয়া যাবে না। কিন্তু এ সামান্য ভুল বা দেরি মৃত্যু ডেকে আনতে পারে। বুকব্যথা বা অস্বস্তি হলে অ্যান্টাসিড বা ওমিপ্রাজলজাতীয় ওষুধ খেয়ে ফেলা ও চিকিৎসকের পরামর্শ না নেওয়া বা হাসপাতালে যেতে দেরি করা একটা সাধারণ প্রবণতা। মনে রাখবেন, সাধারণ বদহজম বা গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা আর হার্ট অ্যাটাকের উপসর্গ কিন্তু প্রায়ই এক রকম হতে পারে।

সাধারণ গ্যাস্ট্রিকের সমস্যায় যেখানে ওপরের পেটে ব্যথা, বুক জ্বালাপোড়া, মুখে টক টক স্বাদ, টক ঢেকুর—এসব উপসর্গ থাকে সেখানে হার্ট অ্যাটাক হলে সাধারণত বুকের মধ্যখানে চাপ চাপ ব্যথা হয়, অনেক সময় ব্যথা না হয়ে শুধু অস্বস্তি হতে পারে। ব্যথাটা চোয়ালে, ঘাড়ে, পিঠে বা হাতে ছড়িয়ে যেতে পারে। এ ব্যথা অন্তত ২০ মিনিট বা এর বেশি স্থায়ী হতে পারে। সঙ্গে প্রচণ্ড ঘাম, বমি অথবা বমি ভাব, শ্বাসকষ্ট হতে পারে। এমনকি অনেক সময় হার্ট অ্যাটাকের ব্যথা বুকে না হয়ে ওপরের পেটে হতে পারে।

চিকিৎসা

হার্ট অ্যাটাকের পর প্রতিটি মিনিট মূল্যবান। রোগনির্ণয়ের সঙ্গে সঙ্গেই অ্যাসপিরিনজাতীয় ওষুধ দিয়ে চিকিৎসা শুরু করা ও হার্ট অ্যাটাকের ১২ ঘণ্টার মধ্যে হাসপাতালে গেলে ব্লক খোলার চিকিৎসা দেওয়া যায়। দুই–তিন ঘণ্টার মধ্যে চিকিৎসা শুরু করলে আরও ভালো ফল পাওয়া যায়।

যেহেতু গ্যাস্ট্রিক ও হার্ট অ্যাটাকে প্রায় একই ধরনের উপসর্গ দেখা দেয়, তাই অনেক সময় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ছাড়া রোগনির্ণয় সম্ভব হয় না। এ জন্য বুকব্যথা, যা সহজে সারছে না বা থেমে থেমে বারবার হচ্ছে, ২০ মিনিটের বেশি স্থায়ী হচ্ছে, সঙ্গে ঘাম বা বমি ভাব; তবে সেই ব্যথাকে গ্যাস্ট্রিক ভেবে অবহেলা করা যাবে না।

  • ডা. শারমিন আহমেদ, সহকারী অধ্যাপক, কার্ডিওলজি বিভাগ, আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল কলেজ, ঢাকা