
সন্তান জন্ম দিতে গিয়ে অনেক নারীকেই সিজারিয়ান করাতে হয়। এমনিতে এটি খুব জটিল অস্ত্রোপচার নয়, কিন্তু এই সিজারিয়ানের কারণে পরে নারীরা কিছু অসুবিধা ভোগ করতে পারেন। সেলাইয়ে ব্যথা, সেই সমস্যাগুলোর মধ্যে অন্যতম। সিজারিয়ান অপারেশন সফলভাবে পরিচালনা করার দীর্ঘদিন পরও অনেকে ব্যথার অভিযোগ করে থাকেন।
এই ব্যথার অনেক কারণ থাকতে পারে। যেসব কারণে অপারেশনের অনেক দিন পরও সেলাইয়ে ব্যথা থাকে।
১. স্নায়ুরোগ: অপারেশনের সময় কেটে যাওয়া স্নায়ু অস্বাভাবিকভাবে আরোগ্য লাভ করতে পারে, যা বছরের পর বছর ধরে তীব্র জ্বালাপোড়া বা ঝিনঝিন ব্যথার সূত্রপাত করে।
২. সেলাইয়ের মোটা স্তর: অভ্যন্তরীণ সেলাইয়ের স্তর অনেক সময় অভ্যন্তরীণ অঙ্গ ও মাংসপেশির সঙ্গে লেগে থাকে। ফলে অস্বস্তি, টান টান ভাব ও নড়াচড়ার সময় ব্যথা করে।
৩. সেলাইয়ের মোটা স্তর ও এন্ডোমেট্রিওসিস: যদি এন্ডোমেট্রিয়াল টিস্যু কোনোভাবে অভ্যন্তরীণ সেলাইয়ের স্তরের সঙ্গে সংযুক্ত হয়ে যায়, তবে তা মাসিকের সময়ে তীব্র ব্যথার অনুভূতি সৃষ্টি করে।
৪. হার্নিয়া: যদি সেলাইয়ের জায়গার আশপাশে কোনো স্ফীত অংশ পাওয়া যায় ও সঙ্গে তীব্র ব্যথা থাকে, তাহলে তা হার্নিয়া।
৫. পেটের মাংসপেশির বিভাজন: পেটের মাংসপেশিতে দুর্বলতা বা বিভাজন হলে তা সেলাইয়ের জায়গায় অস্বস্তি ও টান টান অনুভূতি সৃষ্টি করে।
৬. অনিয়ম: অপারেশনের তাৎক্ষণিক পরে নিয়ম না মেনে যদি ভারী কাজ করা হয়, তাহলে সেলাইয়ের ব্যথা অনুভূত হয়, যা দীর্ঘদিন স্থায়ী হয়।
সমস্যাগুলো এড়াতে যা করতে পারি
১. ব্যথার জায়গা প্রসারিত করা: অভ্যন্তরীণ অঙ্গ ও মাংসপেশির সংযোজনকে বিচ্ছিন্ন করে শারীরিক গতিবিধিকে উন্নত করতে হবে।
২. ব্যথার ওষুধ: ব্যথানাশক ওষুধ এ ক্ষেত্রে বেশ উপকারী।
৩. শরীরচর্চা: একজন দক্ষ প্রশিক্ষককে দিয়ে মাংসপেশির চর্চা করতে হবে। এতে সেলাইয়ের ব্যথা ও অঙ্গের সঙ্গে মাংসপেশি সংযোজন কমে আসবে।
৪. সাময়িক চিকিৎসা: স্নায়ু রোগ হলে ওই অনুযায়ী চিকিৎসা নিতে হবে।
ব্যথা যদি তীব্র আকার ধারণ করে ও প্রাত্যহিক জীবনযাপনে ব্যাঘাত ঘটায়, তাহলে অবশ্যই কাছের ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হবে এবং প্রয়োজনীয় পরীক্ষা–নিরীক্ষা করে চিকিৎসা নিতে হবে।
ডা. সুমাইয়া বি. জাহান, রেসিডেন্ট মেডিকেল অফিসার, গাইনি ও প্রসূতি বিভাগ, স্কয়ার হাসপাতাল লিমিটেড