
হার্ট অ্যাটাকের উপসর্গ দেখা দিয়েছে, কিন্তু আপনি বাড়িতে একা। তীব্র ব্যথা ও আতঙ্কের ওই মুহূর্তে কী করা উচিত বা কী করা উচিত নয়, তা ঠান্ডা মাথায় ভেবে বের করা সত্যিই কঠিন। বিপদের মুহূর্তে করণীয় সম্পর্কে তাই আগে থেকেই জেনে রাখা উচিত। এ সম্পর্কে রাফিয়া আলমকে জানালেন ধানমন্ডির পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মেডিসিন কনসালট্যান্ট ডা. সাইফ হোসেন খান।
অনেকে মনে করেন, হার্ট অ্যাটাকের কারণে বুকের বাঁ পাশে ব্যথা হয়। ধারণাটি সঠিক নয়। হার্ট অ্যাটাকের ব্যথা হয় বুকের মাঝখানে। সাধারণত ব্যথার তীব্রতা খুব বেশি হয়। বুকে চাপ ধরার মতো কষ্টদায়ক অনুভূতি হয়।
কিছু ক্ষেত্রে ব্যথাটা হয় বুকের ঠিক নিচে অর্থাৎ ওপরের পেটে। বুক বা পেট থেকে ব্যথা ছড়িয়ে যেতে পারে বাহু, ঘাড়, চোয়াল কিংবা পিঠের দিকেও। ব্যথার সঙ্গে শ্বাসকষ্ট থাকতে পারে এবং অতিরিক্ত ঘাম হতে পারে।
বমি বমি ভাব হতে পারে। বমিও হতে পারে। মাথা হালকা হয়ে গেছে বলে মনে হতে পারে। মাথা ঘোরাতে পারে। হঠাৎ প্রচণ্ড অবসন্ন লাগতে পারে। মনে মৃত্যুর ভয়ও জাগতে পারে।
হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুততম সময়ে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া আবশ্যক। তাই দ্রুত সাহায্য নিন। অ্যাম্বুলেন্স ডেকে দ্রুত কাছের হাসপাতালে যাওয়ার ব্যবস্থা করুন।
তবে তার আগে নাইট্রোগ্লিসারিন স্প্রে নিতে পারেন জিবের নিচে। দুই চাপ স্প্রে নিলে কিছু সময়ের জন্য খানিকটা স্বস্তি পেতে পারেন। নিকটতম দূরত্বে চেনাজানা কেউ থাকলে তাঁকে খবর দিন। পাশে থাকার অনুরোধ করুন। বাড়িতে নাইট্রোগ্লিসারিন স্প্রে না থাকলে তাঁকে তা নিয়ে আসতেও বলতে পারেন।
অনেকের এমনটাও মনে হতে পারে যে এত সব কিছু না করে ওই সময় নিজেই হাসপাতালে রওনা দিলে হয়তো আরও দ্রুত চিকিৎসা শুরু করা সম্ভব। তবে মুশকিল হলো, একা পথে ঘটতে পারে আরও বিপদ। কারণ, হার্ট অ্যাটাকের একটা পর্যায়ে রোগী জ্ঞান হারাতে পারেন। এ ঘটনাটি পথেও ঘটতে পারে। তাই যেখানে আছেন, সেখানেই থাকুন সাহায্যের অপেক্ষায়। দরজা রাখুন উন্মুক্ত।
আসন্ন বিপদের আশঙ্কায় অস্থির হয়ে পড়বেন না। নিজেকে শান্ত রাখুন। ছোটাছুটি না করে বসুন।
চাইলে শোয়াও যেতে পারে। বিশেষত মাথা ঘোরালে বা মাথা হালকা মনে হলে শুয়ে পড়ুন।
শ্বাসকষ্ট থাকলে মাথার দিকটা একটু উঁচু রাখলে স্বস্তি পাবেন।
হার্ট অ্যাটাকের সময় কিছু না খাওয়াই ভালো। ওই মুহূর্তে খাবার বা পানি যেকোনো কিছু খেতে গিয়েই বিপত্তি বাধতে পারে।