শিশু জ্বর হলে খেতে চায় না একদম, কী করব

জ্বরের সময় এমনিতেই শিশুর শরীর দুর্বল হয়ে যায়
ছবি: কবির হোসেন

শিশুকে খাওয়াতে গিয়ে এমনিতেই মা-বাবা-স্বজনদের নানা কৌশল অবলম্বন করতে হয়। কেউ গল্প বলে খাওয়ান, কেউ খেলতে খেলতে খাওয়ান, তবু শিশু খেতে চায় না। অসুখ-বিসুখ হলে তো কথাই নেই। খাওয়াদাওয়া বন্ধ করে দেয় বেশির ভাগ শিশু। বেচারারই–বা দোষ কী বলুন? জ্বরের সঙ্গে অরুচি থাকে। জোর করলে কখনো কখনো বমিও হয়ে যায়। ওষুধের কারণেও অনেক সময় মুখে তেতো ভাব থাকে। সব মিলিয়ে খাওয়া প্রায় বন্ধই হয়ে যায়।
জ্বরের সময় এমনিতেই শিশুর শরীর দুর্বল হয়ে যায়। তার সঙ্গে যদি যুক্ত হয় অরুচি আর বমি, সে আরও দুর্বল হয়ে পড়ে। রোগ প্রতিরোধক্ষমতাও কমে যায়। এ ক্ষেত্রে করণীয় কী–

কী খাওয়ানো যেতে পারে

প্রথমত, শিশুকে এমন খাবার খাওয়ানোর চেষ্টা করুন, যা সে খেতে পছন্দ করে, আবার জ্বরের মতো অসুস্থতায় উপকারীও বটে।
জ্বর হলে সাধারণত শিশু পানিশূন্যতায় ভোগে। তাই এ সময় শিশুকে বারবার তরল খাবার দেওয়া উচিত। দুধ, ভাতের মাড়, সবজি স্যুপ, জাউ, পাতলা খিচুড়ি ও ডালের পানি দেওয়া যায়।

অনেক শিশুই অসুস্থ হলে দুধ খেতে চায় না। দুধ খেতে না চাইলে ক্যালরি ও পুষ্টি জোগাতে মিল্কশেক, পুডিং তৈরি করে দেওয়া যেতে পারে।
ভিটামিন সি রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। পেয়ারা, আমলকি বা কমলালেবু শিশুর জ্বরে ভালো কাজ করে। ফলের রস, লেবুর শরবত শিশুরা খেতেও পছন্দ করে।
অধিকাংশ শিশুই মুরগির মাংস খেতে ভালোবাসে। সে ক্ষেত্রে এর স্যুপ করে দিতে পারেন।
ডিমের প্রোটিন জ্বরের দুর্বলতা কাটাতে সাহায্য করে। ডিম সেদ্ধ করে শিশুকে খাওয়াতে পারলে সেটাও শিশুর জন্য উপকারী।
জ্বরে ভুগলে অনেক সময় মাছের প্রতি অনীহা জন্মায়, তাই মাছের টিকিয়া বা চপ শিশুর স্বাদ পরিবর্তনে সাহায্য করবে। আমিষের অভাবও পূরণ করবে।

শিশুকে এমন খাবার খাওয়ানোর চেষ্টা করুন, যা সে খেতে পছন্দ করে, আবার জ্বরের মতো অসুস্থতায় উপকারীও বটে।

প্রতিদিন একবার ডাবের পানি দেওয়া যেতে পারে। জ্বরে অনেক সময় শরীরে খনিজের তারতম্য দেখা দেয়। এ সময় ডাবের পানি সেই অভাব পূরণ করে। তবে অতিরিক্ত ডাবের পানি দেওয়া উচিত নয়, শরীরে পটাশিয়ামের পরিমাণ বেড়ে যেতে পারে।
কুসুম গরম পানির সঙ্গে মধু মিশিয়ে খাওয়াতে পারেন।
ঘন ঘন বমি বা পায়খানা করলে বারবার ওরস্যালাইন খাওয়ান।
একসঙ্গে সব খাবার না দিয়ে দুই ঘণ্টা পর পর অল্প অল্প করে খাওয়ানো উচিত। যদি শিশু সম্পূর্ণভাবে খাওয়াদাওয়া বন্ধ করে দেয়, অতিরিক্ত দুর্বল হয়ে পড়ে, তবে তা বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে। এ ক্ষেত্রে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।