ইসবগুলের ভুসির আছে নানা উপকারিতা। এই ভুসিতে মেলে প্রায় ৭০ শতাংশ দ্রবীভূত এবং ৩০ শতাংশ অদ্রবণীয় খাদ্য আঁশ বা ফাইবার। তাই রোজ একবার দইয়ের সঙ্গে ইসবগুলের ভুসি খেলে পাবেন বেশ কিছু উপকারিতা।
ডায়াবেটিসের জন্য উপকারী
ডায়াবেটিক রোগীদের রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা কমাতে ইসবগুল বেশ কার্যকর। ইসবগুলোর ভুসি হজমের সময় পাকস্থলীতে একটি আঠালো জেল তৈরি করে। আর এই জেল পাকস্থলীতে আংশিকভাবে হজম হওয়া খাবারেও আঠালো ভাব এনে দেয়। এতে জটিল কার্বোহাইড্রেট এবং পাচক এনজাইমের মধ্যে মিথস্ক্রিয়া হ্রাস করে হজমের গতি করে ধীর। ফলে গ্লুকোজের শোষণ ধীরগতির হয়ে পড়ে। আর এতেই রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা কমে যায়। দইয়ের সঙ্গে ইসবগুলের ভুসি খেলে খাবারের গ্লাইসেমিক সূচক কমে যায়, যা টাইপ–টু ডায়াবেটিক রোগীর রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।
ওজন কমাতে সাহায্য করে
ওজন কমানোর জন্য ইসবগুলের ভুসি বেশ কার্যকর। এই ভুসি বেশ লম্বা সময় পেট ভরা থাকার অনুভূতি দেয় এবং চর্বি–জাতীয় খাবার খাওয়ার ইচ্ছা কমায়। এ ছাড়া ইসবগুলের ভুসি কোলন পরিষ্কারক হিসেবেও পরিচিত। হরেক রকম কাঁচা খাবার খাওয়ার ফলে আমাদের কোষ্ঠকাঠিন্য বা বদহজমজনিত সমস্যা দেখা দিতে পারে। তবে ইসবগুলের ভুসি পাকস্থলী থেকে বর্জ্য পদার্থ বের করে দিয়ে হজম প্রক্রিয়া আরও বেশি কার্যকর করতে সাহায্য করে। প্রতিদিন দইয়ের সঙ্গে ইসবগুলের ভুসি খেলে তাই উপকার মেলে আরও বেশি। দইয়ে আছে ক্যালসিয়াম ও প্রোটিন, যা শরীরে পুষ্টি জোগায়। অন্যদিকে দীর্ঘসময়ের জন্য এই খাবার আপনাকে স্বস্তিও দেবে।
কোষ্ঠকাঠিন্য দূরীকরণে
দইয়ের সঙ্গে ইসবগুলের ভুসি খেলে কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো সমস্যা সমাধানে বেশ উপকার পাবেন। এতে প্রচুর খাদ্য আঁশ বা ফাইবার থাকে। ইসবগুলের ভুসি অনেকটা সময় পানি ধরে রাখতে পারে। তাই প্রতিদিন ইসবগুলের ভুসি খেলে মলত্যাগ প্রক্রিয়া হয় সহজ ও আরামদায়ক।
ডায়রিয়া সমস্যায় সহায়ক
ইসবগুলের ভুসি ডায়রিয়াতেও উপকারী। এর খাদ্য আঁশের কারণে কোলনে পানির জোগান দেয়। ডায়রিয়া হলে খাওয়ার পর ২ চামচ ইসবগুলের ভুসি ৩ চামচ দইয়ের সঙ্গে মিশিয়ে খেলে দারুণ উপকার পাবেন। প্রতিদিন এই নিয়মে ইসবগুল সেবনে মল শক্ত হবে। দই প্রোবায়োটিক–জাতীয় খাবার বলে পেটের অসুখ নিরাময়ে সহায়ক।
উচ্চ রক্তচাপ এবং কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ
গবেষণায় দেখে গেছে, ইসবগুলের ভুসি নিয়মিত খেলে হার্ট ভালো থাকে। কারণ, এতে থাকা খাদ্য আঁশ ক্ষতিকর কোলেস্টেরলের (এলডিএল) মাত্রা কমিয়ে হৃদ্রোগের ঝুঁকি থেকে দূরে রাখে, তা ছাড়া উচ্চ রক্তচাপ এবং বডি মাস ইনডেক্স (বিএমআই) নিয়ন্ত্রণে সহায়ক ইসবগুলের ভুসি। এটি অন্ত্রের দেয়ালে একধরনের পাতলা স্তর সৃষ্টি করে, যা খাদ্য থেকে কোলেস্টেরল শোষণে বাধা দেয়। বিশেষ করে রক্তের সিরাম কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়। এ ছাড়া এটি রক্তের অতিরিক্ত কোলেস্টেরল দূর করতেও কার্যকর। ফলে ধমনিতে ব্লক সৃষ্টির ঝুঁকি কমে।
তথ্যসূত্র: রিডার্স ডাইজেস্ট