ভালো থাকুন

হালকা গড়নের মানুষদেরও কি ফ্যাটি লিভার হতে পারে

ফ্যাটি লিভার আজকাল খুবই পরিচিত সমস্যা। সাধারণত ফ্যাটি লিভার ওজনাধিক্য বা স্থূলতায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের হয়ে থাকে। কিন্তু কখনো কখনো স্লিম বা পাতলা বা স্বাভাবিক ওজনের মানুষদেরও ফ্যাটি লিভার হতে পারে। চিকিৎসাবিজ্ঞানে একে বলা হয় লিন এমএএফএলডি বা হালকা গড়নের মানুষদের মধ্যে অ্যালকোহলবিহীন ফ্যাটি লিভার রোগ।

কারণ

অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস: ব্যস্ত জীবনে রেডি ফুড বা ফাস্ট ফুড দিয়ে খাবার চালিয়ে নেন অনেকে। রেস্তোরাঁয় খাওয়া বা ফুড ডেলিভারি সিস্টেম থেকে খাবার আনিয়ে নেওয়ার প্রবণতা বাড়ছে। যাঁরা স্থূল নন, তাঁরা ভাবেন এ ধরনের খাবার খেতে তাঁদের তো সমস্যা নেই। কিন্তু আসলে তা নয়। মনে রাখতে হবে, তেল-চর্বি, ভাজা-পোড়া, ফাস্ট ফুড, সফট ড্রিংক বা চিনিযুক্ত খাবার খেলে লিভারে চর্বি জমে।

জেনেটিক বা পারিবারিক প্রভাব: পরিবারে কারও ডায়াবেটিস, উচ্চ কোলেস্টেরল বা ফ্যাটি লিভার থাকলে সে পরিবারের হালকা গড়নের সদস্যটিও আক্রান্ত হতে পারেন।

শারীরিক কার্যকলাপের অভাব: শরীর পাতলা হলেও যদি ব্যায়াম না করা হয় এবং সারা দিন বসে থাকা হয়, তবে লিভারে চর্বি জমতে পারে।

ডায়াবেটিস বা ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স: পাতলা মানুষের শরীরে ইনসুলিন সঠিকভাবে কাজ করে না;   চর্বি ভাঙতে সমস্যা হয় এবং তা লিভারে জমে।

রক্তের চর্বি (লিপিড) বেশি: অনেক পাতলা মানুষের বংশগতভাবে ট্রাইগ্লিসারাইড বা কোলেস্টেরল বেশি থাকতে পারে। এ রকম থাকলে লিভারে চর্বি জমতে পারে।

ফ্যাটি লিভারের ঝুঁকি

ফ্যাটি লিভার দীর্ঘ মেয়াদে লিভারের দীর্ঘমেয়াদি প্রদাহ করতে পারে। পরে তা লিভার ফাইব্রোসিস বা সিরোসিস পর্যন্ত গড়াতে পারে। এ ছাড়া এটি ডায়াবেটিস, হৃদ্‌রোগ, কোলেস্টেরল ও উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি বাড়ায়।

প্রতিরোধ ও করণীয়

সুষম খাদ্যাভ্যাস: শাকসবজি, ফল ও আঁশযুক্ত খাবার বেশি করে খাওয়া।

নিয়মিত ব্যায়াম:  কঠিন ব্যায়ামের প্রয়োজন নেই, প্রতিদিন ৩০-৪০ মিনিট হাঁটা বা হালকা ব্যায়াম করাই যথেষ্ট।

এ ছাড়া যেহেতু ফ্যাটি লিভারের সঙ্গে ডায়াবেটিস, কোলেস্টেরল ও রক্তচাপের গভীর সম্পর্ক রয়েছে, সেহেতু এ সমস্যাগুলো আছে কি না, পরীক্ষা করে দেখতে হবে।

  • ডা. সাইফ হোসেন খান, মেডিসিন কনসালট্যান্ট, পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টার, ধানমন্ডি