কেমন হবে নবদম্পতিদের ঘরের দেয়াল?

কেমন হবে নবদম্পতিদের বাড়ির দেয়াল? বাড়ির কোথায় কোন রং মানানসই? চলতি ধারার সঙ্গে তাল মেলাতে চাইলে কোন রঙের কথা ভাববেন? কিংবা কোন ধরনের রং কোন ঘরের উপযুক্ত? জানাচ্ছেন রাফিয়া আলম

সমুদ্রের নীলের মতো উজ্জ্বল, প্রাণবন্ত রং বেছে নিতে পারেন বসার ঘরের দেয়ালের জন্য
ছবি: সাবিনা ইয়াসমিন

শুরুর দিকের দিনগুলোর অনেকটা সময় শোবার ঘরেই নিভৃতে কাটান নবদম্পতিরা। কত কথা, কত ভাবনা। কত হাসি, কত কান্নার স্মৃতির আলোড়ন। কখনো চলে পুরোনো বইয়ের পাতা ওলটানো। এই ঘরের বারান্দায়ই নতুন একেকটা ভোরের সূচনা, বিকেল বা সন্ধ্যার আয়েশি সময়যাপন। সেই ঘরের দেয়ালের জন্য কোমল রংই ভালো।

চলতি ধারাতেও শোবার ঘরের জন্য কোমল ধাঁচের রংই এখন জনপ্রিয়। ব্লাশ কিংবা আইভরি রং আধুনিক অন্দরে মানানসই। প্রশান্তি আর প্রেমের অনুভূতির জন্ম দেয় এমন রং। নিজস্ব এই পরিসরে লাক্সারি ম্যাট বা লাক্সারি সিল্কের রঙের ধারা ব্যবহার করতে পারেন।

বসার ঘরের জন্যও লাক্সারি সিল্ক দারুণ। পরিবারের সবার সঙ্গে একটা লম্বা সময় কাটানো হয় এ ঘরে। সমুদ্রের নীলের মতো উজ্জ্বল, প্রাণবন্ত রং বেছে নিতে পারেন বসার ঘরের দেয়ালের জন্য। এ ঘরের ছাদে থাকতে পারে ধূসর রঙের ছোঁয়া।

অতিথিদের থাকার ঘরের জন্য বেছে নিন কোমল ধাঁচের রং। খাবার ঘরে একটু হালকা, নিরপেক্ষ ধরনের রং ব্যবহার করতে পারেন।

আলোর উৎসের দিকে খেয়াল রেখে দেয়ালের রং বাছাই করুন

তবে আপনার সংসারের বয়স যাই হোক, বাড়িতে রং করাতে চাইলে কিছু বিষয় খেয়াল রাখুন—

ঘরের আকার, জানালার অবস্থান এবং আলোর উৎসের দিকে খেয়াল রেখে দেয়ালের রং বাছাই করুন, না হলে রং বাছাইয়ের ভুলে ঘরটা অন্ধকার দেখাবে। যেমন জানালার উল্টো পাশের দেয়ালে চকচকে ধরনের রং (গ্লসি ফিনিশ) ব্যবহার করতে পারেন। তাহলে জানালা দিয়ে আসা আলো দেয়ালে প্রতিফলিত হওয়ার সুযোগ থাকবে। ফলে ঘরটা আলোঝলমলে দেখাবে। ছোট মনে হবে না।

ছোট আকারের ঘরের দেয়ালের জন্য গাঢ় শেডের রং উপযোগী না। বরং হালকা শেডের রং বেছে নেওয়া প্রয়োজন। তাতে ঘরটা বড় দেখায়।

বড় আকারের ঘরের দেয়ালে বা বড় করিডরে গাঢ় শেডের রং ব্যবহার করুন। আরামদায়ক ও সুখকর অনুভূতি দেবে।

চলতি ধারার সঙ্গে নিজের ভাবনার মিশেলে সাজিয়ে তুলুন আপনার বাড়ির অন্দর

রান্নাঘর ও বাথরুমের জন্য অবশ্যই ড্যাম্প–প্রতিরোধী রং বেছে নিন। দেয়ালে এ ধরনের রং করানো হলে হুট করে লেগে যাওয়া দাগছোপ মুছে ফেলাও সহজ হবে। ড্যাম্পের ঝুঁকি থাকলে বাড়ির অন্যান্য ঘরের দেয়ালের জন্যও এ ধরনের রং ব্যবহার করা ভালো।

যে ঘরে শিশুরা থাকবে, সেই ঘরের জন্য এমন রং বেছে নিন, যাতে চোখ জ্বালা না করে এবং উৎকট গন্ধেরও সৃষ্টি না হয়। অর্থাৎ শিশুর সংবেদনশীল দেহে কোনো নেতিবাচক প্রভাব না পড়ে। বার্জারের ব্রিদ ইজি পেইন্টের রংগুলো থেকে প্যাস্টেল শেডের যেকোনো রং বেছে নিতে পারেন। তাতে শিশুর ঘরটা প্রাণবন্ত দেখাবে।

আর শেষ কথা হলো, অন্দর আপনার রুচিশীলতার পরিচায়ক। নিজস্বতার পরিচয় রাখার এমন স্বাধীনতা আর কোথায়–ই বা পাবেন! তাই নিজের মনের কথা শুনুন। চলতি ধারার সঙ্গে নিজের ভাবনার মিশেলে সাজিয়ে তুলুন আপনার বাড়ির অন্দর। আর অবশ্যই আপনার জীবনসঙ্গীর ভালো লাগার দিকেও খেয়াল রাখুন। দুজনে মিলে তবেই না সংসার! দুজনের একই সঙ্গে পথচলার জন্যই না এত আয়োজন।