হেলমেট ভেতরের প্যাডিংয়ের সঙ্গে আটকে থাকা ধুলা, তেল ও ঘামের প্রায় সবই ধরে রাখে, যা ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাকের বসবাসের উপযুক্ত জায়গা তৈরি করে। অপরিষ্কার হেলমেট পরে দীর্ঘ সময় ভ্রমণ করলে দেখা দিতে পারে বেশ কিছু সমস্যা।
মূলত মোটরসাইকেলে চলাচলের সময় আঘাত থেকে সুরক্ষিত থাকতে আমরা হেলমেট পরি। কিন্তু এই উপকারী জিনিস কখনো কখনো আপনার চুল ও মাথার ত্বকের ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। হেলমেটের কারণে মাথার ত্বকে খুশকি, এমনকি ব্রণও হতে পারে। অপরিষ্কার হেলমেট পরে দীর্ঘ সময় ভ্রমণ করলে দেখা দিতে পারে বেশ কিছু সমস্যা। যেমন চুল ভেঙে যাওয়া, মাথায় জ্বালাপোড়া, লোমকূপ বন্ধ হয়ে যাওয়া ইত্যাদি। চলুন জেনে নেওয়া যাক, এসব সমস্যা মোকাবিলা করার কিছু উপায়।
প্রতিদিন আপনার হেলমেটের লাইনার ধুয়ে নিন
শুনতে একটু ঝামেলার মনে হতে পারে। কিন্তু মনে রাখবেন, হেলমেট ভেতরের প্যাডিংয়ের সঙ্গে আটকে থাকা ধুলা, তেল ও ঘামের প্রায় সবই ধরে রাখে, যা ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাকের বসবাসের উপযুক্ত জায়গা তৈরি করে। ফলে দুর্গন্ধের পাশাপাশি মাথার ত্বকে জ্বালাপোড়ার সৃষ্টি হয়। তাই সাবান-পানি দিয়ে আপনার হেলমেটের লাইনারটি খুলে স্বাভাবিকভাবে শুকিয়ে নেওয়ার অভ্যাস করুন।
আপনি পরিষ্কার হেলমেট পরে থাকলেও মাথার ত্বকের সরাসরি সংস্পর্শে ঘাম ও তাপ আটকে থাকতে পারে। তাই হেলমেটের নিচে একটি পাতলা, সুতির আন্ডারক্যাপ পরুন। এটি আপনার মাথার ত্বক ও চুলকে হেলমেটের সরাসরি সংস্পর্শ থেকে সুরক্ষিত রাখবে। এসব টুপি মোটরসাইকেল চালানোর সময় ঘাম শোষণ করে। ফলে মাথার ত্বকে ঘাম বসে যায় না। ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া ও ময়লা মাথার ত্বকে মিশে যেতে পারে না। এটি চুল ছিঁড়ে যাওয়া রোধ করে এবং মাথার ত্বকে জ্বালাপোড়ার আশঙ্কাও কমিয়ে দেয়।
হেলমেট পরে বের হওয়ার আগে মাথায় তেল, জেল, ওয়াক্স ইত্যাদি চুলে লাগাবেন না। এসব সহজেই হেলমেটের নিচে ঘামের সঙ্গে মিশে যায়। ফলে আপনার লোপকূপ ও হেয়ারলাইন ময়লা জমে বন্ধ হয়ে যেতে পারে। এতে চুল ভেঙে যেতে পারে এবং মাথায় জ্বালাপোড়া হতে পারে। খুব প্রয়োজন হলে সহজে বাতাস চলাচল করতে পারে, এমন একটি হেয়ারস্টাইল বেছে নিন। তেলতেলে চুল নিয়ে বের হবেন না। তেল সহজেই ধুলাবালু টেনে নেয়। বাসা থেকে বের হওয়ার আগে চুলে তেল না দিলে মাথার ত্বকে ব্যাকটেরিয়া জন্মানোর আশঙ্কা কমে যায়।
আপনি যদি প্রতিদিন মোটরসাইকেলে যাতায়াত করেন, তাহলে আপনার মাথার ত্বকে ঘাম হবে। ধুলা, তেল এবং দূষণকারী নানা উপাদান মাথায় জমে থাকবে। যদি আপনি এক দিনের জন্যও গোসল না করেন, তাহলে চুলের ফলিকলগুলোয় ময়লা জমে যেতে পারে। মাথার ত্বকে ব্রণ সৃষ্টি হতে পারে, শুরু হতে পারে জ্বালাপোড়া। তাই দীর্ঘক্ষণ মোটরসাইকেল চালানোর পর চুল ধোয়ার অভ্যাস করুন। একটি মৃদু, সালফেটমুক্ত শ্যাম্পু বেছে নিন। এ ধরনের শ্যাম্পু মাথার ত্বকে স্বাভাবিকভাবে উৎপন্ন হওয়া তেল অপসারণ না করেই চুল পরিষ্কার করবে।
অনেকেই মনে করেন, হেলমেট আর এমন কী? ধার তো নেওয়া বা দেওয়াই যায়। কিন্তু হেলমেট আপনার একান্ত ব্যক্তিগত জিনিস। আরেকজনের হেলমেট পরলে ঘাম, খুশকি ও ব্রণ সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়া একজনের মাথার ত্বক থেকে আরেকজনের মাথার ত্বকে স্থানান্তরিত হয়। মাথায় ব্রণ ও জ্বালাপোড়ার ঝুঁকিও বাড়ায়। আপনার হেলমেটটি খালি চোখে হয়তো পরিষ্কার দেখায়। কিন্তু তাতে ঠিকই ব্যাকটেরিয়া থাকে। এসব ব্যাকটেরিয়া প্যাডিং ও স্ট্র্যাপ পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে। তাই যদি আপনি খুব কাছের কাউকেও হেলমেট ধার দেন, তাঁকে হেলমেটের নিচে একটি আন্ডারক্যাপ বা স্কার্ফজাতীয় কিছু পরতে বলুন।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া