দ্য ইউনিভার্সিটি ফিজিকস কম্পিটিশন—নাম শুনেই বুঝতে পারছেন, এটি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের জন্য আয়োজিত একটি পদার্থবিজ্ঞানবিষয়ক প্রতিযোগিতা। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের শিক্ষার্থীরা এতে অংশ নেন। এই প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে বাংলাদেশের একটি দল জিতেছে স্বর্ণপদক। দলের নাম ‘টিম ৪৯৪’। বিজয়ী দলের সদস্যরা হলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মো. বাঁধন মৃধা, ইমন হোসেন ও মুহাম্মাদ আরিফ হুসাইন।
অনলাইনে প্রতিযোগিতাটি অনুষ্ঠিত হয়েছিল ২-৪ নভেম্বর। তবে বিজয়ীদের নাম ঘোষণা হয়েছে ১৭ জানুয়ারি। ইউনিভার্সিটি ফিজিকস কম্পিটিশনের এই ১৫তম আসরে বিশ্বের ২০টি দেশের ৬৮১টি দল অংশগ্রহণ করে। স্বর্ণপদক পেয়েছে ১৫টি দল, তার মধ্যে ‘টিম ৪৯৪’ অন্যতম। পদক জয়ের অনুভূতি প্রসঙ্গে বাঁধন মৃধা বলেন, ‘আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় স্বর্ণপদক অর্জন করতে পেরে আমি বেশ আনন্দিত ও গর্বিত। এই গর্ব যতটা না ব্যক্তিগত, তার চেয়ে বেশি নিজের দেশ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য। আমি তো দেশ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধি হিসেবেই এই সুযোগ পেয়েছি।’
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়সহ বাংলাদেশের বেশ কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে রৌপ্য ও ব্রোঞ্জপদক জিতেছে। টিম ৪৯৪ কীভাবে সবাইকে ছাড়িয়ে গেল? ইমন হোসেন জানালেন, সফলতার পেছনে কাজ করেছে দলগত সমন্বয়। ‘আমাদের দলে একজন বিশ্লেষকের দায়িত্ব পালন করেছে। একজন কোডিংয়ের মাধ্যমে বিভিন্ন গাণিতিক সমস্যার সমাধান খুঁজেছেন। আরেকজন ছিলেন ভালো উপস্থাপক। সবার সমন্বয়ই ভালো ফল আনতে সাহায্য করেছে।’ গত বছরও একই দল নিয়ে প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছিলেন ইমনেরা। সেবার অবশ্য রৌপ্যপদকেই শেষ হয়েছে তাঁদের যাত্রা।
দলের আরেক সদস্য বাঁধন মৃধা বলেন, ‘আমরা যেহেতু পদার্থবিজ্ঞানের ছাত্র, তাই একাডেমিকভাবেই পদার্থবিজ্ঞান এবং এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় শিখতে হয়েছে। যা প্রতিযোগিতায় খুব সহায়ক ছিল। যেমন প্রোগ্রামিংয়ের দক্ষতার কথা যদি বলি, তৃতীয় বর্ষে আমাদের একাডেমিক কোর্সের অংশ হিসেবে প্রোগ্রামিং শিখতে হয়েছিল। এই প্রোগ্রামিংয়ের দক্ষতা গত বছর ও এই বছরের প্রতিযোগিতায় বিশেষভাবে সহায়তা করেছে।’
পদার্থবিজ্ঞানে নিজেদের জানাশোনা আরও বাড়াতে চান এই শিক্ষার্থীরা, অবদান রাখতে চান জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র ইমন হোসেন বলেন, ‘আমার প্রধান লক্ষ্য হলো কোয়ান্টাম কম্পিউটিং গবেষক হওয়া। এমন কিছু অসাধারণ কাজ করা, যা আমাকে একদিন নোবেল পুরস্কারের মঞ্চে দাঁড় করাবে।’