এখন অগ্রহায়ণ। এ সময় খেতের সোনালি ধান গোলায় ওঠে, নতুন চালের গন্ধে ভরে যায় ঘরদোর। উঠানে সারি সারি হাঁড়িতে ভাপ ওঠে পিঠাপুলি থেকে। আত্মীয়স্বজনের দাওয়াত, নবান্নের আনন্দ আর দীর্ঘ শীত রাতের ঘরোয়া উৎসব—সব মিলিয়ে এই মাসের সঙ্গে মিশে আছে একটা অন্য রকম আবেগ। দিনের আলো ছোট হতে হতে যখন দ্রুত নিভে আসে, তখনই গ্রামবাংলার অবসরপ্রবণ রাতগুলো গল্প-কবিতা-গানের উষ্ণতায় উজ্জ্বল হয়ে ওঠে।
শীতকে স্বাগত জানাতে তাই ব্যতিক্রমী এক আয়োজন করেছিল ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশের (আইইউবি) জার্নালিজম ক্লাব। ৩ ডিসেম্বর ক্যাম্পাসেই আয়োজিত এ অনুষ্ঠানের নাম—‘আন্ডার দ্য স্টারস’। খোলা আকাশের নিচে, তারার আলোয় গান, কবিতা, নাচ আর আড্ডার এক অনন্য সন্ধ্যা। শহরের ব্যস্ততা, ক্লাস-অ্যাসাইনমেন্টের চাপ আর কাঠামোবদ্ধ জীবনের বাইরে গিয়ে প্রকৃতির সান্নিধ্যে শীতকে উপভোগ করার এমন আয়োজন শিক্ষার্থীদের জন্য ছিল এক ভিন্ন অভিজ্ঞতা।
অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন আইইউবির বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান দিদার এ হোসেইন। বিজয়ের মাস ডিসেম্বরে দাঁড়িয়ে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি, দেশপ্রেম, শিক্ষার্থীদের ভূমিকা এবং ভবিষ্যৎ পথচলার গুরুত্ব নিয়ে অনুপ্রেরণাদায়ী বক্তব্য দেন তিনি।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন উপাচার্য ম তামীম, সহ-উপাচার্য ড্যানিয়েল ডব্লিউ লুন্ড, ডিন বখতিয়ার আহমেদ, ডিপার্টমেন্ট অব মিডিয়া অ্যান্ড কমিউনিকেশনের প্রধান ইমরান ফিরদাউস, ডিভিশন অব স্টুডেন্ট অ্যাকটিভিটিজের প্রধান আতিফ এম সাফি এবং ক্লাব উপদেষ্টা মুশফেকা ইসলাম।
উদ্বোধনের পর মঞ্চে আসেন স্কুল অব লিবারেল আর্টসের ডিন বখতিয়ার আহমেদ। তিনি আবৃত্তি করেন কবি জীবনানন্দ দাসের একটি জনপ্রিয় কবিতা। অগ্রহায়ণের বিকেলের ম্লান আলোয় পরিবেশটা বদলে যায় মুহূর্তেই।
একপর্যায়ে মঞ্চে যোগ দেন ইমরান ফিরদাউস ও মুশফেকা ইসলাম। দুই শিক্ষকও কবিতা ও গানের মধ্য দিয়ে শিক্ষার্থীদের আয়োজনে সরাসরি অংশ নেন।
উদ্বোধনী পর্বের পর সন্ধ্যাটা জমে ওঠে আরও। একে একে শিক্ষার্থীরা পরিবেশন করেন নাচ, গান, আবৃত্তি কিংবা প্রতিরোধের কবিতা। পুরো প্রাঙ্গণ তখন তরুণদের হাসি, উৎসাহ আর করতালিতে ভরপুর। সব শেষে ছিল ‘ডেড এন্ড’ ও ‘ফিরোজ জং’ ব্যান্ডের গান।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক ও কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন এ আয়োজনে। অনুষ্ঠানের মূল সহযোগী ছিল ভাইয়া হোটেল। এ ছাড়া আরও সহায়তা করেছে ওয়ালটন লিফট, পাঠাও ও নেসক্যাফে।