
পাঠকের সুখ–দুঃখ, হাসি–আনন্দ, পছন্দ, ভালোলাগা, ভালোবাসাসহ যে কোনো না বলা কথা শুনতে চায় মনের বাক্স। প্রতি সপ্তাহে পাঠকের পাঠানো সেসব লেখা থেকে নির্বাচিত কিছু লেখা আজ প্রকাশিত হলো এখানে
আমার ধারণা প্রতিটি মানুষই মানসিক রোগী! একেকজন একেকভাবে, একেক কারণে মানসিক ব্যাধিতে ভোগেন। আমি যেভাবে ভুগি, সেভাবে হয়তো অন্য কেউ ভোগে না। কিন্তু সে–ও ভোগে। আমার এই ব্যাধিকে অন্য নাম দিয়ে কেউ বলছে, ভালোবাসা।
কয়েকজনকে বললাম আমার সমস্যার কথা, কেউ গুরুত্ব দিচ্ছে না। আমি খুব মানসিক যন্ত্রণায় ভুগছি। কোনো সমাধান পাব কি না, তা–ও নিশ্চিতভাবে বলতে পারছি না। তবে আমার ভালোবাসার সমীকরণটা দিনকে দিন জটিল থেকে জটিলতর হয়ে যাচ্ছে। সমাধানের পথ খুঁজছি কিন্তু পাচ্ছি না। কেউ কেউ আমার এসবকে পাগলামি ভেবে বসে আছে। সমীকরণের মানটি পাচ্ছি না। ‘পাচ্ছি না’ বলে বলা ভালো, আমি যেগুলো বসাতে চাচ্ছি সেই মানগুলোর মালিকেরা রাজি হচ্ছে না। সব মিলিয়ে খুব অনিশ্চয়তায় ভুগছি। ভাবছি কবে সমীকরণের সঠিক মান পাব আর স্বার্থহীন ভালোবাসা হিসেবে তাকে প্রতিষ্ঠিত করব।
মো. সাকিব আল হাসান
শৈশব থেকে আমরা বেড়ে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের চারপাশের পরিবেশে মিশতে থাকি। বিভিন্ন মানুষের সঙ্গে সম্পর্কে জড়াই। এদের নিজের সবচেয়ে কাছের ভেবে বুকে টেনে নিই। এই মানুষগুলোকে নিয়ে এতই ব্যস্ত হয়ে পড়ি যে কাছের মানুষগুলোকেই ভুলে যাই। কিন্তু সুসময় শেষ হওয়ার পরপরই যাদের আপন ভাবছি, তারা হারিয়ে যায়। নিজের স্বার্থ বুঝে কেটে পড়ে। হারিয়ে যায় না শুধু তারা, যারা আমাদের আপনজন। বিপদের সময় পাশে দাঁড়ায়, কষ্ট পেলে বুকে টেনে নেয়। পৃথিবীতে তারাই সবচেয়ে আপন, যারা শত দুঃখেও পাশে থাকে। শত কষ্টের পরও ছেড়ে যায় না।
সাগর মৈত্র, রাজবাড়ী
৯ এপ্রিল আব্বু দীর্ঘ ১০ বছরের কষ্টকে অতিক্রম করে আমাকে ফেলে চলে গেল। ২০১১ সালে প্যারালাইজড হয়ে সেই যে বিছানায় গেল আর ওঠেনি। এই ১০ বছর শুধু তাকিয়ে থাকত। আমার অর্জনগুলো অনুভব করত কি না, জানি না। তবে আমার এই বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত আসার প্রেরণা আমার আব্বু। সব সময় চাইত উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত করতে। আব্বু খুব ভালো রবীন্দ্রসংগীত গাইত। পঞ্চম আর অষ্টম শ্রেণিতে বৃত্তি পাওয়ার পর উপহার দিয়েছিল হারমোনিয়াম আর ল্যাপটপ। ২০০৯ সালে আমাদের গ্রামের মানুষেরা ল্যাপটপ সম্পর্কে খুব একটা জানতও না। আম্মুর কাছে শুনি, আমার জন্মের পর আব্বু নাকি আর সন্তান নিতে চায়নি। আমার আব্বু বলত, মেয়ে হলো মায়ারাক্ষসী।
আব্বু অসুস্থ হওয়ার পর হারমোনিয়াম আমি এক দিনের জন্য ছুঁয়েও দেখিনি। কেউ জানেই না আমি গান গাইতে পারি। বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ার কারণে মা-বাবাকে ছেড়ে থাকতে হতো। যেদিন চলে আসতাম আব্বু ছোট বাচ্চার মতো কাঁদত। যেদিন আব্বুর লাশটা নিয়ে যাচ্ছিল, শুধু এই ভেবে কলিজাটা ফেটে যাচ্ছিল যে আব্বুকে আর কখনো দেখব না। এখনো মনে হয়, আর একবার যদি আব্বুকে দেখতে পেতাম। যার আব্বু নেই সেই বুঝবে এই অনুভূতি। ভালো থেকো আব্বু।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক, গণিত বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
মনের উপকূলে মেঘ জমে সিঁদুরে আকাশ অন্ধকার করে দিচ্ছে। তোমার বিরহ থেকে নিম্নচাপের সৃষ্টি হবে যেকোনো সময়। প্রবল বেগে তা আছড়ে পড়বে দেহের সবখানে। ঈশান কোণের মেঘ এখন আরও ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। তুমি কি রুখে দাঁড়াবে না হে নারী? আমি একা এই ঝড় সামলে বেঁচে থেকে করব কী! তুমি যদি আশ্রয়কেন্দ্রে গিয়ে নিজের সুরক্ষা নিশ্চিত করবে, তাহলে কেন শিখিয়েছিলে ঝড়ের মুখোমুখি হতে? কেন বলেছিলে, হাত ছাড়বে না ইয়াস বা নার্গিস (ঘূর্ণিঝড়ের নাম) যেটাই আসুক। তবে আমায় ঝড়ের মুখে রেখে যখন পালিয়েই গেলে, আমি লড়ে যাব। জীবন থাকতে ভালোবাসার একটা কণাও ছাড়ব না।
শিহাব, বাগেরহাট
অধুনা, প্রথম আলো, প্রগতি ইনস্যুরেন্স ভবন, ২০–২১ কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫।
ই-মেইল: adhuna@prothomalo.com, ফেসবুক: facebook.com/adhuna.PA খামের ওপর ও ই-মেইলের subject–এ লিখুন ‘মনের বাক্স’