
জগতের প্রায় সব সম্পর্কেই দুর্বলতা থাকে। দুটি মানুষ একে অপরের সঙ্গে ২৪ ঘণ্টাই ভালো ব্যবহার করবেন এবং সেটা একই ছাদের নিচে থেকে, বিষয়টি অবাস্তব। কঠিন সময় ও ঝড়ঝাপটা আসবেই। মানসিক ও শারীরিকভাবে তখন যদি উতরে যেতে পারেন, তাহলে বুঝবেন দম্পতি হিসেবে আপনাদের গাঁথুনি মজবুত। এখানে চারটি সহজ প্রশ্ন আছে, যার উত্তর যদি ‘হ্যাঁ’ হয়, তাহলে ধরে নিতে পারেন আপনাদের সম্পর্ক মজবুত। ভেঙে যাওয়ার চিন্তা নেই।
প্রতিটি সুস্থ সম্পর্ক বন্ধুত্বের ভিত্তির ওপর ভর করেই গড়ে ওঠে। একটু চিন্তা করে দেখুন, আপনাদের বর্তমান সম্পর্কে বন্ধুত্ব আছে কি না। এখনো সঙ্গীর সঙ্গে সময় কাটাতে, গল্প করতে ও একসঙ্গে হাসতে পছন্দ করেন কি না। পাশাপাশি কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর সমর্থন পেতে চান কি না। উত্তর ‘হ্যাঁ’ হলে পাকাপোক্ত সম্পর্কের দিকে এক ধাপ এগিয়ে গেলেন। তবে অনেক দম্পতি আছেন, যাঁরা অভ্যাসের কারণে ও ঝামেলা এড়াতে একসঙ্গে থাকেন। নতুন করে সম্পর্ক শুরু করতে ভয় পান কিংবা নতুন সম্পর্কে অনাগ্রহী। তাঁরা মনে করেন, বর্তমান সম্পর্কের পেছনে যথেষ্ট সময় ও সম্পদ ব্যয় করা হয়েছে। আর এসবের ফলে ওই দম্পতিরা অসুখীই থেকে যান।
আপনার জীবনসঙ্গীর উচিত আপনার মধ্য থেকে সেরাটা বের করে আনা। দাম্পত্যসঙ্গীর সঙ্গে থাকার ফলে কি আপনি অনুপ্রাণিত হন? আপনার প্রতি তাঁর ভালোবাসা কি অনুভব করেন? নাকি দমবন্ধ, নিজেকে ছোট ও ক্লান্ত বোধ করেন সব সময়? সঙ্গীর জীবনে লক্ষ্য পূরণে উৎসাহ দেওয়া, সাফল্য উদ্যাপন করা ও সঙ্গীর কঠিন সময়ে অবিচল থাকার অনুপ্রেরণা দেওয়া দাম্পত্যে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অস্বাস্থ্যকর সম্পর্কে ঠিক এর বিপরীতটাই ঘটে। সঙ্গীর সঙ্গে থাকলে যদি নিজেকে ছোট, সমালোচিত বা নিজের সম্পর্কে অনিশ্চিত বোধ করেন, তাহলে সেই সম্পর্ক নিয়ে চিন্তা করার সময় চলে এসেছে। সঙ্গীর সঙ্গে থাকাকালে আপনি কী অনুভব করছেন, সেটাই বুঝিয়ে দেয় অনেক কিছু।
চারিত্রিকভাবে কেউই আদর্শ নন। খুঁত থাকবেই। আমাদের শিখতে হবে যে সেই অপূর্ণতাগুলো সঙ্গীর ব্যক্তিত্বকে কিংবা সম্পর্ককে সংজ্ঞায়িত করে না। সুস্থ সম্পর্কের দম্পতিরা কল্পনার ওপর নির্ভর করেন না; বরং সঙ্গী যেমন, সেভাবেই তাঁকে গ্রহণ করেন। ভালোবাসাই এখানে মুখ্য থাকে। কিন্তু তার মানে এই নয় যে টক্সিক আচরণ সহ্য করে নিতে হবে; বরং ভুলে যাওয়ার অভ্যাস, ঘুমানোর সময় নাক ডাকা, একই রসিকতা বারবার করার মতো ছোটখাটো বৈশিষ্ট্যগুলোকে বড় করে না তুললেই হয়। এসব সহ্য করে নেওয়া মানে কঠিন সময়গুলোয় আপনারা একসঙ্গে থাকতে পারবেন।
মজবুত সম্পর্কের একটি দিক হলো, ভালো ও মন্দ দুটি বিষয়ই সঙ্গীকে জানানো। আপনি যখন কোনো ভালো খবর পান, তখন কি প্রথমে সঙ্গীকেই জানান? যেকোনো ধরনের সাফল্য কি আপনি সঙ্গীর সঙ্গে ভাগ করে নিতে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করেন? উত্তর যদি ‘হ্যাঁ’ হয়, তাহলে পাস করে গেলেন। গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব দম্পতি সক্রিয়ভাবে একে অপরের সঙ্গে সুসংবাদ ভাগ করে নেন, উদ্যাপন করেন, তাঁদের সম্পর্ক শক্তিশালী ও সুখী।
সূত্র: সিএনবিসি