পোশাক ভাড়া নেওয়ার দোকানের নাম ‘দ্য থ্রেড স্টোরি’
পোশাক ভাড়া নেওয়ার দোকানের নাম ‘দ্য থ্রেড স্টোরি’

১২ লাখ টাকার লেহেঙ্গাও ভাড়া নেওয়া যায় এই দোকান থেকে

পোশাক ভাড়া নিয়ে পরা অনেকটাই পরিবেশবান্ধব। এ ছাড়া ডিজাইনার পোশাক কিনে পরার সামর্থ্যও থাকে না সব সময়। এ কারণেই কম দামে পোশাক ভাড়া নিতে ইচ্ছুক অনেকে।

দোকানজুড়ে সাজানো জমকালো সব পোশাক, গয়না ও ব্যাগ। পোশাকগুলো বিভিন্ন ব্র্যান্ড ও ডিজাইনারের। তরুণীরা উল্টেপাল্টে দেখছেন পোশাকগুলো। তবে এ দোকানে কেউ পোশাক কিনতে আসেন না, আসেন পোশাক ভাড়া নিতে। পোশাক ভাড়া নেওয়ার দোকানের নাম ‘দ্য থ্রেড স্টোরি’। দোকানটি অবস্থিত ধানমন্ডির ৩ নম্বর সড়কের ২৩ নম্বর বাড়িতে।

পোশাকগুলো বিভিন্ন ব্র্যান্ড ও ডিজাইনারের

আমাদের অনেকের আলমারিতেই বছরের পর বছর অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে থাকে অনেক পোশাক। উৎসব উপলক্ষে কেনা অধিকাংশ জাঁকজমক পোশাকের পরিণতি এমনটাই হয়ে থাকে। অনেকে আবার এক পোশাক পরে দুবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছবি আপলোড দিতে চান না। তাই পোশাক না কিনে তা ভাড়া নেওয়ার দিকে ঝুঁকছেন অনেক তরুণী। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পোশাক ভাড়া নেওয়ার সংস্কৃতি অনেক আগে থেকে থাকলেও বাংলাদেশে এটা এখনো কিছুটা নতুনই।

দ্য থ্রেড স্টোরির স্বত্বাধিকারী সুমনা শারমিন বলেন, বিশ্বজুড়ে ফ্যাশনপ্রেমীরা এখন টেকসই বিষয়টির দিকে ঝুঁকছেন। তাই এক পোশাক একবার পরে রেখে দেওয়ার পরিবর্তে ভাড়া নিয়ে পরা অনেকটাই পরিবেশবান্ধব। এ ছাড়া সবার সব সময় বিভিন্ন ডিজাইনের পোশাক কিনে পরার সামর্থ্যও থাকে না। এ কারণেই কম দামে এসব পোশাক ভাড়া নিতে ইচ্ছুক অনেকে।

আছে নানা নকশার শাড়িও

শুধু বিয়ে কিংবা দাওয়াতই নয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেজেন্টেশন কিংবা কোথাও ঘুরতে যাওয়ার জন্যও শাড়ি ভাড়া নেন অনেকে। ভারতীয় ডিজাইনার সব্যসাচী মুখোপাধ্যায় থেকে শুরু করে পাকিস্তানি ডিজাইনার সানা সাফিনাজ, সানিয়া মাস্কাতিয়া, আগা নূরের পোশাক পাবেন এখানে। আর দেশের আনজারা, প্রেমস কালেকশন, আড়ং, খুঁতসহ বিভিন্ন ব্র্যান্ডের পোশাকও আছে এখানে। সব্যসাচীর লেহেঙ্গার দাম যেমন ১২ লাখ টাকার বেশি, এখানে তা–ও ভাড়া নেওয়া যাবে চাইলে।

ভারতীয় ডিজাইনার সব্যসাচী মুখোপাধ্যায়ের ১২ লাখ টাকা দামি এই লেহেঙ্গাও ভাড়া নেওয়া যাবে

এ ছাড়া অন্যান্য লেহেঙ্গা, শাড়ি, থ্রি-পিস ও গাউন রয়েছে দ্য থ্রেড স্টোরিতে। আছে গয়না ও ব্যাগও। বিয়ের পোশাক ভাড়া পাওয়া যাবে ৫ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকায়। দাওয়াত কিংবা অনুষ্ঠানে পরার পোশাক ভাড়া নিতে পারবেন ৫০০ থেকে ৩ হাজার ৫০০ টাকায়। ২০০ থেকে ৭ হাজার ৫০০ টাকায় ভাড়া নেওয়া যাবে শাড়ি। ১৫০ থেকে ৩ হাজার ৫০০ টাকায় ভাড়া নেওয়া যায় গয়না। ব্যাগের জন্য লাগবে ২০০ থেকে ৫০০ টাকা।

কেউ চাইলে এক মাস আগেই পোশাক পছন্দ করে বুকিং দিতে পারেন। তবে পোশাক ভাড়া নিতে হলে অন্তত পাঁচ দিন আগে জানাতে হবে। সাধারণত পোশাকের ভাড়া হয়ে থাকে পোশাকটির আসল দামের ১৫ শতাংশ। এক থেকে তিন দিনের জন্য পোশাক ভাড়া দেওয়া হয়ে থাকে দ্য থ্রেড স্টোরিতে। অনেক সময় ক্রেতার দূরত্ব বিবেচনা করে সর্বোচ্চ পাঁচ থেকে সাত দিনের জন্য পোশাক ভাড়া দেওয়া হয়। সে ক্ষেত্রে পোশাকের ভাড়া কিছুটা বাড়তে পারে। কেউ পোশাক ভাড়া নিয়ে তা ফেরত দেওয়ার পর পোশাকটি ড্রাই ওয়াশ ও ব্যাকটেরিয়াল ওয়াশ করে পরবর্তীজনের জন্য প্রস্তুত করা হয়।

শুধু বিয়ে কিংবা দাওয়াতই নয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেজেন্টেশন কিংবা কোথাও ঘুরতে যাওয়ার জন্যও শাড়ি ভাড়া নেন অনেকে

বনানীতে রয়েছে দ্য থ্রেড স্টোরির আরেকটি শাখা। বনানী শাখায় মূলত রয়েছে পশ্চিমা পোশাকের সংগ্রহ। পোশাকের কোনো জায়গায় ছিঁড়ে গেলে সেলাইয়ের ওপর নির্ভর করে গুনতে হবে ৩০০ থেকে ১ হাজার টাকার অধিক। আর যদি পোশাকের কোথাও দাগ লেগে যায়, তবে অবশ্যই ধোয়ার খরচও দিতে হবে।

খেয়াল করুন: লেখাটিতে ভারতীয় ডিজাইনার সব্যসাচী মুখোপাধ্যায়ের নাম ভুল করে ‘সব্যসাচী চক্রবর্তী’ লেখা হয়েছিল। অনিচ্ছাকৃত ভুলটি সংশোধন করা হলো। বিষয়টি আমাদের নজরে এনেছেন বলে পাঠককে ধন্যবাদ।