নারকেল খোলের ব্যাগটি দেখতে সুন্দর, পরিবেশবান্ধব, দামও সাশ্রয়ী

ব্যাগটি গোলাকার নারকেলের খোল দিয়ে তৈরি করা হয়েছে
ছবি: যাত্রা

আজকাল তরুণ প্রজন্ম পরিবেশ নিয়ে বেশ সচেতন। পরিবেশবান্ধব উপকরণ ও পণ্যকে ঘিরে বেশ আগ্রহ তাদের। সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঘুরছে নারকেলের খোল দিয়ে তৈরি ব্যাগের একটি ছবি।

প্রথমে ব্যাগটি দেখে অবাকই হতে হয়। নারকেলের খোলের তৈরি এই ছোট্ট ব্যাগে জিপারও আছে। দুই পাশে লাগানো হয়েছে পাটের ফিতা।

ছোট্ট ব্যাগটি পাওয়া যাচ্ছে ‘যাত্রা’য়। এ ছাড়া যাত্রার ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রাম পেজেও নেওয়া হচ্ছে অর্ডার। আপসাইক্লিং, অর্থাৎ পুরোনো বা বাতিল জিনিসপত্র নতুন এবং আরও মূল্যবান জিনিসে রূপান্তর করা নিয়ে ভাবতেই এই ব্যাগ তৈরির আইডিয়া এসেছে বলে জানান ‘যাত্রা বাংলাদেশ’–এর ডিজাইন ও উৎপাদনবিষয়ক প্রধান তাসমিয়া ফারহাত তূবা ইরিনা। তিনি বলেন, ‘আগে আমরা নারকেলের খোল থেকে উইন্ডচাইম এবং গাছ রাখার পাত্র তৈরি করেছি। হঠাৎ মনে হলো, নারকেলের খোল দিয়ে ব্যাগ করা গেলে হলে কত মজার হতো!’

নারকেলের খোল সাধারণত ফেলে দেওয়া হয়। কিন্তু ফেলে দেওয়া এই জিনিসকে ‘ফ্যাশন স্টেটমেন্ট’ হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার চিন্তা থেকেই এই ব্যাগের শুরু।

ব্যাগটি গোলাকার নারকেলের খোল দিয়ে তৈরি। ব্যাগ তৈরির জন্য প্রথমে কিছুটা যাচাই–বাছাই করে নারকেলের খোলগুলো নির্বাচন করা হয়। এই ব্যাগে খোলের দুটি অংশকে সংযুক্ত করে ভেতরে ছোটখাটো জিনিস রাখার মতো একটি জায়গা তৈরি করা হয়েছে। নারকেলের খোল যেমন মজবুত, তেমনই দীর্ঘস্থায়ী আর বেশ হালকা। তাই এই ব্যাগ কাঁধে ঝুলিয়ে চটজলদি বেরিয়ে পড়া যায়। ব্যাগের জিপারটি নারকেলের খোলের মুখে মাপমতো ছিদ্র করে হাতে সেলাই করে জুড়ে দেওয়া হয়েছে। ব্যাগের দুই পাশে ফিতা হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে বেণি করা পাটের।

ব্যাগের ওপর করা হয়েছে অ্যাক্রিলিক রঙের আলপনা। অ্যাক্রিলিক রং ব্যবহারের কারণ জানতে চাইলে তাসমিয়া ফারহাত তূবা ইরিনা বলেন, ‘অ্যাক্রিলিক রং বহুদিন নারকেলের খোলের ওপর টিকে থাকে এবং সময়ের সঙ্গে হালকা হয়ে যায় না।’ তিনি জানান পরিবেশবান্ধব ফ্যাশনের প্রতি আগ্রহী অনেকেই এই ব্যাগ পছন্দ করেছেন।

‎তাসমিয়া ফারহাত তূবা ইরিনার দেওয়া নকশা দেখে নিপুণ হাতে ব্যাগগুলো তৈরি করেছেন যাত্রা বাংলাদেশের শিল্পী শুভ দেবনাথ। তিনি জানান, একেকটি ব্যাগ বানাতে তাঁর লেগেছে পুরো এক দিন। ব্যাগের নকশা এবং তৈরির সময়ের ওপর নির্ভর করে ব্যাগের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। সাধারণত ১ হাজার ৪০০ থেকে ১ হাজার ৭০০ টাকার মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে।