‘বাড়িতেই বৈশাখবরণ’ শিরোনামের প্রতিবেদনটি নকশায় প্রকাশিত হয় ২০২০ সালের ১৪ এপ্রিল। বাড়িতে কীভাবে সাজবেন, তা–ই ছিল বিষয়। তবে পরামর্শগুলো আজকের দিনের জন্যও একদম মানানসই। পাঠকদের জন্য লেখাটি প্রকাশিত হলো আরেকবার।
বাড়িতেই সেজে নেওয়া যায় বৈশাখের জন্য। ইন্টারনেট কিংবা পত্রিকা–ম্যাগাজিনের পাতা থেকে পছন্দসই একটা সাজ বেছে নিতে পারেন। নইলে সাজুন ইচ্ছেমতো, নিজের মতো করে। পরিমিত মেকআপের ব্যবহারে সাদামাটা স্নিগ্ধ সাজই ভালো। সকাল থেকে রাত অব্দি।
প্রথমেই প্রয়োজন ত্বককে প্রস্তুত করে নেওয়া। ক্লিনজিং, টোনিং আর ময়েশ্চারাইজিং তো অপরিহার্য, দরকার হলে স্ক্রাবিংও সেরে নিতে পারেন। তারপর বাসায় তৈরি কোনো ফেস প্যাক দিয়ে একটু বাড়তি পরিচর্যাও করে নেওয়া যেতে পারে। মেকআপের শুরুতেই বেজ করে নেওয়ার পালা। তবে তার আগে হাতের কাছে যদি জেড রোলার থাকে, তা মুখে বুলিয়ে নেওয়া গেলে খুব ভালো ফল মিলবে। ব্যবহারের মিনিট দশেক আগে রোলারটা ফ্রিজে রেখে দিন। তারপর বুলিয়ে নিন আলতো করে। এতে ত্বকের সতেজ ভাব ফিরে আসবে, কেটে যাবে চোখের ক্লান্তি। ত্বকের কোষগুলোও উদ্দীপ্ত হয়ে উঠবে। মেকআপটাও দারুণ বসে যাবে ত্বকে। নইলে শুধু বরফই সই। হাতের কাছে প্রাইমার থাকলে মেখে নিন ত্বকে।
তারপর কনসিলার ব্যবহারের পালা। সাধারণত চোখের নিচের দাগ ঢাকতেই এর ব্যবহার সবচেয়ে বেশি। তবে ত্বকের নির্দিষ্ট খুঁত আড়াল করতেও অসাধারণ এটি। সেই সঙ্গে মুখের টি–জোন ফুটিয়ে তুলতেও (হাইলাইট করা) এটি ব্যবহার করা হয়। তবে সাবধান! পুরো মুখে আবার মেখে ফেলবেন না যেন। ভালোভাবে মিশিয়ে (ব্লেন্ড করে) নিতে হবে, তারপর ফাউন্ডেশন মেখে নিতে হবে ত্বকে। খেয়াল রাখতে হবে প্রসাধনীর বাড়তি ব্যবহারের বদলে ভালো পণ্যের সীমিত প্রয়োগে বেজ তৈরি করা গেলে ত্বক প্রাকৃতিকভাবেই সুন্দর দেখাবে। দেখাবে দাগছোপহীন। কোমল আর ভেতর থেকে উজ্জ্বল। তারপর পুরো বেজটা সেট করে নিতে হবে পাউডার দিয়ে। আলট্রা ম্যাট মেকআপ লুক চাইলে এই বেজই যথেষ্ট। কিন্তু ত্বকে যদি চান হালের শিশিরসিক্ত উজ্জ্বলতা, সে ক্ষেত্রে পরবর্তী সময়ে হাইলাইটারের ব্যবহার চাই-ই চাই।
তারপর সাজাতে হবে চোখ। প্রথমেই ভ্রু সাজিয়ে নিন। পমেড, পেনসিল বা জেল—ভ্রু সাজানোর পছন্দসই পণ্যে। ভ্রুজোড়া যেন স্ট্রাকচারড দেখায়। শক্তিশালী ভাব তৈরি করে সাজে। সবশেষে ক্লিয়ার ব্রাও জেল দিয়ে সেট করে নিন। পরিপাটি, পলিশড লুকের জন্য।
আইশ্যাডোর বেলায় অনেক বিকল্প রয়েছে। এগুলোর মধ্যে যাঁদের খুব বেশি নাটকীয়তা পছন্দ, তাঁরা বেছে নিতে পারেন জলরং বা ওয়াটার কালার কৌশল। চোখের পাতায় একটা রঙের বদলে অনেক রঙের ব্যবহার এর বিশেষত্ব। একদম ভেতরের কোণ হয়ে, পাতার মাঝ বরাবর ছুঁয়ে বাকি অংশে চলে নানান রঙের খেলা। চাই জবরদস্ত ব্লেডিং, তবেই চোখের পাতায় জাদু ছড়ায় এ লুক। যদি আরও বেশি নিরীক্ষাপ্রাণিত সাজে স্বচ্ছন্দ হয়ে থাকেন, সে ক্ষেত্রে মিসম্যাচড আইশ্যাডোও পরে নিতে পারেন চোখের পাতায়। রং চক্র বা কালার হুইলের বিপরীত রংগুলো কিন্তু দারুণ বিকল্প। যেমন এক চোখে নীল দিলে অন্য চোখ সাজান কমলায়। সাজে আরেকটু কোমলতা চাইলে বেবি ব্লু আর লাইলারের জোড়ও কিন্তু মন্দ নয়। আর যদি পুরোপুরি বৈশাখ অনুপ্রাণিত লুক চান, সে ক্ষেত্রে স্মোকি আইও চলতে পারে। তবে চিরায়ত কালোতে নয়, চোখে ধোঁয়াশা তৈরি হোক লাল আইশ্যাডোর ব্যবহারে। তবে যাঁদের মিনিমাল আইমেকআপ পছন্দ, তাঁরাও তৈরি করতে পারেন চমক। পছন্দের নিয়ন কোনো শেড নিয়ে চোখের পুরো পাতার বদলে শুধু ভেতরের কোণ রাঙিয়ে নিন। সাজে সজীবতা সৃষ্টি হবে, দেখাবে আকর্ষক।
আইলাইনারে লাইন টানতে পারেন সনাতন উপায়ে। কিন্তু রঙের বদল এ বছরের ধারা। কালোর বদলে বেছে নিন ক্রিম, সাদা, হালকা পিঙ্ক থেকে মিন্টের মতো প্যাস্টেল রংগুলো। চিকন গ্রাফিক লাইন থেকে শুধু আউটার কর্নারে লাইন টেনে সাজাতে পারেন চোখজোড়া। আরও বৈচিত্র্যপূর্ণ কিছু করতে চাইলে ল্যাশ লাইন ঘেঁষে নয়, বরং আইলাইনারের রেখা টেনে নিন চোখের পাতার ভাঁজ বরাবর। সবশেষে মাসকারাতেও থাকতে পারে চমক। উজ্জ্বল গোলাপি, গাঢ় নীল বা সবুজে রাঙিয়ে নিন চোখের পাপড়িগুলো।
ঠোঁট সাজাতে চিরায়ত লাল তো সব সময় হিট। চলতে পারে ব্লু আন্ডারটোনের হট পিঙ্কও। সব ধরনের ত্বকে দারুণ মানায় রং দুটি। তবে আরও কোমল দেখাতে চাইলে বেয়ারলি দেয়ার লিপ স্টেইন ধারা সবচেয়ে জুতসই পছন্দ। হতে পারে গ্লসের ব্যবহারও। ঠোঁট পুষ্ট আর উজ্জ্বল দেখাতে তারপর সেরে নিন কনট্যুরিং, ব্রোঞ্জার দিয়ে। এতে করে বাড়াবাড়ি মনে হবে না সাজ, বরং হালকা সান কিডস আভা তৈরি হবে। গালে মেখে নিন উজ্জ্বল গোলাপি ব্লাশন। বছরকার ধারা বলে কথা। সঙ্গে কপালের দুপাশ, চিবুক আর নাকের ডগাও যেন বাদ না পড়ে। চেহারার উঁচু অংশগুলো হাইলাইট করে নিন পাউডার হাইলাইটার দিয়ে। সাজ শেষ করুন সেটিং স্প্রে দিয়ে।
পোশাক আর সাজের সঙ্গে মানিয়ে চুলের সাজটাও সেরে নিন এমন কিছুতে, যা করে নেওয়া সহজ। আপনার জন্য স্বস্তিদায়কও বটে।
ব্যস, তৈরি আপনি বৈশাখবরণের জন্য।
তবে মেকআপ করার আগে হাত সাবান দিয়ে ধুয়ে নিতে হবে অবশ্যই। স্যানিটাইজও করে নিতে পারেন। সাজের সরঞ্জাম যেমন ব্রাশ, স্পঞ্জ—এগুলো যেন জীবাণুমুক্ত থাকে শতভাগ।
আরও পড়ুন
-
পাঠ্যবই থেকে আলোচিত ‘শরীফার গল্প’ বাদ দিতে সুপারিশ বিশেষজ্ঞ কমিটির
-
ফোর্বসের এশিয়ার তরুণ উদ্যোক্তাদের তালিকায় ৯ বাংলাদেশি
-
ছাগলনাইয়ায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারম্যান ঘোষণা ছিল অবৈধ: হাইকোর্ট
-
কেজরিওয়ালকে নিয়ে বিজেপি দিশাহারা, ইডির আরজিও খারিজ
-
যুদ্ধ শেষে গাজায় শান্তিরক্ষী মোতায়েনের পরিকল্পনা যুক্তরাষ্ট্রের