
৬ জুলাই বিশ্বের মর্যাদাপূর্ণ ‘চ্যালেঞ্জ রথ’ ট্রায়াথলনে অংশ নিয়ে সফল হয়েছেন বাংলাদেশের মোহাম্মদ সামছুজ্জামান আরাফাত ও সুমিত পাল। আয়রনম্যানের মতো এই প্রতিযোগিতায়ও নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সাঁতার কেটে, সাইকেল চালিয়ে ও দৌড়ে মোট ২২৬ কিলোমিটার দূরত্ব অতিক্রম করেছেন দুজন। তাঁদের মধ্যে অভিজ্ঞতা শোনালেন আরাফাত। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন সজীব মিয়া
কোথায় আছেন এখন?
এই মুহূর্তে জার্মানির মিউনিখ শহরে আছি। এখানে বাংলাদেশি আরেক আয়রনম্যান সুমিত পাল থাকেন। চ্যালেঞ্জ রথে অংশ নিতে এসে তাঁর বাসায় উঠেছি।
‘চ্যালেঞ্জ রথ’ অভিযানে আপনার অংশগ্রহণ কেমন হলো?
নিঃসন্দেহে এটা আমার অংশগ্রহণ করা সেরা একটি রেস। ১০ ঘণ্টা ২৫ মিনিট ৫৯ সেকেন্ডে সম্পন্ন করেছি। এর মাধ্যমে রেসে আমার সেরা টাইমিং পেয়েছি, বাংলাদেশের জন্য আয়রনম্যান ডিসট্যান্স হিসেবেও সেরা টাইমিং, তা ছাড়া আয়রনম্যানসহ এত রেসে অংশ নিয়েছি, তবে এই চ্যালেঞ্জ রথের মতো এত জনপ্রিয় আয়োজন দেখিনি। এখানে সাড়ে ৭ হাজার স্বেচ্ছাসেবক আমাদের সহযোগিতা করেছেন। রাস্তার দুই পাশে মানুষ আর মানুষ। তাঁরা অ্যাথলেটদের উৎসাহ দিয়েছেন। স্থানীয় অনেকে বাসার সামনে মঞ্চ বানিয়ে বাদ্যবাজনা করেছেন। বিশ্বের ১০৮টি দেশ থেকে সাড়ে ৩ হাজার অংশগ্রহণকারী অ্যাথলেটের অনেকের সঙ্গে দেখা হলো। আমি খুব আনন্দিত।
এই প্রতিযোগিতায় আপনি তো এবারই প্রথম অংশ নিলেন?
চ্যালেঞ্জ রথে এবার সুমিত পাল আর আমি—দুজনেই প্রথমবার অংশ নিয়েছি। আমরা ২০১৯ সাল থেকে অংশগ্রহণের চেষ্টা করছিলাম, কিন্তু এত দিন স্লট পাইনি। এবার আমরা অংশ নেওয়ার সুযোগ পেয়েছি।
অংশগ্রহণের সুযোগ পাওয়া এত কঠিন?
সারা বিশ্বের হাজার হাজার আবেদনকারীর মধ্য থেকে মাত্র সাড়ে ৩ হাজার জনকে অংশগ্রহণের সুযোগ দেওয়া হয়। সেটাও করা হয় লটারির মাধ্যমে। এ বছরের জন্য আমরা দুজন একসঙ্গে পেয়েছি।
‘চ্যালেঞ্জ রথ’ আর ‘আয়রনম্যান’—এই দুটি ট্রায়াথলনের পার্থক্য কী?
চ্যালেঞ্জ রথ ও আয়রনম্যান একই দূরত্বের। অর্থাৎ আয়রনম্যানে যেমন ৩ দশমিক ৮ কিলোমিটার সাঁতার, ১৮০ কিলোমিটার সাইক্লিং এবং ৪২ দশমিক ২ কিলোমিটার দৌড় থাকে, এখানেও তেমন। এটি বিশ্বের ঐতিহাসিক ফুল ডিসট্যান্স ট্রায়াথলন রেসগুলোর একটি। ১৯৮৪ সালে জার্মানির রথ শহরে যখন শুরু হয়, তখন ‘আয়রনম্যান ইউরোপ’ নামে পরিচিত ছিল। ২০০১ সালে ‘চ্যালেঞ্জ’ ব্র্যান্ডের অধীনে আসার পর নামকরণ হয় ‘চ্যালেঞ্জ রথ’।
সুমিত পাল রেস সম্পন্ন করেছেন কত ঘণ্টায়?
১২ ঘণ্টা ২৬ মিনিটে। তিনি এর আগে ১২ বার আয়রনম্যান ডিসট্যান্স সম্পন্ন করেছেন।
দেশে ফিরবেন কবে?
১২ জুলাই ফিরব।
চ্যালেঞ্জ রথে সফল হলেন, পরের লক্ষ্য কী?
এ বছর আমার আরও দুটি রেস আছে। একটি আগামী ১৪ সেপ্টেম্বর ফ্রান্সে অনুষ্ঠেয় আয়রনম্যান বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ, অন্যটি ১ নভেম্বর মালয়েশিয়ায় অনুষ্ঠেয় আয়রনম্যান মালয়েশিয়া।