
কক্সবাজার, কুয়াকাটা, শ্রীমঙ্গল, বান্দরবান, রাঙামাটি—দেশে এগুলোই মূলত পর্যটকদের প্রধান গন্তব্য। জনপ্রিয় এ জায়গাগুলো বছরজুড়েই পর্যটকমুখর থাকে। ২০২৩ সালেও ধারাটা অব্যাহত থাকবে। তবে এর বাইরে নতুন কিছু জায়গা এবং বিষয়ে মানুষের আগ্রহ লক্ষ করা যাচ্ছে, নতুন বছরে যা আরও বাড়বে।
বিস্তৃত সবুজ মাঠে আলপথ ধরে লাঙল-জোয়াল কাঁধে হেঁটে যাচ্ছেন একজন কৃষক। তাঁকে ছাপিয়ে সামনে দেখা যাচ্ছে ভোরের আলোয় সোনালি কাঞ্চনজঙ্ঘার চূড়া। ছবিটি পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া থেকে তোলা। হিমালয় পর্বতমালার কোনো কোনো চূড়া উত্তরবঙ্গের কয়েকটি জেলা থেকে দেখা যায়, এটি পুরোনো কথা। কিন্তু কয়েক বছর আগে এই ছবিসহ কাঞ্চনজঙ্ঘার বেশ কিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে অনেকেরই গন্তব্য হয়ে ওঠে তেঁতুলিয়া।
প্রতিবছর সেপ্টেম্বরের শেষ থেকেই এখন তেঁতুলিয়ায় ভিড় করছেন পর্যটকেরা। ছুটির দিন ঘিরে যে ভিড় আরও বাড়ে। এ বছর পর্যটকসংখ্যা এতটাই বেড়ে গিয়েছিল যে আবাসন–সংকটে পড়ে অনেককে তাঁবুবাস করতেও দেখা গেছে। মানুষের আগ্রহ ব্যবসায়ীদেরও উৎসাহিত করেছে। এ বছরই নতুন কয়েকটি আবাসিক হোটেল চালু হয়েছে তেঁতুলিয়ায়। আগামী মৌসুম আসার আগে চালু হবে আরও কয়েকটি। স্থানীয় ব্যক্তিরা হোম স্টের ব্যবস্থাও করেছেন। কাঞ্চনজঙ্ঘা দর্শন ছাড়াও সমতলের পঞ্চগড়ের চা-বাগানও টানছে পর্যটকদের। তাই বছরজুড়েই পর্যটকদের আনাগোনা বাড়ছে। সব মিলিয়ে পর্যটনে সুদিনের বার্তা দিচ্ছে দেশের সর্ব–উত্তরের জেলাটি।
শুধু পঞ্চগড়ই নয়, নতুন বছরে উত্তরবঙ্গের চেনা গন্তব্যেও বাড়বে মানুষের আনাগোনা। রাজশাহীর পুঠিয়া রাজবাড়ি ও সারদা পুলিশ প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, নাটোরের দিঘাপতিয়া রাজবাড়ি, রংপুরের তাজহাট জমিদারবাড়ি, পায়রাবন্দে রোকেয়ার বাড়ি, দিনাজপুরের কান্তজিউ মন্দির, বিখ্যাত দিঘি রামসাগর, নীলফামারীর নীলসাগর, সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানা, বগুড়ার মহাস্থানগড়, নওগাঁর পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার ও আলতাদিঘি, সিরাজগঞ্জে রবীন্দ্র কুঠিবাড়ির মতো জনপ্রিয় গন্তব্যে যেমন মানুষ যাবেন, তেমনি নাটোর-পাবনার চলনবিল, রাজশাহীর পদ্মার চর, চাঁপাইনবাবগঞ্জের আলপনা গ্রাম, দিনাজপুরের সিংড়া ফরেস্টসহ নতুন নতুন জায়গায় বাড়বে পর্যটকদের আগমন।
পূর্বাভাস বুঝে এসব এলাকায় আবাসনব্যবস্থা তৈরি হচ্ছে। বগুড়ায় চালু হওয়া পাঁচ তারকা মানের আধুনিক হোটেল মোমো ইন, গাইবান্ধার এসকে ইনসহ মানসম্পন্ন হোটেল ও রিসোর্টকে কেন্দ্র করেও উত্তরে পর্যটকের সংখ্যা বাড়ছে। ২০২৩ সালে সেই ধারায় নতুন মাত্রা পেতে যাচ্ছে।