পুরোনো কোনো বন্ধুর সঙ্গে দেখা হলে প্রথম প্রশ্নই আসে, কী চলছে জীবনে? পুরোনো বন্ধুত্বের টানে হোক কিংবা আলোচনায় খাতিরে, ব্যক্তিগত জীবনের বহু তথ্য চলে আসে আলোচনায়। খোলা মনে কথা বলতে গিয়ে অনর্গল জীবনের সব খুঁটিনাটি তথ্য বিলিয়ে দেন অনেকে। কিন্তু প্রত্যেকের জীবনেই এমন কিছু ঘটনা ঘটে, যা নিজের কাছে রাখাই উত্তম। অতিরিক্ত জানাজানি হলে কিংবা ভুল লোকের কাছে সে তথ্য হয়ে উঠতে পারে আপনার ক্ষতির কারণ।
অনেকেই কাজের শুরুতেই নিজের লক্ষ্য তৈরি করে রাখেন। কাজের সুবিধার্থে অথবা লম্বা পরিকল্পনার অংশ হিসেবে নিজের জন্য বড় পরিকল্পনা করেন অনেকে। কিন্তু সবার সঙ্গে নিজের জীবন নিয়ে পরিকল্পনার কথা ভাগাভাগি করবেন না। এতে লক্ষ্য অর্জনের জন্য নিজের ওপর আলাদা চাপ পড়তে পারে। পাশাপাশি অপর পক্ষও আশা করে বসে থাকে আপনাকে সফল অথবা ব্যর্থ হতে দেখার জন্য। বরং যেকোনো কাজের ক্ষেত্রে চেষ্টা করুন অন্য কারও সঙ্গে ভাগাভাগি করে নেওয়ার আগে যতটা সম্ভব নিজের লক্ষ্যে অবিচল থাকতে।
হাসিকান্না, সুখ–দুঃখ মিলিয়েই গড়ে ওঠে সম্পর্ক। সঙ্গীর সঙ্গে সবকিছু ভালো যাবে, আপনার পছন্দমতো চলবে, এমনও কিন্তু নয়। সম্পর্কে মনোমালিন্য থাকবে, টানাপোড়েন থাকবে। কিন্তু সেই কথা অন্যকে বলে নিজেদের মধ্যকার ভরসা নষ্ট করবেন না। সম্পর্কের খুঁটিনাটি বিষয়াদি আপনাদের একেবারে ব্যক্তিগত। সেসব বিষয়ে বাইরের মানুষের না জানাই শ্রেয়।
নিজের অর্থনৈতিক অবস্থা যতটা গোপন রাখা যায়, তত ভালো। বিশেষ করে আপনার কাছে কত টাকা আছে, বাসাবাড়িতে টাকা আছে কি না, এসব গুরুত্বপূর্ণ তথ্য কারও সঙ্গেই শেয়ার করবেন না। দেখা যায়, বেশির ভাগ ক্ষতিই হয় পরিচিত মানুষদের দ্বারা।
শারীরিক যেকোনো সমস্যার ক্ষেত্রে সবার আগে প্রয়োজন যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া। আর সমস্যার কথা পরিবারের বাইরে শুধু বলুন চিকিৎসকের কাছে। জনে জনে শারীরিক অবস্থার অবনতির কথা বলতে না যাওয়াই ভালো। এতে নানা জনের নানা মত যেমন শুনতে হবে, তেমনই তাদের অতিরিক্ত কথা থেকে তৈরি হবে আলাদা দুশ্চিন্তা। শারীরিক সমস্যা থেকে মানসিক পীড়া তখন হয়ে উঠতে পারে গুরুতর।
কোনো পরিবারই ঝামেলার ঊর্ধ্বে নয়। পরিবারে একসঙ্গে থাকতে গেলে খুঁটিনাটি বিষয় নিয়ে সমস্যা তৈরি হবেই। তাই বলে পরিবারের গোপন খবর বাইরে বলে বেড়ানোর কোনো অর্থ হয় না। খুব কাছের বন্ধুবান্ধব (যাঁদের কাছ থেকে আপনি সুপরামর্শ বা উপদেশ পেতে পারেন), এমন কেউ বাদে কারও সঙ্গে পারিবারিক সমস্যার কথা ভাগাভাগি করতে নেই।
প্রতিটি মানুষেরই কিছু না কিছু দুর্বলতা আছে। পরিচিত মানুষের কাছে কখনোই আগবাড়িয়ে এই দুর্বলতা স্বীকার করতে যাবেন না। নিজের দুর্বলতা ঢেকে নিজে নিজে অবস্থা পরিবর্তনের চেষ্টা করুন। এতে লাভ হবে আপনার নিজের। নিজের দুর্বলতা জানিয়ে দিলে পরবর্তী সময়ে সেই দুর্বলতার সুযোগ নিতে পারে অনেকে।
যেকোনো আলোচিত কিংবা বিতর্কিত বিষয়ে মতামত দেওয়ার আগে সাবধানতা অবলম্বন করুন। বিশেষ করে কোনো বিষয়ে আপনার চিন্তাধারা কিংবা বিশ্বাস কেমন, তার ওপর নির্ভর করে অনেক কিছু। এসব ব্যাপার গোপন রাখতে পারলে অযথা ঝগড়াঝাঁটি কিংবা মনোমালিন্য থেকে অনেকটাই দূরে থাকা সম্ভব।
সূত্র: মিডিয়াম