দেশের অনেক বিশ্ববিদ্যালয়েই ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি পরীক্ষার আবেদন গ্রহণ শুরু হয়েছে। এখনো হাতে আছে বেশ খানিকটা সময়। আগামী এক-দুই মাসের গোছানো প্রস্তুতি আপনাকে পৌঁছে দিতে পারে স্বপ্নের ক্যাম্পাসে। ফুয়াদ পাবলোকে প্রস্তুতির দরকারি কিছু টোটকা দিয়েছেন ২০২৩-২৪ ভর্তি সেশনে কৃতিত্বের স্বাক্ষর রাখা কয়েকজন। এখানে পড়ুন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ছাত্র মো. মাহিনুর রহমানের পরামর্শ।
ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতির প্রথম ধাপ ছিল বিগত বছরের প্রশ্ন বিশ্লেষণ। এতে প্রশ্নের ধরন এবং গুরুত্বপূর্ণ বিষয় চিহ্নিত করা সম্ভব হয়। যেমন, বাংলার ক্ষেত্রে ব্যাকরণ এবং সাহিত্য অংশে কোন বিষয়গুলো বেশি গুরুত্ব পায়, ইংরেজিতে গ্রামার এবং ভোকাবুলারির ওপর কতটা জোর দেওয়া হয়—এসবই স্পষ্ট হয়ে ওঠে। প্রশ্ন বিশ্লেষণ আমাকে পড়ার রূপরেখা তৈরি করতে সাহায্য করেছে। শিখিয়েছে, কীভাবে অপ্রয়োজনীয় বিষয় এড়িয়ে সঠিক বিষয়ে মনোযোগ দিতে হয়।
অনেকেই ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতিতে বাজারের সহায়ক বইয়ের ওপর নির্ভর করে। আমি কিন্তু উচ্চমাধ্যমিকের টেক্সট বুকগুলোর ওপরই ভরসা রেখেছি। বাংলা, ইংরেজি, ইতিহাস, ভূগোল ও আইসিটি বইগুলোতে যা পড়ানো হয়েছে, তার প্রতিটা অধ্যায় বারবার পড়েছি। প্রশ্নের বড় অংশই মূলত এখান থেকে আসে। তাই টেক্সট বুকগুলোকে ভালোভাবে আয়ত্তে আনার পাশাপাশি বিগত বছরের প্রশ্ন সমাধান এবং বিষয়ভিত্তিক পড়া নিশ্চিত করেছি। অনুশীলনের জন্য কেবল সহায়ক বই নিয়েছি।
পড়ার জন্য সময় ভাগ করে নেওয়া অনেকের জন্য কার্যকর। কিন্তু আমার ক্ষেত্রে তা কাজ করেনি। বরং প্রতিদিনের জন্য নির্দিষ্ট টার্গেট নির্ধারণ করতাম। যেমন, আজ বাংলার দুটি অধ্যায় শেষ করব, ইংরেজির গ্রামারের কিছু অংশ অনুশীলন করব বা সাধারণ জ্ঞানের নির্দিষ্ট একটি অংশ পড়ে শেষ করব। এভাবে পড়ার নির্ধারিত অংশ প্রতিদিন সম্পন্ন করতাম। কত সময় ধরে পড়ছি, এটা না ভেবে পড়ার মানের ওপর বেশি জোর দিয়েছি।
আমার কাছে সবচেয়ে কঠিন মনে হতো সাধারণ জ্ঞান। গৎবাঁধা মুখস্থ করার পদ্ধতি তেমন কাজ করত না। তাই গল্পের মতো করে পড়ার চেষ্টা করতাম। যেমন, ইতিহাসের ঘটনাগুলো কল্পনায় সাজিয়ে গল্প হিসেবে পড়তাম। একইভাবে, ভূগোলের বিষয়গুলো মানচিত্রের সঙ্গে মিলিয়ে পড়েছি। বাংলা সাহিত্য অংশে কবি-লেখকদের জীবন এবং রচনাগুলোও গল্পের মতো কল্পনা করে পড়েছি। বারবার রিভিশন দিয়ে মনে রাখার চেষ্টা করতাম।
পরীক্ষার আগে নিজের প্রস্তুতি যাচাই করার জন্য নিয়মিত মডেল টেস্ট দিতাম। এটি পরীক্ষার সময় ব্যবস্থাপনা এবং চাপ সামলাতে সাহায্য করেছে। মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণে পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানো, হাঁটাহাঁটি এবং ছোট ছোট বিরতি নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। পরীক্ষার হলে কোনো প্রশ্ন আটকে গেলে তা নিয়ে সময় নষ্ট না করে পরবর্তী প্রশ্নে চলে যেতাম। নেগেটিভ মার্কিং এড়াতে নিশ্চিত প্রশ্নগুলোর উত্তর আগে দিয়েছি।