কমলগঞ্জ উপজেলার পতনঊষার ইউনিয়নের ঐতিহাসিক মুঘলবিরোধী পাঠান বীর খাজা ওসমানের স্মৃতিবিজড়িত খাসজমি ওসমানগড় দখল হয়ে যাচ্ছে। স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিরা এসব ভূমিতে গড়ে তুলেছেন পাকা দোকানঘর, লাগানো হয়েছে গাছগাছালি। সম্প্রতি সরেজমিন ঘুরে এলাকাবাসী ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কমলগঞ্জ উপজেলার পতনঊষার ইউনিয়নের ওসমানগড় এলাকার সরকারি খাসজমি, খাজা ওসমানের গড় ও গড়সংলগ্ন টিলা দীর্ঘদিন ধরে একশ্রেণীর ভূমিখেকোরা দখল করে নিচ্ছে। সরকারদলীয় আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে ওই প্রভাবশালী মহল যুক্ত থাকায় দখলকারদের বিরুদ্ধে কেউ কথা বলতে পারছে না। টিলাগড় বেসরকারি রেজিস্ট্রার্ড প্রাথমিক বিদ্যালয়সংলগ্ন বিশাল খেলার মাঠ ও মাঠের চতুর্দিকে রয়েছে উঁচু টিলা ও গড়। মাঠের দক্ষিণ পাশের গড়সহ প্রায় ৩০ শতক জমি দীর্ঘ আট-দশ বছর ধরে দখল করে রেখেছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা জমশেদ মিয়া। মাঠের পশ্চিম এলাকাসংলগ্ন খাস টিলার ব্যাপক এলাকা কয়েক বছর ধরে দখলে রেখেছেন সুন্দর আলী, আলতা মিয়া, দুরুদ মিয়া ও মবাশ্বির আলী। সম্প্রতি শমশেরনগর-ব্রাহ্মণবাজার সড়কসংলগ্ন ওসমানগড় মাঠের কাছে প্রায় দুই একর জমি দখল করে নিয়েছেন স্থানীয় ফারুক মিয়া। টিলা খুঁড়ে গত ১৩ জুন থেকে তিনি বেড়া দিয়ে গাছ লাগানোর প্রাথমিক কাজ শুরু করেছেন। দখল করা খাসজমির ওপর তিন বছর আগে একটি পাকা দোকান নির্মাণ করা হয়েছে বলে গ্রামবাসী জানায়। ২০ আগস্ট সরেজমিন ঘুরে দখল করা খাসজমির ছবি সংগ্রহকালে দখলদার ফারুক মিয়া সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরে যোগাযোগ রক্ষা করে তাঁরা এ ভূমিটুকু ভোগদখল করছেন বলে দাবি করেন। তবে তিনি সরকারি কোনো অনুমতিপত্র দেখাতে পারেননি। স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা জমশেদ মিয়া প্রথমে ক্ষিপ্ত হলেও পরে বলেন, তিনি কোনো খাসজমি দখল করেননি। তাঁর সম্পর্কে তথ্য জানতে হলে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের কাছ থেকে জেনে নিতে হবে। পতনঊষার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাজি এখলাছুর রহমান জানান, তিনি মৌখিকভাবে এ অভিযোগ শুনেছেন। লিখিতভাবে অভিযোগ দেওয়ার জন্য তিনি স্থানীয় লোকজনকে জানিয়েছেন। তাহলে তিনি প্রশাসনের সহায়তা নিয়ে খাসজমি দখলমুক্ত করবেন। কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রকাশ কান্তি চৌধুরী বলেন, ‘ভূমি অফিসের লোকজন পাঠিয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’