অলংকরণ: এস এম রাকিবুর রহমান
অলংকরণ: এস এম রাকিবুর রহমান

গুচ্ছকবিতা

বন্ধনী থেকে বর্গক্ষেত্রে মেঘ জমুক

অঞ্জলি

মনভাসি ইচ্ছেরা ডাকছে—
সাড়া দাও!
কল্পিত ব্যঞ্জনে দশটি আঙুল
আরও দশটির প্রহর গুনছে;
ফুলবন্দী ঘ্রাণে ডুববে বলে।

ফুরিয়ে যাচ্ছে সবুজের উদ্দীপনা
এক জীবনে সময়—
বড্ড হাতে গোনা।

আয়ুবৃক্ষ থেকে ঝরছে পাতা—
আড়াল ছেড়ে প্রকাশিত হও।

বন্ধনী থেকে বর্গক্ষেত্রে মেঘ জমুক—
ঠোঁটের দিঘিতে হোক ঠোঁটের চুমুক।

দিনক্ষণ সে যা–ই হোক—
পৌষালি বিকেলজুড়ে
ঘনঘোর বর্ষা নামুক…।

অনিন্দিতা

গুচ্ছ গুচ্ছ করে বেড়ে ওঠা আদরগুলো
অন্নপূর্ণা হয়ে উঠছে প্রতিদিন...
কবে সময় দেবে?

আর অপেক্ষা সম্ভব নয়!

অবিলম্বে নিবিড় সান্নিধ্য চাই!
সঞ্চিত সব আদর হস্তান্তর করে
নিজকে ভারমুক্ত করতে চাই।

অনুরাধা

প্রতিটা নারী একেকটা নদী
তুমিও তার ব্যতিক্রম নও!

তোমার নদীতে জোয়ার–ভাটা হয়
বাতাসে জাগে উথালপাতাল ঢেউ
কেউ কেউ সাঁতরে পার হয় তীর—
কেউ বা ভাসায় নাও।

আমি তোমার কিছুই চাই না!
কেবল সবটুকু ব্যাসার্ধজুড়ে বৃত্ত এঁকে
অনুরাধার মতো—
তোমার বুকে জ্বলজ্বল করতে চাই।

অভিমানী গোলাপ

এই যে গোলাপ—
মুখ ফিরিয়ে আছ অভিমানে
আহ্লাদে ঈষৎ রেগে—
লুকিয়েছ মুখ মেঘে।

জানি, তুমিও পুড়ছ
চিন্তক রাতে অনর্গল-
তুষানলে নীরবে পুড়ে
এঁটেছ হৃদয় অর্গল!

আমাকে সবটুকু নাও
পাহাড়ের মতো কুচি কুচি কাটো
খরস্রোতা নদী বানিয়ে
অভিযুক্ত নৌকা ভাসাও

তবুও অভিমান থামাও

ইলাস্ট্রেশন

শরীরের রন্ধ্রে তুমুল ঝড়
সুবাতাস হয়ে এসো;
হও সিক্ত সকাল
মিষ্টি রোদ্দুর
নম্র শিশির
উদার্ত রাত
দূর করে দাও আমার অস্থিরতা...
তুমি এলে
চুম্বন তুলিতে
গালে
চুলে
ঠোঁটে
বুকে
ঘাড়ে
পেটে
পিঠে
নাভিতে
আঁকব এক কোটি রঙিন ইলাস্ট্রেশন।
পূর্ণিমা তিথিতে
সমুদ্রফেরত
জোয়ারের মতো
শান্ত হব
ঋদ্ধ হব
ক্লান্ত হব।
তারপর অনন্তকাল—
কলাপসিবল গেটের মতো জুড়ে থাকব
তোমার জলভরা নদীর ঊরুসন্ধিতে…