অলংকরণ: মাসুক হেলাল
অলংকরণ: মাসুক হেলাল

কবিতাযুগল

অনন্ত অসীমের নির্জন স্পর্শ

হয়তো

হয়তো প্রতিটা বীজের অঙ্কুরোদগমে চিরকাল বিস্মিত হয় মাটি
হয়তো কোকিলের ডাক বলে যাকে ভাবতেছ, তা আততায়ীর অন্তিম ইশারা
হয়তো এই স্তব্ধতা আগুন জ্বলে উঠবার মুহূর্তপূর্বের আর্তনাদ
হয়তো মুখোমুখি দুইটা আয়নার মাঝখানে পড়ে গিয়ে তুমি
আবিষ্কার করতেছ অনন্ত অসীমের নির্জন স্পর্শ
হয়তো নিজের অস্তিত্বে আজীবন যাকে অনুভব করছ, তার কোনো নাম নাই
হয়তো একদিন নির্মমভাবে চলে যেতে হবে বলে তুমি কখনো জন্মালাই না
হয়তো কোনো সমাধির ওপর বেড়ে ওঠা গাছের সজীব উজ্জ্বলতার সাথে
সমাধিস্থ রূপসীর লাবণ্যের সাদৃশ্য আছে
হয়তো এই শূন্যস্থান দুইটা বস্তুর পরস্পর বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ার হাহাকার
হয়তো বীজের ভেতর একনিষ্ঠভাবে কান পাতলে শুনতে পাওয়া যায়
আদিগন্ত কোকিলের ডাক

লেট নাইট

গভীর কুয়াশামাখা রাতে
অফিস থেকে ফিরে যাচ্ছি বাড়ি
পথে
দেয়ালগুলো ফিসফিস করে কথা বলে ওঠে
আমার গলা শুকিয়ে আসে
দেয়াল বলে, ‘পানি লাগবে, পানি?’
বলি, লাগবে।
টিয়ার গ্যাসে চোখ কুঁচকে থাকা ছেলেটার
হাতে থাকা পাত্রটা কেঁপে ওঠে
আমি রাস্তা থেকে ফুটপাতঘেঁষা দেয়ালে
পানি খেতে যাই
কিন্তু ফুটপাতে বস্তা মুড়ি দিয়ে শুয়ে থাকা লোকটা
আমার জন্য বাধা হয়ে দাঁড়ায়
আমি তাকে চিনি না তাই
সেও আমার সাথে কথা বলে না তো
দেয়াল বলে, ‘আমরা কত দিন হাসি না’, ‘৩৬ জুলাই’,
‘বিকল্প কে’
রাতের কুয়াশা আরও ঘনীভূত হয়
নাটকীয় লাগে
চিৎকার করে দেয়াল
‘রাতের ভোট’, ‘নাটক কম করো পিও’
এত রাতে এত চিৎকার কেন করছে দেয়াল
আমি ভাবি,এতে যদি লোকটার ঘুম ভেঙে যায়
আমি তখন কী করব?
‘আওয়াজ উডা’, ‘কথা ক’
উত্তর দেয় দেয়াল।