চি ঠি পত্র

শিশু ও বৃক্ষ

শিশুরা হলো প্রাণচাঞ্চল্যের প্রতীক। তারা চায় বাধাহীন নির্মল আনন্দ। শিশুরা বোঝে না কোনো পক্ষ কিংবা প্রতিপক্ষ। তারা বেড়ে ওঠে সরলতা আর বিশুদ্ধতার মধ্য দিয়ে। তারা অজানাকে জানতে চায় তাদের মতো করে। তাদের ইচ্ছাগুলো আকাশে উড়ে বেড়ানো পাখির মতো সদা উড্ডীয়মান। ফুলের মতো পবিত্র তাদের মন। আর যখন এই কোমলমতি শিশুদের রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হয়, তখন তা সত্যি চরম অমানবিকতার পরিচয় দেয়। শিশুরা হয় দিকভ্রষ্ট। পথ হারিয়ে চলে অন্ধকারের পথে। কেননা, যে বয়সে পড়ালেখা করে আর খেলাধুলার মাধ্যমে নিজেদের জীবন সুন্দরভাবে গড়ে তোলার কথা আগামী দিনে জাতিকে পথ দেখানোর জন্য; সেই বয়সে তারা অনেকেই জড়িয়ে পড়ে নানা সংঘাতে কিংবা প্রলোভনে। শারীরিক শ্রমমূলক কাজ শিশুদের জন্য নিষিদ্ধ হওয়া সত্ত্বেও অনেক শিশুকে পথেঘাটে অনেক কষ্টকর কাজ করতে দেখা যায়, যা চরম বেদনাদায়ক। আর এসব দূর করতে প্রয়োজন যথাযথভাবে আইনের প্রতিফলন ঘটানো। তা না হলে নষ্ট হবে শিশুদের ভবিষ্যৎ।

আমাদের দেশে আন্দোলনের সময় দেখা যায়, গাছ কেটে পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হয়। মাঝেমধ্যে গাছের গুঁড়ি ফেলে রাখা হয় রাস্তায়। আবার মাঝেমধ্যে ‘জ্বালাও-পোড়াও’ নীতির স্টিম রোলার চলে বৃক্ষের ওপর, যা দুঃখজনক। এ ছাড়া প্রায়ই পত্রপত্রিকায় বৃক্ষ কর্তনের খবর ছাপা হয়। দুঃখের বিষয় হলো, যে বৃক্ষ মানুষের পরম বন্ধু, সেই বৃক্ষের ওপর চলে এরূপ নির্যাতন। যে বৃক্ষ কার্বন ডাই-অক্সাইড শোষণ করে এবং অক্সিজেন ত্যাগ করে বায়ুমণ্ডলকে বিশুদ্ধ রাখছে, সেই বৃক্ষের প্রতি এই অমানবিকতা গ্রহণযোগ্য নয়।

সামনে আসছে বর্ষাকাল। আসছে বৃক্ষরোপণ অভিযান। অনেক সময় দেখা যায়, বৃক্ষরোপণের পর যত্নের অভাবে চারা গাছগুলো চলে যায় গবাদিপশুর পেটে। প্রয়োজন বৃক্ষরোপণের পর একটা পর্যায়ে বেড়ে ওঠা পর্যন্ত চারা গাছগুলোর যত্ন করা।

বৃক্ষ লাগান। বৃক্ষই বাঁচাবে পরিবেশ, বাঁচাবে এই পৃথিবীর প্রকৃতিকে।

সঞ্জয় কুমার ভৌমিক

আলীশারকুল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শ্রীমঙ্গল।