প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে পরিত্রাণে তওবার গুরুত্ব

অন্যায়, অপরাধ ও পাপ যে কাজের মাধ্যমে হয়েছে, তা সংশোধন করার মাধ্যমে তওবা করতে হবে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘যারা তওবা করে এবং নিজেদের সংশোধন করে আর সত্যকে সুস্পষ্টভাবে ব্যক্ত করে এরাই তারা যাদের তওবা আমি কবুল করি, আমি অতিশয় তওবা গ্রহণকারী, পরম দয়ালু।’ (সুরা-২ বাকারা,
আয়াত : ১৬০)

‘সীমা লঙ্ঘন করার পর কেউ তওবা করলে ও নিজেকে সংশোধন করলে অবশ্যই আল্লাহ তওবা কবুল করবেন; আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।’ (সুরা-৫ মায়িদা, আয়াত : ৩৯)

‘তোমাদের মধ্যে কেউ অজ্ঞতাবশত যদি মন্দ কাজ করে, অতঃপর তওবা করে এবং সংশোধন করে তবে আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।’ (সুরা-৬ আনআম, আয়াত : ৫৪)

‘যারা তওবা করেছে, ইমান এনেছে ও সৎকর্ম করেছে, তারা জান্নাতে প্রবেশ করবে; তাদের প্রতি কোনো অবিচার করা হবে না।’ (সুরা-১৯ মারিয়াম, আয়াত : ৬০)

‘আমি অবশ্যই তার প্রতি ক্ষমাশীল যে তওবা করে, ইমান আনে, সৎকর্ম করে ও সৎপথে অবিচল থাকে।’ (সুরা-২০ ত্বহা, আয়াত: ৮২)

‘অতঃপর যদি তারা তওবা করে ও নিজেদের সংশোধন করে, আল্লাহ তো অতিশয় ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।’ (সুরা-২৪ নূর, আয়াত : ৫)

‘যারা তওবা করে, ইমান আনে ও সৎকর্ম করে, আল্লাহ তাদের পাপ পরিবর্তন করে দেবেন পুণ্য দ্বারা। আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। যে ব্যক্তি তওবা করে ও সৎকর্ম করে, সে সম্পূর্ণরূপে আল্লাহর অভিমুখী হয়।’ (সুরা-২৫ ফুরকান, আয়াত : ৭০-৭১)

‘যে ব্যক্তি তওবা করেছে এবং ইমান এনেছে ও সৎকর্ম করেছে, আশা করা যায় সে সাফল্য অর্জনকারীদের অন্তর্ভুক্ত হবে।’ (সুরা-২৮ কাসাস, আয়াত : ৬৭)

নিজেদের রক্ষায় এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের সুরক্ষায় আবাসন নির্মাণে যেসব ত্রুটিবিচ্যুতি হয়েছে, সেসব সংস্কার ও পরিমার্জন করতে হবে। এটাই হলো সংশোধন ও সৎকর্মের অন্যতম। সংশোধন, পরিবর্তন ও সৎকর্ম ছাড়া তওবা নিষ্ফল হয়।

প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে রক্ষা পেতে আমাদের প্রকৃতিকে রক্ষা করতে হবে। ইতিমধ্যে প্রকৃতির যে ক্ষতি সাধিত হয়েছে, তা পুনর্গঠন ও পুনর্নির্মাণ করতে হবে। নিজেদের সুরক্ষার জন্য প্রকৃতির সঙ্গে সহাবস্থানের উপযোগী বাসস্থান ও সরঞ্জাম তৈরি করতে হবে এবং প্রকৃতি ও সময়ের উপযোগী যাবতীয় আয়োজন করতে হবে। নিজেদের রক্ষায় এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের সুরক্ষায় আবাসন নির্মাণে যেসব ত্রুটিবিচ্যুতি হয়েছে, সেসব সংস্কার ও পরিমার্জন করতে হবে। এটাই হলো সংশোধন ও সৎকর্মের অন্যতম। সংশোধন, পরিবর্তন ও সৎকর্ম ছাড়া তওবা নিষ্ফল হয়।

তওবা, ইস্তিগফার তথা ক্ষমা প্রার্থনা করা স্বতন্ত্র একটি ইবাদত, যা আল্লাহ তাআলার খুবই পছন্দনীয়। তাই সব নবী–রাসুল মাসুম বা নিষ্পাপ হওয়া সত্ত্বেও বেশি বেশি ইস্তিগফার করতেন। হজরত মুহাম্মদ (সা.) নবীদের ইমাম ও রাসুলদের সরদার হওয়া সত্ত্বেও আল্লাহ রাব্বুল আলামিন তাঁকেও ইস্তিগফার করার নির্দেশ দিলেন। (সুরা-১১০ নাসর, আয়াত : ৩)

নবী করিম (সা.) বলেছেন, ‘আমি দৈনিক সত্তরবার আল্লাহর কাছে ইস্তিগফার করি।’ (বুখারি : ৬৩০৭) কোরআনুল করিমে এসেছে, ‘(ইস্তিগফারের ফলে) তিনি (আল্লাহ) তোমাদের প্রতি সুষম বৃষ্টি বর্ষণ করবেন। আর তোমাদের সম্পদে প্রাচুর্য ও সন্তানে বরকত দেবেন এবং তোমাদের জন্য বাগ-বাগিচা পানির ফোয়ারায় শোভিত করবেন।’ (সুরা-৭১ নুহ, আয়াত : ১১-১২)

নিজের জন্য যেমন তওবা ইস্তিগফার করব, অনুরূপ সব মুমিন নর-নারীর জন্য ইস্তিগফার ও ক্ষমা প্রার্থনা করব। আল্লাহ তাআলা প্রত্যেক মুমিন নর-নারীর বিনিময়ে আমাদের একটি করে নেকি প্রদান করবেন। (মাজমাউজ যাওয়ায়িদ, হাদিস : ১৭৫৯৮)

নবীজি (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি সর্বদা ইস্তিগফার করতে থাকে, আল্লাহ তাআলা তাকে সংকট থেকে মুক্তির পথ করে দেন। যাবতীয় দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি ও প্রশান্তি দান করেন এবং তাকে তার ধারণাতীত জায়গা থেকে রিজিক দান করেন। (আবুদাউদ : ১৫১৮)

  • মুফতি মাওলানা শাঈখ মুহাম্মাদ উছমান গনী

    যুগ্ম মহাসচিব, বাংলাদেশ জাতীয় ইমাম সমিতি; সহকারী অধ্যাপক, আহ্ছানিয়া ইনস্টিটিউট অব সুফিজম

    ই–মেইল: smusmangonee@gmail.com