দুই ‘যুধ্যমান’ প্রতিপক্ষ এই আগুন এখনই নেভাক

সাধারণ মানুষের প্রতি এমন ঘৃণা কেন?

গত এক মাসে মাত্র সাত দিন কোনো ‘রাজনৈতিক’ মৃত্যু ঘটেনি। ভয়াবহ এক মাসে ৫৯ জনের প্রাণ গেছে, যঁাদের ৪৪ জনই সাধারণ মানুষ। এঁদের মৃত্যু হয়েছে সরাসরি পেট্রলবোমায় অথবা যানবাহনের আগুনে।
কোনো অপমৃত্যুই মানা যায় না। তার পরও বিএনপি ও সহযোগী দলগুলোর ডাকা কর্মসূচিতে ১৫ জন রাজনৈতিক কর্মী ও ৪৪ জন নিরপরাধ ও নির্দলীয় মানুষের মৃত্যু প্রমাণ করে যে সাধারণ মানুষই ঘাতকদের নিশানায়! অতীতের সঙ্গে বর্তমানের তুলনা করে বলতে হচ্ছে, এত নিষ্ঠুর হত্যাকাণ্ড কি কখনো দেখেছে স্বাধীন বাংলাদেশ? হত্যার অস্ত্রের তুলনা করে বলতে হচ্ছে, পেট্রলবোমার সঙ্গে ভিয়েতনাম ও ইরাকে নিক্ষিপ্ত আগুন–বোমার কোনো পার্থক্য থাকল কি? সাধারণ মানুষের বিরুদ্ধে এই আগুনে-খুনের যুদ্ধ কি সুস্থ মস্তিষ্কের কাজ?
স্পষ্টত প্রাণহানির উদ্দেশ্যেই নাশকতা করা হচ্ছে এবং প্রাণহানিকে ভয়াবহ যন্ত্রণাকর ও বীভৎস মাত্রা দেওয়ার পদ্ধতিই অবলম্বন করা হচ্ছে। যদি সরকার ও প্রশাসনকে বিপর্যস্ত করাই উদ্দেশ্য হয়, তাহলে সাধারণ মানুষের প্রতি এমন নজিরবিহীন ঘৃণা কেন?
কার্যত বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০-দলীয় জোটের হরতাল-অবরোধের মধ্যেই হত্যাকাণ্ডগুলো ঘটেছে। এ পর্যন্ত নাশকতায় আটক ব্যক্তিদের অধিকাংশ বিএনপি-জামায়াতের কর্মী। সরকার ও বিরোধীরা আগুনে পুড়িয়ে মানুষ হত্যার জন্য পরস্পরকে দায়ী করে যাচ্ছে। কিন্তু দেশকে অচল ও আতঙ্কিত করার দায় অবশ্যই বিএনপির। যে বা যারাই করে থাকুক, তাদের চরম কর্মসূচির পরিবেশই নাশকতার সুযোগ করে দেয়। এখন পর্যন্ত বিএনপি জোটের পক্ষ থেকে আন্দোলনকে নাশকতামুক্ত করার কোনো পদক্ষেপও কিন্তু দেখা যায়নি। পাশাপাশি, বিএনপিকে জনসভা করতে না দেওয়া এবং খালেদা জিয়াকে প্রথমে অবরুদ্ধ ও পরে বিভিন্নভাবে হয়রানি করে সংকটকে ঘনীভূত করার দায় তো সরকারেরই।
বাংলাদেশ এখন পরিত্রাণ চায়, বাংলাদেশ এখন বাঁচতে চায়। দেশবাসী চায়, দুই ‘যুধ্যমান’ প্রতিপক্ষ এই আগুন এখনই নেভাক।