রাজশাহী শহরে একের পর এক পুকুর ভরাট করে ফেলা হচ্ছে। অন্যদিকে রাজশাহী জেলার পুঠিয়া উপজেলায় ধানি জমি কেটে অবৈধভাবে বানানো হচ্ছে মাছ চাষের পুকুর। উপজেলাজুড়ে ধানি জমির বিলে অবৈধভাবে পুকুর কাটার মহোৎসব চলছে। অভিযোগ উঠেছে, স্থানীয় প্রশাসনকে ‘ম্যানেজ’ করেই চলছে এ অপকর্ম। যদিও প্রশাসন বলছে, অভিযান চালিয়েও পুকুর খননকাজ তারা বন্ধ করতে পারছে না। তাহলে সব ধানি জমি পুকুর হয়ে যাচ্ছে আর প্রশাসন কিছুই করতে পারছে না, বিষয়টি কোনোভাবেই মানা যায় না।
পুঠিয়ায় কী পরিমাণ পুকুর কাটা হয়েছে, তার পরিসংখ্যান দেখলে অবাক হতে হয়। উপজেলাটিতে মোট কৃষিজমি ৯ হাজার ৬২৯ হেক্টর। আর ১ হাজার ৮৩০ হেক্টর জমিতে ৭ হাজার ৭৬২টি পুকুর। এসব পুকুর কাটা হয়েছে গত কয়েক বছরে। এমনও দেখা গেছে, অনেকগুলো বিলের পানি খালে নামতে পারছে না, কারণ খালের মুখে একের পর এক কাটা হয়েছে পুকুর। এখন বিলের পানি নিষ্কাশিত হতে না পারায় বর্ষায় বিপুল জমির ফসল জলমগ্ন হওয়ার হুমকিতে পড়েছে।
কৃষিজমি সুরক্ষা আইন-২০১৬ (খসড়া) অনুযায়ী, কোনোভাবেই কৃষিজমির ব্যবহারভিত্তিক শ্রেণি পরিবর্তন করা যাবে না। এ ছাড়া এসব পুকুর খনন করতে কৃষি বিভাগ থেকেও অনুমতি নেওয়া হয়নি। একেকটি বিলে বড় বড় ১০-২০টি পর্যন্ত পুকুর কাটা হয়েছে। অনেক কৃষককে অর্থের প্রলোভন দেখিয়ে পুকুর খননের জন্য কৃষিজমি ইজারা নেওয়া হচ্ছে। অনেক কৃষক বাধ্য হয়ে নিজের জমি দিয়ে দিচ্ছেন পুকুরের জন্য। কারণ, জমির চারপাশে পুকুর কাটায় সে জমিতে আর চাষ করার সুযোগ থাকছে না।
কোনো কোনো এলাকায় স্থানীয় লোকজন ও কৃষকেরা পুকুর কাটার প্রতিবাদ জানিয়েছেন, এমনকি বাধাও দিয়েছেন। এরপরও পুকুর কাটা থামেনি। এ অপকর্মের পেছনে স্থানীয় প্রভাবশালী ছাড়াও স্থানীয় ক্ষমতাসীন দলের নেতারা যুক্ত আছেন। আরও বড় অভিযোগ হচ্ছে, স্থানীয় প্রশাসনের আশকারায় অবাধে পুকুর কাটা হচ্ছে। এলাকাবাসীর প্রবল বিশ্বাস যে থানা-পুলিশের সঙ্গে অর্থ লেনদেনের মাধ্যমে একপ্রকার পুকুর কাটার লাইসেন্স পেয়েছেন জমিখেকোরা।
তবে পুঠিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বক্তব্য, গভীর রাতে পুকুর খনন করা হয়। অভিযানে গেলে কীভাবে যেন টের পেয়ে যায়। পুকুর খননকারীদের ধরতে রাত আড়াইটায়ও অভিযান চালানো হয়েছে। আবারও অভিযান চালানো হবে।
দুর্বৃত্তদের যদি ধরতেই পারা না যায়, তাহলে এসব অভিযান চালিয়ে কী লাভ? এখন পর্যন্ত যে পুকুর একবার কাটা শুরু হয়েছে, সেটি আর থামানো যায়নি। জমিও পুনরুদ্ধার করা যায়নি। স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের ভূমিকায় আমরা হতাশ। তারা এখন কী করে, সেটিই আমরা দেখতে চাই।
আরও পড়ুন
-
পৃথিবীর কোন দেশে সেন্ট্রাল ব্যাংকে ঢুকতে পারছে অবাধে: ওবায়দুল কাদের
-
পদ্মা সেতু প্রকল্পে নদীশাসনে হাজার কোটি টাকা বাড়তি চায় চীনা ঠিকাদার
-
রাঙামাটিতে এলোপাতাড়ি গুলিতে ইউপিডিএফের কর্মীসহ দুজন নিহত
-
বিশ্বের সেরা এয়ারলাইনস আট মাসের বেতনের সমান বোনাস দিচ্ছে
-
বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র সিরিজের ভেন্যুতে ঝড় বয়ে গেছে