একটা সময় ছিল যখন অটো ও রিকশাওয়ালারা ‘জুরাইন’ যাব বললে শুনত ‘গোরান’ যাব। জুরাইন নামের সঙ্গে পরিচিত করাতে বলতে হতো, এটি যাত্রাবাড়ী ও পোস্তাগোলার মাঝামাঝি স্থান। এখন জুরাইন মোটামুটি পরিচিত। গণকবরের জন্য জুরাইন গোরস্থান, মাদকের জন্য, সন্ত্রাসের জন্য, সন্তানসহ মায়ের আত্মহত্যার জন্য, নকল কারখানার জন্য নানা কারণে পত্রপত্রিকা, ইলেকট্রনিক মিডিয়াসহ নানা জায়গায় জুরাইনের নাম গুরুত্বসহকারে উঠে এসেছে।
১৯৮৮ সালের বন্যার পর অতি দ্রুত এলাকাটি ঘনবসতিপূর্ণ হয়ে ওঠে। রাজউকের অনুমতি না থাকলেও গড়ে উঠেছে অপরিকল্পিতভাবে বিশাল বিশাল ভবন। সেপটিক ট্যাংক না থাকায় বর্ষাকালে সব ময়লা রাস্তায় উঠে আসছে।
গত কয়েক বছর যাবৎ রাস্তাঘাটের অবস্থার দ্রুত অবনতি হওয়ায় অনেকের বাড়িঘর নিচু হয়ে গেছে। ফলে, নিচতলায় গড়ে উঠেছে কারখানা। আবার এলাকার ক্ষমতাধর প্রভাবশালী অনেকেই জনবসতিপূর্ণ এলাকায় বিশাল কারখানা ভাড়া দিয়ে পরিবার–পরিজন নিয়ে চলে যাচ্ছেন অন্য এলাকায়।
এসব কারখানার শব্দ ও ধেঁায়ায় শিশু ও রোগীসহ সবার নানা ধরনের শারীরিক সমস্যা হচ্ছে। কারখানার মালিকদের এ ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে তাঁদের সোজা উত্তর, থাকতে না পারলে অন্যত্র চলে যান। অনেক কারখানা মাঝরাতে চালু হয়। রাতভর শোঁ, শোঁ আওয়াজ মাথায় একধরনের ভোঁতা যন্ত্রণা সৃষ্টি করে।
দেশে এত কিছু হচ্ছে, কিন্তু সাধারণ মানুষের সমস্যার কথা বলার জায়গা নেই। অথচ সুশাসন না থাকলে উন্নয়ন টেকসই হয় না। এতে শুধু বৈষম্য বাড়ে।
শাকিলা নাছরিন
জুরাইন, ঢাকা।