Thank you for trying Sticky AMP!!

নতুন বছরের আলোয় হোক মূল্যবোধের চর্চা

সময়ের চাকার গতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে আমাদের প্রাত্যহিক জীবনেও নানাবিধ পরিবর্তন আসে। নিত্য নতুন প্রয়োজন পূরণে এই পরিবর্তনগুলোর মধ্যে দিয়ে আমরা সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। এভাবে একটি বছর পেরিয়ে নতুন বছরকে আমরা বরণ করে নিই। প্রতিটি মানুষ যেন নতুন বছরের কাছে প্রত্যাশার দাবিদার। পুরোনো বছরের অপূর্ণ রয়ে যাওয়া স্বপ্ন বা ইচ্ছেগুলোকে আমরা ঢেলে সাজিয়ে আরও নতুন নতুন স্বপ্ন বোনায় ব্যস্ত থাকি। তবে আমাদের এই স্বপ্ন বা ইচ্ছেগুলোয় লুকিয়ে থাকে দেশের সকল মানুষের কল্যাণ। আমরা নিজেদের কল্যাণের পাশাপাশি দেশের অগ্রগতির স্বার্থে নিজেদের স্বপ্নপূরণেও কাজ করে থাকি। কিন্তু এই স্বপ্নপূরণের পথ অতটাও মসৃণ নয়।

চলার পথে নানা প্রতিকূলতা পেরিয়ে আমাদের লক্ষ্যগুলোকে বাস্তবায়ন করতে হয় আবার সকল লক্ষ্যগুলোকেই যে আমরা বাস্তবায়ন করতে পারি এমনটাও নয়। ফলশ্রুতিতে আমাদের মূল্যবোধ কোথায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে তা আজ প্রশ্নবিদ্ধ।
স্বাধীনতার পরবর্তী ৫০ বছরে দেশের অগ্রগতিতে একদিকে দেশের কল্যাণকামী মানুষগুলো নিজেদের অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছে, অন্যদিকে কেউ কেউ দেশ-সমাজবিরোধী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হচ্ছে। তাদের কর্মকাণ্ডগুলোও চোখে পড়ার মতো যেমনটা দেখা যায়, ধর্ম-বর্ণ-শ্রেণি নির্বিশেষে মানুষের মাঝে বিভেদ সৃষ্টি করার জন্য গুপ্তচক্রের একের পর এক পাঁয়তারা, মৃত্যুঝুঁকি জেনেও বাজারে ভেজাল ওষুধ সরবরাহ, মাদক কর্মকাণ্ডে দেশের তরুণ প্রজন্মকে সম্পৃক্ত করে দেশের অগ্রগতির পথকে রুদ্ধ করার চেষ্টা। এ ছাড়াও রয়েছে মানবপাচার, নারী ও শিশু পাচার, নারী ও শিশু নির্যাতন, গৃহকর্মী নির্যাতন, শিশুশ্রম, শিশুদের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে যুক্ত করা, ছোট ঘটনাকে কেন্দ্র করে মিথ্যা তথ্য দিয়ে বড় করে সাধারণ জনগণের কাছে উপস্থাপন, দেশের উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহারের চেষ্টাসহ আরও নানাবিধ দেশবিরোধী কর্মকাণ্ড।

এ সকল অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে স্বদেশের মানুষেরই ক্ষতিসাধন করা এককথায় মূল্যবোধেরই নামান্তর। ১৯৭১ এ বিশ্ব মানচিত্রে স্বাধীন দেশ হিসেবে স্থান পেতে অসংখ্য মানুষের প্রাণ দিতে হয়েছিল। সেদিন দেশপ্রেমী সকল মানুষের একটি মাত্র স্বপ্ন ছিল। আর আজ দেশের কল্যাণে কাজ করার জন্য কিছু মানুষের সঠিকভাবে মূল্যবোধের চর্চা থমকে গিয়েছে।

যে দেশের স্বাধীন পতাকা উড়াতে একসময় তরুণ সমাজ ছিল প্রধান কান্ডারি, আজ দেশের অগ্রগতিকে বাধা দিতে তরুণ প্রজন্মকে দমাতে এক শ্রেণির মানুষ সক্রিয় রয়েছে। কিন্তু এই সকল কর্মকাণ্ড যাতে সামনের দিনগুলোতে দেশের অগ্রগতিতে আর বাবা না দেয়, তার জন্য প্রয়োজন একাত্তরের যুদ্ধের মতো মানুষের সঠিক মূল্যবোধ অক্ষুণ্ন রাখতে তরুণ প্রজন্মের অগ্রণী ভূমিকা পালন, পাশাপাশি দেশের নাগরিক হয়ে প্রত্যেকটি মানুষের নিজের সমাজ ও দেশের কল্যাণে নিজ মূল্যবোধকে উজ্জীবিত করে নিজ দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কে সচেতন হওয়া।

তাই,পুরোনো বছরের অপূর্ণ রয়ে যাওয়া স্বপ্নগুলোকে বাস্তবায়নে শুধু তরুণ প্রজন্ম নয় বরং আমাদের সকলের উচিত নতুন বছরের প্রত্যাশার একাংশে হলেও থাকুক সঠিকভাবে মূল্যবোধের চর্চা করা।

সুরাইয়া
শিক্ষার্থী, নৃবিজ্ঞান বিভাগ
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়