Thank you for trying Sticky AMP!!

হজ সম্পর্কে বিরূপ মন্তব্য লতিফ সিদ্দিকীর

আবদুল লতিফ সিদ্দিকী।

হজ, তাবলিগ জামাত, প্রধানমন্ত্রীর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় ও সাংবাদিকদের সম্পর্কে বিরূপ মন্তব্য করেছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য যোগাযোগপ্রযুক্তিমন্ত্রী আবদুল লতিফ সিদ্দিকী।
গতকাল রোববার বিকেলে নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসের একটি হোটেলে নিউইয়র্ক টাঙ্গাইল সমিতির সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে মন্ত্রী এসব কথা বলেন। তাঁর বক্তব্যের এই ভিডিও বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
পবিত্র হজ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর এই সদস্য বলেন, ‘আমি কিন্তু হজ আর তাবলিগ জামাতের ঘোরতর বিরোধী। আমি জামায়াতে ইসলামীরও বিরোধী। তবে তার চেয়েও হজ ও তাবলিগ জামাতের বেশি বিরোধী।’ তিনি বলেন, ‘এ হজে যে কত ম্যানপাওয়ার (জনশক্তি) নষ্ট হয। হজের জন্য ২০ লাখ লোক আজ সৌদি আরবে গিয়েছে। এদের কোনো কাম নাই। এদের কোনো প্রডাকশন নাই। শুধু রিডাকশন দিচ্ছে। শুধু খাচ্ছে আর দেশের টাকা দিয়ে আসছে।’
লতিফ সিদ্দিকী বলেন, ‘এভারেজে (গড়ে) যদি বাংলাদেশ থেকে এক লাখ লোক হজে যায়; প্রত্যেকের পাঁচ লাখ টাকা করে ৫০০ কোটি টাকা খরচ হয়।’
তাবলিগ জামাতের সমালোচনা করে আবদুল লতিফ সিদ্দিকী বলেন, ‘তাবলিগ জামাত প্রতিবছর ২০ লাখ লোকের জমায়েত করে। নিজেদের তো কোনো কাজ নেই। সারা দেশের গাড়িঘোড়া তারা বন্ধ করে দেয়।’

মতবিনিময় অনুষ্ঠানে কোনো একজন আবদুল লতিফ সিদ্দিকীর কাছে ইন্টারনেটের গতি নিয়ে প্রশ্ন করেন। সে সময় ওই প্রশ্নকর্তা প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তিবিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের প্রসঙ্গ টানেন। জবাবে মন্ত্রী ক্ষুব্ধ হয়ে বলেন, ‘জয় ভাই কে?’ ওই সময় মঞ্চে থাকা যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ‘সজীব ওয়াজেদ জয়।’

জবাবে লতিফ সিদ্দিকী বলেন, ‘সে করার কে? জয় বাংলাদেশ সরকারের কেউ নয়। এখানে জয়ের কিছু করার নেই। সরকার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। কার্যকর করেন মন্ত্রী।’ তিনি বলেন, ‘কথায় কথায় আপনারা জয়কে টানেন কেন?’

টেলিভিশনের টক শো প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, ‘ওদের আমি বলি ‘‘টক মারানি’’।’ তিনি বলেন, ‘যারা টক শোতে যায় তারা টক ম্যান। নিজেদের কোনো কাজ না থাকায় ক্যামেরার সামনে গিয়ে তারা বিড়বিড় করে। টকমারানিদের আর কোনো কাজ নেই।’

অনুষ্ঠানে বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে বারবার উত্তেজিত হয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন মন্ত্রী। এক সাংবাদিককে ধমক দিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি কি তোমার মতো কথা বলব? আমি আমার মতো কথা বলব। তুমি এখানে আসলা কেন, তোমাকে কে বলেছে আসতে?’

প্রবাসীদের উদ্দেশে আবদুল লতিফ সিদ্দিকী বলেন, ‘বিদেশে এসেছেন কামলা দিতে। রাজনীতি করার দরকার কী?’ মঞ্চে বসা টাঙ্গাইলের মুক্তিযোদ্ধা ও যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী ড. নুরুন্নবীকে উদ্দেশ করে মন্ত্রী বলেন, ‘নির্বাচনের জন্য একবার তাঁর (নুরুন্নবী) কাছে চাঁদা চেয়েছিলাম। তিনি ৫০ হাজার টাকা দিয়েছিলেন। আবদুল লতিফ সিদ্দিকী এক লাখের কম কারও কাছ থেকে চাঁদা নেয় না।’

এদিকে আবদুল লতিফ সিদ্দিকীর অসংলগ্ন বক্তব্যের সময় হলের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। মন্ত্রীর এসব বক্তব্যে মঞ্চে থাকা আওয়ামী লীগের নেতারা উসখুস করতে থাকেন।

ইসলামের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ হজ সম্পর্কে বিরূপ মন্তব্যের পর স্থানীয় প্রবাসীদের মধ্যে কড়া প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। খবরটি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। ক্ষুব্ধ প্রবাসীরা মন্ত্রীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান।

সভার পর নুরুন্নবী গণমাধ্যমে বলেন, ‘সভায় কোনো উপস্থাপক ছিলেন না। সভায় মন্ত্রী একাই বক্তব্য দিয়েছেন। তাঁর এসব বক্তব্য খণ্ডন করার বা বক্তব্য রাখার জন্য আমরা কোনো সুযোগই পাইনি।’

প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হিসেবে নিউইয়র্ক সফর করছেন আইসিটি মন্ত্রী আবদুল লতিফ সিদ্দিকী।