
নির্বাচন কমিশনের নিয়োগ সংবিধানে অন্তর্ভুক্তির বিষয়ে জামায়াতে ইসলামীসহ অন্য রাজনৈতিক দলগুলো একমত বলে জানিয়েছেন দলটির নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের। তিনি বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের গঠনপ্রক্রিয়া নিয়েও আলোচনা প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে।
আজ বুধবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে রাজনৈতিক দল ও জোটের সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় ধাপের ১৮তম দিনের আলোচনা শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের।
জামায়াতের এই নায়েবে আমির বলেন, ‘আজকের আলোচনা অত্যন্ত গঠনমূলক ও ইতিবাচক ছিল। অনেক মতপার্থক্য থাকলেও শেষ পর্যন্ত আমরা সবাই একমত হয়েছি যে নির্বাচন কমিশনকে (নিয়োগ) সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করা হবে এবং এটির গঠন একটি সিলেকশন কমিটির মাধ্যমে হবে।’
আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের বলেন, পাঁচ সদস্যের একটি সিলেকশন কমিটি গঠন করা হবে, যার সদস্যরা হবেন স্পিকার (সভাপতি), বিরোধী দল মনোনীত ডেপুটি স্পিকার, প্রধানমন্ত্রী, বিরোধীদলীয় নেতা এবং প্রধান বিচারপতির মনোনীত একজন আপিল বিভাগের বিচারপতি। এই কমিটি সর্বসম্মতিক্রমে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও কমিশনারদের মনোনয়ন দিয়ে রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠাবে এবং রাষ্ট্রপতি সেই নাম অনুযায়ী নিয়োগ দিতে বাধ্য থাকবেন।
জামায়াতের এই নেতা আরও বলেন, ‘এখানে রাষ্ট্রপতির নিজস্ব মতামতের কোনো সুযোগ রাখা হয়নি। (আলোচনার) এই অংশে আমরা একটি গঠনমূলক এবং সম্মানজনক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে একটি স্বচ্ছ নির্বাচন কমিশন গঠনের ভিত্তি তৈরি করতে পেরেছি।’
আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের বলেন, কমিশন গঠনের পাশাপাশি কমিশনারদের আচরণবিধি ও জবাবদিহি নিশ্চিত করার বিষয়েও ঐকমত্য হয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমরা প্রস্তাব করেছি, সংবিধানের ১১৮ অনুচ্ছেদে একটি নতুন ধারা যুক্ত করে আইন প্রণয়ন করতে হবে, যা নির্বাচন কমিশনের সদস্যদের অ্যাকাউন্টেবিলিটি (জবাবদিহি) ও অপসারণ প্রক্রিয়া নির্ধারণ করবে।’
তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রসঙ্গে জামায়াতের এই নায়েবে আমির বলেন, নির্বাচন কমিশন ও তত্ত্বাবধায়ক সরকার দুটি আলাদা বডি (কর্তৃপক্ষ)। তবে নির্বাচনের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে দুটোই গুরুত্বপূর্ণ। তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনের আলোচনাও প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে, সেটি চূড়ান্ত হলে জানানো হবে।
আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের আরও বলেন, ‘আজকের আলোচনা ছিল ঐক্য ও বিশ্বাসের প্রতীক। সবাই আন্তরিকতা ও দায়িত্ববোধের সঙ্গে অংশ নিয়েছেন। আমরা আশা করি, এই ঐকমত্য আগামী নির্বাচনের জন্য একটি শক্তিশালী সাংবিধানিক ভিত্তি তৈরি করবে।’