
ঢাকা বিমানবন্দর থেকে পূর্বাচলের ৩০০ ফুট—স্বাভাবিক দিনে যে পথে আধা ঘণ্টার বেশি সময় লাগে না, সেই পথেই গতকাল লেগে গেল তিন ঘণ্টা। কারণ, রাস্তার দুই ধারে নেতা-কর্মী-সমর্থকদের সারি, মানুষের ঢল। কেবল নেতা-কর্মী নন, অনেকেই এসেছেন ১৭ বছর পর দেশে ফেরা তারেক রহমানকে একপলক দেখার কৌতূহল নিয়ে, কেউবা প্রত্যাবর্তনের একটি স্মরণীয় দিনের সাক্ষী হতে। বিমানবন্দর থেকে পূর্বাচলের সংবর্ধনা মঞ্চ পর্যন্ত সাড়ে ছয় কিলোমিটার পথ যেন লোকারণ্য হয়ে ওঠে।
প্রায় দেড় যুগের নির্বাসন শেষে গতকাল বৃহস্পতিবার সপরিবার দেশে ফেরেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। বিমানবন্দর থেকে বের হয়েই তিনি খালি পায়ে শিশিরভেজা ঘাসে দাঁড়িয়ে ১৭ বছর পর প্রথম দেশের মাটির স্পর্শ নেন।
জনজোয়ার ঠেলে বিকেল প্রায় চারটায় তারেক রহমান পূর্বাচলের জুলাই ৩৬ এক্সপ্রেসওয়ের সংবর্ধনা মঞ্চে ওঠেন, ১৬ মিনিট বক্তব্য দেন। তিনি সকলের জন্য নিরাপদ বাংলাদেশ গড়ার আহ্বান জানান। নারী, পুরুষ, শিশু এমনকি সব ধর্মের মানুষ যাতে নিরাপদে থাকে সেটাই তাঁদের চাওয়া বলে জানালেন।
তারেক রহমান বাংলাদেশ বিমানের বিজি-২০২ ফ্লাইটে দেশে ফেরেন। তিনি লন্ডন থেকে সিলেট হয়ে গতকাল বেলা ১১টা ৪৩ মিনিটে ঢাকায় হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান। সঙ্গে ছিলেন স্ত্রী ডা. জুবাইদা রহমান ও একমাত্র মেয়ে জাইমা রহমান।
বিমানবন্দরের ভিআইপি লাউঞ্জে তারেক রহমানকে ফুল দিয়ে স্বাগত জানান শাশুড়ি সৈয়দা ইকবাল মান্দ বানু ও বিএনপির শীর্ষ নেতারা। সেখানে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, আবদুল মঈন খান, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ ও সালাহউদ্দিন আহমদ (অভ্যর্থনা কমিটির আহ্বায়ক), জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী (সদস্যসচিব) ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র শাহাদাত হোসেন।
ইমিগ্রেশন শেষে বিমানবন্দর থেকে বেরিয়ে এসে হঠাৎ থেমে যান তারেক রহমান। জুতা খুলে লাগোয়া বাগানের শিশিরভেজা ঘাসে দাঁড়িয়ে দেশের মাটির স্পর্শ নেন। এরপর এক টুকরো মাটি হাতে তুলে নেন মাতৃভূমিকে ছুঁয়ে দেখার মতো করে।
রুহুল কবির রিজভীর মতে, কোনো বক্তব্য নয়, কোনো ঘোষণা নয়—নীরব একটি মুহূর্তেই যেন ধরা পড়েছে দীর্ঘ সময় জন্মভূমির মাটি স্পর্শ না পাওয়ার বেদনা অথবা এতদিন পর স্বদেশের মাটির পরশ পাওয়ার আনন্দ।
প্রিয় নেতাকে সংবর্ধনা জানাতে আসা নেতা-কর্মীদের নানা রঙে আবিষ্ট হতে দেখা গেছে। অনেকের পরনে দলীয় পতাকার সঙ্গে রং মিলিয়ে জার্সি। মাথায় ক্যাপ, কপালে ব্যান্ড। অনেকের হাতে দলের পতাকা, প্ল্যাকার্ড। কেউ কেউ দলের লোগোসংবলিত ব্যাজ পরে এসেছেন। বিভিন্ন ধরনের প্লাকার্ড, ব্যানারসহ ফুল হাতে নিয়ে সড়কের দুই পাশে দাঁড়িয়ে তাঁরা ‘তারেক রহমানের আগমন, শুভেচ্ছা স্বাগতম’, ‘বাংলাদেশের প্রাণ, তারেক রহমান’ প্রভৃতি স্লোগান দেন।
সংবর্ধনা মঞ্চ থেকে মায়ের কাছে
বিকেল ৪টা ১২ মিনিটে বক্তব্য শেষ করে তারেক রহমান এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মা বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে দেখতে যান। সংবর্ধনা মঞ্চ থেকে নেতা-কর্মীদের ভিড় ঠেলে হাসপাতালে পৌঁছাতে সময় লেগেছে প্রায় পৌনে দুই ঘণ্টা।
বিমানবন্দর থেকে নেমে কেন শয্যাশায়ী মায়ের কাছে না গিয়ে আগে জনসমাবেশে এলেন, তার ব্যাখ্যা দেন তারেক রহমান। তিনি বলেন, ‘এখান থেকে আমি আমার মা দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার কাছে যাব। সন্তান হিসেবে আমার মন আমার মায়ের বিছানার পাশে পড়ে আছে সেই হাসপাতালের ঘরে। কিন্তু সেই মানুষটি যাঁদের জন্য জীবন উৎসর্গ করেছেন, অর্থাৎ আপনারা—এই মানুষগুলোকে। সেই মানুষগুলোকে আমি কোনোভাবেই ফেলে যেতে পারি না। সে জন্যই আজ হাসপাতালে যাওয়ার আগে আপনাদের প্রতি, টেলিভিশনগুলোর মাধ্যমে সমগ্র বাংলাদেশ থেকে যাঁরা আমাকে দেখছেন, আপনাদের সবার কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করার জন্য আমি এখানে দাঁড়িয়েছি।’
তারেক রহমান বিমানবন্দর থেকে রওনা দেন পূর্বাচলের ৩০০ ফুট এলাকায় সংবর্ধনা মঞ্চের উদ্দেশে। স্ত্রী জুবাইদা রহমান ও মেয়ে জাইমা রহমান বিমানবন্দর থেকে সরাসরি গুলশানের বাসায় যান। তারপর এভারকেয়ার হাসপাতালে যান।
হাসপাতালে মাকে দেখে তারেক রহমান যান গুলশান অ্যাভিনিউর ১৯৬ নম্বর বাসায়, যার পাশেই ‘ফিরোজা’, যে বাড়িতে থাকেন খালেদা জিয়া। যে বাসে করে বিমানবন্দর থেকে এসেছিলেন, সেই বাসে করেই স্ত্রী ও মেয়েকে নিয়ে তিনি বাসায় যান।
সেখানে পুলিশ, বিজিবি ও র্যাব মোতায়েন করা হয়েছে। নিরাপত্তার অংশ হিসেবে আশপাশের রাস্তাগুলোতে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টাকে ফোন
দেশে ফিরে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ভিআইপি লাউঞ্জ থেকে তারেক রহমান ফোনে কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে। নিরাপত্তা ও সার্বিক ব্যবস্থাপনার জন্য কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তারেক রহমান বলেন, ‘আমি আমার পক্ষ থেকে এবং আমার পরিবারের পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। বিশেষ করে আমার নিরাপত্তার জন্য আপনার নেওয়া সব আয়োজনের জন্য।’
বিএনপির মিডিয়া সেলের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দুপুর সাড়ে ১২টার কিছু আগে পোস্ট করা ভিডিওতে এ বিষয়ে জানানো হয়। ভিডিওর ক্যাপশনে লেখা রয়েছে, ‘মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সাথে কথা বলছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।’
ভিডিওতে অধ্যাপক ইউনূসের বক্তব্য শোনা না গেলেও কথোপকথনে সৌজন্য স্পষ্ট ছিল। কথোপকথনে তারেক রহমান প্রধান উপদেষ্টার শরীরের অবস্থা সম্পর্কে জানতে চান এবং নিজের জন্য দোয়া চান।
লাল-সবুজে মোড়ানো মিনিবাস
দুপুর ১২টা ৩৫ মিনিটে বিএনপির দলীয় পতাকার রং লাল-সবুজে সাজানো একটি মিনিবাসে করে তারেক রহমান রওনা হন পূর্বাচলের ৩০০ ফুট সড়কের সংবর্ধনা মঞ্চের দিকে। সদ্য জাপান থেকে আনা বুলেটপ্রুফ বাসটির গায়ে লেখা ছিল ‘সবার আগে বাংলাদেশ’। বাসের সামনের অংশে দাঁড়িয়ে হাত নেড়ে তিনি নেতা-কর্মীদের শুভেচ্ছা জানান। সেই উত্তরার জসীমউদ্দীন রোডের মোড় থেকে শুরু করে কাওলা, নিকুঞ্জ, খিলক্ষেত, কুড়িল বিশ্বরোড হয়ে সংবর্ধনা মঞ্চ পর্যন্ত সড়কের দুই পাশে সারি বেঁধে দাঁড়িয়ে থাকা নেতা-কর্মী, সমর্থকদের স্লোগানে মুখর হয়ে ওঠে এলাকা।
পূর্বাচলের ৩৬ জুলাই এক্সপ্রেসওয়ে (৩০০ ফুট সড়ক) সকাল থেকেই লোকারণ্যে পরিণত হয়। সকাল আটটায় দেখা যায়, কুড়িল বিশ্বরোড থেকে সংবর্ধনা মঞ্চ পর্যন্ত পুরো সড়ক নেতা-কর্মীদের পদচারণে মুখর। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা নেতা-কর্মী, সমর্থকসহ বিভিন্ন বয়সের মানুষ আগের রাতেই মঞ্চ ও আশপাশের এলাকায় অবস্থান নেন। তারেক রহমানের আগমন উপলক্ষে রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে নানা স্লোগানসংবলিত ফেস্টুন, ব্যানার লাগানো হয়।
কেবল পূর্বাচলের সংবর্ধনা মঞ্চ এবং তার আশপাশের এলাকাই নয়, মানুষের জমায়েত ছিল বনানী, গুলশান, বাড্ডা সড়কেও। কোথাও কোথাও ভিড় উপচে পড়ে। রাস্তাজুড়ে ছিল সেনা ও নিরাপত্তা বাহিনীর সতর্ক অবস্থান।
কুষ্টিয়ার কুমারখালী থেকে ভোরে ঢাকায় আসা সানাউল্লাহ প্রথম আলোকে বলেন, ‘এত দিন তারেক ভাইকে দেখেছি ফেসবুকে। আজ সামনে থেকে দেখব। বাড়িতে বলে এসেছি, দেখে এসে মিষ্টি খাওয়াব।’
বরিশাল, রাজশাহী, দিনাজপুর, চট্টগ্রাম, খুলনা, ময়মনসিংহ, সিলেটসহ বিভিন্ন অঞ্চল থেকে বিশেষ ট্রেনে করে নেতা-কর্মীরা ঢাকায় পৌঁছান। সবার মুখে মুখে একটাই কথা, ‘লিডার আসছেন’।
বগুড়া থেকে এসেছেন আজিজুল হক কলেজ ছাত্র সংসদের সাবেক নেতা ওবায়দুল হক। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘তারেক রহমানকে দেখতে এসেছি। এই উচ্ছ্বাসের কথা মুখে প্রকাশ করা যাবে না।’
চল্লিশোর্ধ্ব নারী নুসরাত জাহান এসেছেন বাড্ডা থেকে। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিএনপি করি না। তবু তারেক রহমানকে একবার দেখার জন্য এসেছি। এখানে এসে ঈদ ঈদ মনে হচ্ছে।’
ফেসবুকে তারেক রহমান
ঢাকায় আসার আগে সকাল ৯টা ৫৫ মিনিটে তারেক রহমানের ফ্লাইট সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যাত্রাবিরতি করে। সেখানে সোয়া ঘণ্টা অবস্থানের সময় সকাল ১০টা ১৮ মিনিটে তিনি ফেসবুকে সস্ত্রীক ছবি পোস্ট করে লেখেন, ‘অবশেষে সিলেটে, বাংলাদেশের মাটিতে!’
এর আগে সকাল ৯টা ৩৪ মিনিটে আরেক পোস্টে লেখেন, ‘দীর্ঘ ৬ হাজার ৩শ ১৪ দিন পর বাংলাদেশের আকাশে!’
আল্লাহ যাঁকে ইচ্ছা ক্ষমতা প্রদান করেন এবং যাঁর থেকে ইচ্ছা ক্ষমতা কেড়ে নেন বলে এক পোস্টে মন্তব্য করেন তারেক রহমান। গতকাল বেলা সোয়া তিনটার দিকে নিজের ফেসবুক পেজে এক পোস্টে তিনি এটা লেখেন।
স্বাগত জানালেন অন্য দলের নেতারা
তারেক রহমানের দেশে ফেরাকে স্বাগত জানিয়েছে জামায়াতে ইসলামী, এনসিপি, ইসলামী আন্দোলনসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। তারেক রহমানকে স্বাগত জানিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান নিজের ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে লিখেন, ‘জনাব তারেক রহমান, সপরিবারে সুস্বাগতম।’ বৃহস্পতিবার বেলা দেড়টার দিকে তিনি এই পোস্ট দেন।
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, ইসলামী আন্দোলনের আমির সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম ও বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের আমির মাওলানা মামুনুল হক স্বাগত জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন। তাঁরা বলেছেন, এই প্রত্যাবর্তন রাজনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
অভূতপূর্ব নিরাপত্তা, সেই দিনের স্মৃতি
তারেক রহমানের আগমনকে কেন্দ্র করে বিমানবন্দরের ভিআইপি গেটসহ আশপাশে নিরাপত্তাব্যবস্থা ছিল বেশ চোখে পড়ার মতো। বিমানবন্দর থেকে সমাবেশস্থল পর্যন্ত সড়কের দুই পাশে এবং তারেক রহমানকে বহনকারী বাসের সামনে, পেছনে এবং দুই পাশে ছিল সেনাবাহিনীসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিরাপত্তাবেষ্টনী। তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তন ঘিরে পূর্বাচলের ৩০০ ফুট সড়কের সঙ্গে যুক্ত সড়কগুলোতে ভোর থেকে সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। একদিকে উত্তরার আবদুল্লাহপুর ও জসীমউদ্দীন, আরেক দিকে মাটিকাটা এমএইএস মোড় (গোলচত্বর), আর্মি স্টেডিয়ামের সামনে কাঁটাতারের ব্যারিকেড দিয়ে আটকে দেন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। এর মধ্যে উত্তরা থেকে বিমানবন্দর, কাওলা, খিলক্ষেত হয়ে শেওড়া, কুর্মিটোলা, আর্মি স্টেডিয়ামের কাছ পর্যন্ত সড়কের দুই পাশে অবস্থান নেয় সারা দেশ থেকে নেতা–কর্মীদের নিয়ে আসা শত শত বাস, মাইক্রোবাস ও কার। এ সময় সড়কে কোনো গণপরিবহন না থাকায় রাজধানীর একটা অংশের সাধারণ মানুষকে চলাচলে দুর্ভোগের মুখে পড়তে হয়। জনস্রোতের কারণে বিমানবন্দর থেকে কুড়িল বিশ্বরোড পর্যন্ত তীব্র যানজট ও মানবজট দেখা দেয়।
এক-এগারোর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় ২০০৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বর বন্দী অবস্থা থেকে বের হয়ে তারেক রহমান চিকিৎসার জন্য সস্ত্রীক বিদেশে যান। সেদিন কড়া পাহারায় তাঁকে যখন বিমানে তুলে দেওয়া হয়, তখন আশপাশে গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন ছাড়া আর কেউ ছিলেন না। দল থেকে, মায়ের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন করে তাঁকে অনেকটা নির্বাসনে পাঠানো হয়। ১৭ বছর পর সেই তারেক রহমান দেশে ফিরলেন, স্মরণকালের বৃহত্তম জমায়েতের মধ্য দিয়ে দেশের মাটিতে তাঁকে বরণ করা হলো।
এটাকে ‘বাংলাদেশের রাজনীতিতে একটা ঐতিহাসিক মুহূর্ত’ বলে মনে করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম। তিনি গত রাতে প্রথম আলোকে বলেন, একসময় তারেক রহমানকে মিলিটারি জান্তা মিথ্যা অভিযোগে শারীরিকভাবে নির্যাতন করে নির্বাসিত করেছিল। তাঁর চরিত্র হননের জন্য কোনো অপপ্রচার তারা বাদ রাখেনি। সবকিছুকে মিথ্যা প্রমাণিত করে তিনি দেশে ফিরেছেন জনগণের অভূতপূর্ব ভালোবাসা নিয়ে।’
বিএনপির নেতা-কর্মীসহ রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের অনেকে দীর্ঘ দেড় যুগ পর তারেক রহমানের এই প্রত্যাবর্তন শুধু একটি দলের শীর্ষ নেতার দেশে ফেরা নয়, এটি বাংলাদেশের পরিবর্তিত রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে একটি নতুন যাত্রার সূচনা হিসেবে দেখছেন। যদিও শেষ পর্যন্ত এর প্রতিফলন কতটা কী হয়, তা সময়ই বলবে। তবে তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের এই দিন এবং রাজধানী ঢাকার এক বিশাল এলাকার দৃশ্য এবং তাঁর শান্তির বার্তা অনেকের স্মৃতিতে আলাদা করে থেকে যাবে।