বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবু জাফর আহমদের স্মরণসভায় বক্তব্য দেন বর্তমান সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন। বৃহস্পতিবার রাজধানীর মুক্তিভবনে
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবু জাফর আহমদের স্মরণসভায় বক্তব্য দেন বর্তমান সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন। বৃহস্পতিবার রাজধানীর মুক্তিভবনে

অন্তর্বর্তী সরকার নির্বাচন নিয়ে গড়িমসি করছে: সিপিবি

অন্তর্বর্তী সরকার নির্বাচন নিয়ে গড়িমসি করছে বলে মন্তব্য করে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেছেন, বর্তমান সংকট সমাধানে এ বছরের মধ্যেই নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে। নির্বাচনব্যবস্থার আমূল সংস্কারও দাবি করেন তিনি।

রুহিন হোসেন বলেন, সিপিবি, বাম জোটসহ ৫০টির বেশি দল চলতি বছরের মধ্যে নির্বাচন চাইলেও প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন মাত্র একটি দল ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন চায়।

সিপিবির সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবু জাফর আহমদের ষষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত স্মরণসভায় রুহিন হোসেন এ কথাগুলো বলেন। বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর মুক্তিভবনে এই স্মরণসভার আয়োজন করে সিপিবি।

এখন গণতন্ত্র ও শোষণমুক্তির আকাঙ্ক্ষার বিপরীতে অনেকে অবস্থান নিচ্ছেন অভিযোগ করে সিপিবির সাধারণ সম্পাদক বলেন, গণ–অভ্যুত্থানের পর গত ১০ মাসে জনজীবনের সংকট দূর হয়নি। দারিদ্র্য, বেকারত্ব বাড়ছে। মানুষের নিরাপত্তাহীনতা কাটছে না। ‘মব’ সন্ত্রাস চলছে।

রুহিন হোসেন বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার এখতিয়ারের বাইরে গিয়ে করিডর প্রদান, বন্দর লিজ, বিদেশিদের সমরাস্ত্র কারখানা অনুমোদন—এ ধরনের কার্যক্রমের মাধ্যমে ভূরাজনীতিতে আধিপত্যবাদী সাম্রাজ্যবাদী শক্তির স্বার্থ রক্ষা করতে চাইছে।

স্বাধীন বিচার বিভাগ ও নিরপেক্ষ প্রশাসনের কথা বলা হলেও একাত্তরের যুদ্ধাপরাধীরা বেকসুর খালাস পাচ্ছেন বলেও মন্তব্য করেন সিপিবির সাধারণ সম্পাদক। তিনি বলেন, জেল পলাতক জঙ্গি গ্রেপ্তার ও লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধারের খবর পাওয়া যাচ্ছে না।

স্মরণসভায় সিপিবির সাবেক সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের মধ্যে নানা টানাপোড়েন দেখা যাচ্ছে। নির্বাচন নিয়ে টালবাহানা চলছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

আগে উন্নয়ন, পরে গণতন্ত্র—এসব বলে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণতন্ত্রের কবর দিয়েছিলেন মন্তব্য করে মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, এখন বলা হচ্ছে আগে সংস্কার, পরে নির্বাচন। উন্নয়নের সঙ্গে যেমন গণতন্ত্রের বিরোধ নেই, সংস্কারের সঙ্গেও তেমনি নির্বাচনের বিরোধ নেই।

এ সময় আরও বক্তব্য দেন সিপিবির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী সাজ্জাদ জহির চন্দন ও অনিরুদ্ধ দাশ, কোষাধ্যক্ষ ফজলুর রহমান।

স্মরণসভার শুরুতে প্রয়াত নেতা আবু জাফর আহমদের প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ করা হয়। এ সময় দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালনের মাধ্যমে তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়।

আবু জাফর আহমদ ২০১৯ সালের ২৮ মে মারা যান। ছাত্রজীবন থেকেই ছাত্র ইউনিয়নের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন তিনি। ছাত্ররাজনীতির পাশাপাশি তিনি সিলেটের বিভিন্ন পেশাজীবী, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও গণতান্ত্রিক আন্দোলনে সোচ্চার ছিলেন।