১৯৪৬
১৫ আগস্ট জলপাইগুড়িতে জন্ম। ইস্কান্দার মজুমদার ও বেগম তৈয়বা মজুমদারের তিন মেয়ে ও দুই ছেলের মধ্যে খালেদা জিয়া তৃতীয়।
১৯৫১
স্কুলজীবন শুরু হয় দিনাজপুরের সেন্ট জোসেফ কনভেন্ট নামের একটি মিশন স্কুলে।
১৯৬০
৫ আগস্ট তৎকালীন সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন জিয়াউর রহমানের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়।
১৯৬৫
২০ নভেম্বর প্রথম সন্তান তারেক রহমানের জন্ম। আরাফাত রহমানের জন্ম ১৯৭০ সালের ১২ আগস্ট।
১৯৭১
মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে দুই সন্তানসহ আত্মগোপনে চলে যান খালেদা জিয়া। ছিলেন চট্টগ্রামে। একপর্যায়ে তিনি ঢাকায় আসতে বাধ্য হন। ২ জুলাই ঢাকার সিদ্ধেশরীর একটি বাসা থেকে পাকিস্তানি সেনারা দুই ছেলেসহ খালেদা জিয়াকে বন্দী করে। ওই বছরের ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত তিনি ঢাকা সেনানিবাসে বন্দী ছিলেন।
১৯৭৯ সালে স্বামী রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সঙ্গে খালেদা জিয়া। ১৯৮১ সালে জিয়াউর রহমানের মৃত্যুর পর রাজনীতিতে পা রাখেন খালেদা জিয়া। তারপর আমৃত্যু বিএনপির চেয়ারপারসন ছিলেন তিনি।১৯৮১
৩০ মে বিপথগামী কিছু সেনা কর্মকর্তার হাতে নিহত হন তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান। স্বামী হারান খালেদা জিয়া।
১৯৮২
নেতা-কর্মীদের আহ্বানে জানুয়ারিতে বিএনপির দলীয় সদস্যপদ গ্রহণ করেন খালেদা জিয়া।
১৯৮৪
এপ্রিলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন ও আগস্টে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারপারসন নির্বাচিত হন।
১৯৮৭ সালে বিএনপি কার্যালয়ে ছেলে তারেক রহমানের সঙ্গে খালেদা জিয়া। তারেক রহমান এখন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান।১৯৮৭
এরশাদবিরোধী আন্দোলনে রাজপথের নেত্রী হয়ে ওঠেন খালেদা জিয়া। তিনি ‘এরশাদ হটাও’–এর এক দফা আন্দোলন শুরু করেন।
১৯৯১ সালে সংসদ নির্বাচনের আগে প্রচারে সারা দেশ চষে বেড়িয়েছিলেন খালেদা জিয়া।১৯৯১
পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পাঁচটি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে সব কটিতে জয়লাভ করেন খালেদা জিয়া। বিএনপি ১৪০ আসন পেয়ে জামায়াতে ইসলামীকে (১৮ আসন) নিয়ে সরকার গঠন করে। খালেদা জিয়া হন দেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী।
১৯৯৬
ষষ্ঠ জাতীয় সংসদের (১৫ ফেব্রুয়ারি) একতরফা নির্বাচনে বিএনপি ২৭৮টি আসনে জয়ী হয়। খালেদা জিয়া আবার প্রধানমন্ত্রী হন। সেই সরকার টিকেছিল ১২ দিন।
২০০১ সালে নির্বাচনে জয়ের পর তৃতীয়বার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন খালেদা জিয়া।২০০১
অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির নেতৃত্বাধীন চারদলীয় ঐক্যজোট ২১৬টি আসন পেয়ে জয়ী হয়। বিএনপি পায় ১৯৩টি আসন। খালেদা জিয়া তৃতীয়বার প্রধানমন্ত্রী হন।
২০০৭
দুর্নীতির অভিযোগে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ৩ সেপ্টেম্বর গ্রেপ্তার হন খালেদা জিয়া। গ্রেপ্তার করা হয় তাঁর দুই সন্তানকেও। তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলেছিল বিএনপি।
২০০৮
১১ সেপ্টেম্বর হাইকোর্টের নির্দেশে মুক্তি পান খালেদা জিয়া। তত্ত্বাবধায়ক সরকার তাঁকে বিদেশে পাঠাতে চাইলেও তিনি অস্বীকৃতি জানান। ওই বছরের ২৯ ডিসেম্বর নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে চারদলীয় ঐক্যজোট অংশ নেয়। আসন পায় ৩২টি।
২০১০
১৩ নভেম্বর তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার খালেদা জিয়াকে ঢাকার সেনানিবাসের বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করে। ওই বাড়িতে তিনি ২৮ বছর ধরে বসবাস করছিলেন।
২০১৪
৫ জানুয়ারির একতরফা ও কলঙ্কিত দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জন করে খালেদা জিয়ার নেতৃত্বাধীন ১৮-দলীয় জোট।
২০১৫
২৪ জানুয়ারি ছোট ছেলে আরাফাত রহমানকে হারান খালেদা জিয়া। মালয়েশিয়ায় থাকা অবস্থায় হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় তাঁর।
২০১৮
আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে (৮ ফেব্রুয়ারি) জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়ার পাঁচ বছরের কারাদণ্ড হয় (পরে খালাস)। তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়। ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি অংশ নেয়। তবে ‘রাতের ভোট’ হিসেবে পরিচিত ওই নির্বাচনে বিএনপি পায় ৭টি আসন।
২০২০
২৫ মার্চ সরকারের নির্বাহী আদেশে খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিত করা হয়। হাসপাতাল থেকে বাসায় ফেরেন তিনি। তবে তাঁর রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ ছিল।
২০২৪
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট ক্ষমতাচ্যুত হয় আওয়ামী লীগ সরকার। ৬ আগস্ট নির্বাহী আদেশে মুক্তি দেওয়া হয় খালেদা জিয়াকে।
৭ জানুয়ারি চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়া যুক্তরাজ্যে যান, ফেরেন ৬ মে।
১৫ জানুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় খালাস পান তিনি।
২৩ নভেম্বর অসুস্থ অবস্থায় তাঁকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
২৫ ডিসেম্বর খালেদা জিয়ার বড় ছেলে ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ১৭ বছর পর যুক্তরাজ্য থেকে দেশে ফেরেন।
৩০ ডিসেম্বর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান খালেদা জিয়া। অবসান ঘটে মহিমাময় এক রাজনৈতিক জীবনের।
সূত্র: ‘বেগম খালেদা জিয়া: জীবন ও সংগ্রাম’ (মাহফুজ উল্লাহ), ‘খালেদা’ (মহিউদ্দিন আহমদ), ‘বাংলাদেশের নির্বাচনী ব্যবস্থা ও ফলাফল’ (সংকলন নেসার আমিন) এবং খালেদা জিয়ার হলফনামা, বিএনপির ওয়েবসাইট ও মিডিয়া সেল।