
বাংলাদেশে রাজনীতিতে পরমতসহিষ্ণুতার অভাব নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান।
আজ শুক্রবার এক বিতর্ক প্রতিযোগিতার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘পরমতসহিষ্ণুতা, সহমর্মিতা, অন্যের অভিমত ও অধিকারের প্রতি শ্রদ্ধাশীলতা এবং পারস্পরিক সম্মান প্রদর্শনসহ দ্বিমত থাকলে যুক্তির মাধ্যমে তা খণ্ডন করাই হলো বিতর্কের মূল্যবোধ। এটি আমাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে প্রায় অনুপস্থিত।’
ঢাকার সাভারে সিসিডিবি হোপ সেন্টারে টিআইবির আয়োজনে ‘আন্তবিশ্ববিদ্যালয় দুর্নীতিবিরোধী বিতর্ক প্রতিযোগিতা ২০২৫’-এর এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠান হয়। টিআইবির আউটরিচ অ্যান্ড কমিউনিকেশন বিভাগের পরিচালক মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলামের সঞ্চালনায় সারা দেশের ৩২টি বিতর্ক দল ও প্রতিযোগিতার বিচারকেরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
ইফতেখারুজ্জামান বলেন, বিতর্ক সততা, ন্যায়পরায়ণতা, মানবিকতা, জাতি-ধর্ম-বর্ণ ও শ্রেণি-পেশানির্বিশেষে সবাই সমান—এই বোধে উজ্জীবিত হওয়ার শিক্ষা দেয়। নিজের মতামত ও বক্তব্য উপস্থাপনের পাশাপাশি অন্যেরটা শোনার ধৈর্য ও মানসিকতা এবং যৌক্তিকভাবে নিজের মতামত তুলে ধরা বিতর্কের স্বীকৃত মূল্যবোধ। দুর্ভাগ্যবশত, দেশে সমাজ, রাষ্ট্র ও রাজনৈতিক অঙ্গনে এই মৌলিক বোধের ঘাটতি প্রকট। সুশাসন নিশ্চিত করে দেশকে এগিয়ে নিতে তরুণ প্রজন্মকে এই মূল্যবোধ ধারণ ও চর্চা অব্যাহত রাখতে হবে।
তরুণ প্রজন্মকে দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার করার জন্য সারা দেশে দুর্নীতিবিরোধী সামাজিক আন্দোলন ছড়িয়ে দেওয়ার অংশ হিসেবে টিআইবির এই আয়োজন বলে জানান ইফতেখারুজ্জামান। তিনি বলেন, ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে আমাদের রুখে দাঁড়াতে হবে। এ ক্ষেত্রে তরুণেরা আমাদের অনুপ্রেরণা।’
এ বছরের আয়োজনে প্রতিটি বিতর্ক দল ও বিচারক প্যানেলে কমপক্ষে একজন নারী সদস্যের বাধ্যতামূলক অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করা হয়েছে জানিয়ে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘নারীর প্রতি সহিংসতার অন্যতম কারণ হলো নারী-পুরুষের সমতাবোধের চর্চার ঘাটতি। এই প্রতিযোগিতায় নারীর সম–অধিকার মূল্যবোধের চর্চা বাস্তবায়নের চেষ্টা করা হয়েছে এবং বিতার্কিকেরা তা ধারণ করবেন, এই প্রত্যাশা করছি।’
টিআইবির এই আবাসিক বিতর্ক প্রতিযোগিতা ৮ নভেম্বর পর্যন্ত চলবে। তৃতীয়বারের মতো আয়োজিত এই প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন দলকে ৫০ হাজার, রানার্সআপ দলকে ৩০ হাজার ও সেরা বিতার্কিককে ১০ হাজার টাকা পুরস্কারসহ ক্রেস্ট ও সনদ দেওয়া হবে। এবারের আয়োজনের সেরা আটটি দল আগামী বছরের আয়োজনে সরাসরি অংশ নেওয়ার সুযোগ পাবে।