ভবিষ্যতে কোনো সরকার যেন জুলাই অভ্যুত্থানের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন না তুলতে পারে, সে জন্য জুলাই অভ্যুত্থানকে সাংবিধানিক স্বীকৃতি দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। তিনি বলেছেন, জুলাইয়ের ছাত্র গণ-অভ্যুত্থানকে যথাযথ মর্যাদা দিয়ে রাষ্ট্রীয় ও সাংবিধানিক স্বীকৃতি দেওয়া হবে। সংবিধানের চতুর্থ তফসিলে এর বিস্তারিত বর্ণনা থাকবে। যে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়েছে, তারও সাংবিধানিক বৈধতা সেখানে অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
আজ মঙ্গলবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি মিলনায়তনে ‘অভ্যুত্থানের বাঁক বদলের দিন’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন। আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন সালাহউদ্দিন আহমদ। জুলাই অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে আলোচনা সভাটির আয়োজন করে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল।
আলোচনা সভায় সালাইউদ্দিন আহমদ বলেন, জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে বিএনপির এই ভাষ্য তাঁরা গত ফেব্রুয়ারি মাসেই জমা দিয়েছেন। সাম্প্রতিক সময়ে সেটির পরিমার্জিত একটি সংস্করণও তিনি জমা দিয়েছেন বলে জানান। তাই এ বিষয়ে কোনো বিভ্রান্তি যেন না থাকে।
সভায় আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকার এবং তার দোসরদের বিচার দাবি করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য। তিনি বলেন, আওয়ামী ফ্যাসিবাদের বিষয়ে সকলকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। রাজনৈতিক দল হিসেবে আওয়ামী লীগের বিচার করতে হবে। ফ্যাসিস্ট হাসিনার মন্ত্রী, এমপি, এবং দোসর যারা মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত, তাদের প্রত্যেককে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানান তিনি।
তবে যারা মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত নয়, ন্যাশনাল রিকনসিলিয়েশন গঠন করে তাদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে উল্লেখ করে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, যদি হাজার, হাজার, লাখ, লাখ বিচার করতে হয়, তাহলে জাতিকে সব সময় প্রতিশোধ ও বিভক্তির মধ্যে থাকতে হবে। তাই ন্যাশনাল রিকনসিলিয়েশনের মাধ্যমে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
এ সময় বিভিন্ন স্লোগানের মাধ্যমে যারা গণতান্ত্রিক শক্তিগুলোর মধ্যে ফাটল ধরানোর চেষ্টা করছে, তারা ফ্যসিবাদের আগমনকে স্বাগতম জানায় বলেও মন্তব্য করেন সালাহউদ্দিন আহমদ। ফ্যাসিবাদবিরোধী ঐক্য অটুট রাখার প্রত্যাশা ব্যক্ত করে তিনি বলেন, তিনি বিশ্বাস করেন এই ঐক্যই জাতিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।
ছাত্রদল সভাপতি রাকিবুল ইসলাম অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএনপির ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম। আলোচনাসভায় ছাত্র ইউনিয়ন, বিল্পবী ছাত্র মৈত্রী, বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ, খেলাফত ছাত্র মজলিস, ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ, ছাত্র জমিয়ত বাংলাদেশ, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট, ছাত্র ফেডারেশন, গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিল, ছাত্র আন্দোলন এনডিএম, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদসহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিয়াশীল বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতারা বক্তব্য দেন। বক্তব্যে তাঁরা বলেন, জুলাইয়ের ঐক্যকে নষ্ট করার অপচেষ্টা করা হচ্ছে। একটি বিশেষ রাজনৈতিক দল জুলাইয়ের অর্জনকে ছিনিয়ে নিতে চাইছে। এ সময় একাত্তর এবং চব্বিশের গণহত্যাকারীদের বিচার দাবি করেন বক্তারা।
আলোচনা সভাটি সঞ্চালনা করেন ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন।