
জাতীয় পার্টির (জাপা) মহাসচিব মো. মুজিবুল হক (চুন্নু) বলেছেন, জাতীয় পার্টি (জাপা) চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদেরের (জি এম কাদের) নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ আছে।
দলের লাখ লাখ সমর্থক জি এম কাদেরের ওপর আস্থা রাখেন। কিছু নেতা চলে গেলেও জাতীয় পার্টির ক্ষতি হবে না। শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে বহিষ্কৃত কেউ মামলা করলে জাতীয় পার্টির কোনো সমস্যা হবে না।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে জাপার চেয়ারম্যানের বনানীর কার্যালয়ে ‘সংবিধান সংরক্ষণ দিবস’ উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় মো. মুজিবুল হক এ কথা বলেন।
জাপার মহাসচিব বলেন, ‘জাতীয় পার্টি আদালতের ওপর আস্থাশীল। আমরা আশা করছি, উচ্চ আদালতে আমরা ন্যায়বিচার পাব। বহিষ্কৃতদের মধ্যে যাঁরা ক্ষমাযোগ্য অপরাধ করেছেন, তাঁরা ক্ষমা চাইলে পার্টি চেয়ারম্যান বিবেচনা করবেন। কিন্তু যাঁরা ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ করেছেন, তাঁদের ক্ষমা করার প্রশ্নই আসে না।’
১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর সাবেক স্বৈরশাসক এইচ এম এরশাদের রাষ্ট্রপতির পদ থেকে পদত্যাগের দিনটিকে জাপা ‘সংবিধান সংরক্ষণ দিবস’ হিসেবে পালন করে।
সভাপতির বক্তব্যে জাপার মহাসচিব আওয়ামী লীগ ও বিএনপির সমালোচনা করেন।
তিনি বলেন, গণতন্ত্রের প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই ১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর শান্তিপূর্ণ উপায়ে রাষ্ট্রক্ষমতা হস্তান্তর করেন হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। তাঁর জনপ্রিয়তায় ভীত হয়ে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকারব্যবস্থার পরিবর্তে সংসদীয় সরকারব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত করেছে। কিন্তু সংসদীয় গণতন্ত্রের নামে দল দুটি দেশে স্বৈরতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছে। সংসদীয় গণতন্ত্রের নামে এক ব্যক্তির হাতে সব ক্ষমতা কুক্ষিগত করা হয়েছে।
জাপার মহাসচিব মো. মুজিবুল হক বলেন, আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে অনেক বিষয়ে অমিল আছে। এ কারণে তারা এক টেবিলে বসতে পারে না। কিন্তু ক্ষমতায় গেলে তাদের মধ্যে চরিত্রগত কোনো অমিল নেই। ক্ষমতায় গিয়ে দল দুটি দুর্নীতি, দুঃশাসন আর দলীয়করণের মাধ্যমে দেশের শান্তি শেষ করে দিয়েছে।
নির্বাচন প্রসঙ্গে মুজিবুল হক বলেন, আওয়ামী লীগ ও বিএনপি প্রমাণ করেছে তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতিতে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। শুধু আনুপাতিক হারে নির্বাচন হলেই সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব হবে। আনুপাতিক হারে নির্বাচনে শুধু প্রতীক থাকবে, কোনো প্রার্থী থাকবে না। তাই নির্বাচনে সন্ত্রাস ও নৈরাজ্য হওয়ার সুযোগ থাকে না। জাতীয় পার্টি রাষ্ট্রক্ষমতায় গেলে দেশে আনুপাতিক হারে নির্বাচনপদ্ধতি প্রতিষ্ঠা করবে। বর্তমান পদ্ধতির কারণে ফেরেশতা নিয়োগ করলেও নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না।
সভায় আরও বক্তব্য দেন দলের কো-চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু হোসেন, প্রেসিডিয়াম সদস্য সুনীল শুভ রায়, সাইফুদ্দিন আহমেদ, শফিকুল ইসলাম, রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, সৈয়দ দিদার বখত প্রমুখ।