মাহমুদুর রহমান মান্না
মাহমুদুর রহমান মান্না

খেলাপি ঋণ: মান্নার প্রার্থী হতে বাধা হয়ে এল হাইকোর্টের আদেশ

বিএনপি যেদিন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্নাকে বগুড়ার একটি আসন ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত জানাল, সেদিনই আসন্ন নির্বাচনে তাঁর প্রার্থী হতে বাধা হয়ে এল হাইকোর্টের এক আদেশ।

ব্যাংকে ঋণখেলাপির তালিকা (ক্রেডিট ইনফরমেশন ব্যুরো বা সিআইবি) থেকে নিজের নাম কাটাতে হাইকোর্টে একটি রিট আবেদন করেছিলেন মান্না। তবে আজ বুধবার বিচারপতি মো. বজলুর রহমান ও বিচারপতি মো. মনজুর আলমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ তা সরাসরি খারিজ করে দেন।

মাহমুদুর রহমান মান্না আফাকু কোল্ড স্টোরেজ লিমিটেডের অংশীদার। এই কোল্ড স্টোরেজের নামে ঋণ ঘিরে সিআইবি প্রতিবেদনে নাম অন্তর্ভুক্তির বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে তিনি রিট আবেদনটি করেছিলেন। কারণ, ঋণখেলাপি হলে নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার সুযোগ থাকে না।

আদালতে মাহমুদুর রহমানের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আহসানুল করিম ও আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া। রাষ্ট্রপক্ষে অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল অনীক আর হক ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মুহাম্মদ শফিকুর রহমান শুনানিতে ছিলেন।

জ্যোতির্ময় বড়ুয়া প্রথম আলোকে বলেন, আফাকু কোল্ড স্টোরেজ লিমিটেডের ৫০ শতাংশ শেয়ার মাহমুদুর রহমান মান্নার। এই কোল্ড স্টোরেজের নামে ইসলামী ব্যাংক বগুড়া শাখা থেকে ঋণ নেওয়া হয়েছিল। এখন ইসলামী ব্যাংকের ৩৬ কোটি টাকার বেশি পাওনা। মাহমুদুর রহমানের আবেদনে বাংলাদেশ ব্যাংক ঋণ পুনঃ তফসিল করতে ইসলামী ব্যাংককে চিঠি দেয়, ঋণ পুনঃ তফসিল করে ইসলামী ব্যাংক। ১ কোটি ২৬ লাখ টাকার বেশি ইতিমধ্যে তিনি জমা দিয়েছেন। তবে ঋণখেলাপির তালিকা থেকে নাম বাদ না দেওয়ায় রিট আবেদনটি করেন তিনি।

হাইকোর্ট আবেদন খারিজ করে দেওয়ায় ঋণখেলাপির তালিকায় মান্নার নাম থেকে গেলে আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠেয় ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনে তাঁর প্রার্থী হওয়ার সুযোগ থাকবে না।

ডাকসুর দুবারের ভিপি, আওয়ামী লীগের একসময়ের নেতা মাহমুদুর রহমান বগুড়া–২ (শিবগঞ্জ) আসনে প্রার্থী হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এর আগে একাধিকবার তিনি প্রার্থী হলেও কখনো সংসদে যাওয়া হয়নি তাঁর।

এবার বিএনপির সমর্থন পেয়েছেন তিনি। মিত্রদলের নেতা হিসেবে বগুড়া–২ আসনটি তাঁকে ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত আজই সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছিলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

এ অবস্থায় হাইকোর্টের আদেশ মাহমুদুর রহমান মান্নার নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ক্ষেত্রে বাধা হয়ে এলেও তিনি এখনই হাল ছাড়ছেন না।

আইনজীবী জ্যোর্তিময় বড়ুয়া বলেন, হাইকোর্টের দেওয়া আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করা হবে। ওই আবেদন নিষ্পত্তির মধ্য দিয়ে মাহমুদুর রহমান মান্না নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন কি না, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানা যেতে পারে।