
দেশের সব গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক শক্তি মাঠে নেমেছে। যত কষ্টই হোক, আন্দোলন–সংগ্রামে এগিয়ে যেতে হবে, মাঠে থাকতে হবে। আজ শনিবার সকালে রাজধানীর বিজয়নগর পানির ট্যাংক মোড়ে পদযাত্রার আগে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে এসব কথা বলেন ১২–দলীয় জোটের নেতারা। গ্যাস–বিদ্যুৎ–চাল–ডালসহ নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার এবং ফ্যাসিস্ট সরকারের পদত্যাগসহ ১০ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে পদযাত্রা ও সংক্ষিপ্ত সমাবেশের আয়োজন করে এই জোট।
সংক্ষিপ্ত সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে জাতীয় পার্টির (জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার বলেন, দেশের মানুষ অতীতে কখনোই স্বৈরশাসনকে মেনে নেয়নি। গণতন্ত্র হরণ করে, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দকে জেলে পুরে, আলেম-ওলামাদের কারাবন্দি করে সরকার পার পাবে না। তারা আগামী নির্বাচনকে উতরিয়ে নিয়ে যেতে পারবে না। রাজনৈতিক সচেতন প্রতিটি মানুষ ঐক্যবদ্ধ হচ্ছে। বিএনপিসহ দেশের সব গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক শক্তি যুগপৎ আন্দোলনে মানুষকে নিয়ে মাঠে নেমেছে। যত কষ্টই হোক, এই জয়যাত্রা অব্যাহত থাকবে।
২৫ ফেব্রুয়ারি দেশের প্রতিটি জেলা সদরে এই পদযাত্রার কর্মসূচি পালন করার কথাও জানান মোস্তফা জামাল হায়দার।
দেশে নির্বাচন সর্বজন গ্রহণযোগ্য হতে হবে মন্তব্য করে লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘সরকারের দুশাসনের বিরুদ্ধে ১২–দলীয় জোট, বিএনপি, জামায়াতে ইসলামীসহ সব গণতন্ত্রকামী জনতা রাজপথে নেমেছে। দেশের মানুষ ভোট দিতে চায়। আমরা দিনের বেলায় ভোট দেব। পছন্দের প্রার্থীকে বেছে নেব। আমাদের নিয়মতান্ত্রিক সংগ্রাম চলবে।’
সম্প্রতি ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিনয় খাতরা বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রতি তাঁর দেশের পূর্ণ সমর্থন রয়েছে। তাঁর এ বক্তব্যের নিন্দা জানিয়ে বাংলাদেশ এলডিপির মহাসচিব শাহাদাত হোসেন বলেন, ভারত যতই শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রতি আস্থা জ্ঞাপন করুক, তাঁর পায়ের নিচে মাটি নেই। সুষ্ঠু নির্বাচন হলে ৩০০ আসনেই এই সরকার পরাজিত হবে। আন্দোলনের মাধ্যমে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করা হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
বাংলাদেশ ইসলামিক পার্টির মহাসচিব আবুল কাশেম বলেন, দেশ আজ গভীর সংকটে। মানুষের ভোটের অধিকার নেই। দ্রব্যমূল্যের লাগাম টানতে পারছে না সরকার। দেশের মানুষ কোনো দিক দিয়েই শান্তিতে নেই। এই সরকারকে যত তাড়াতাড়ি বিদায় করা যায়, ততই মঙ্গল।
আন্দোলন–সংগ্রামে এগিয়ে যেতে হবে এবং মাঠে থাকতে হবে বলে মন্তব৵ করেন ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) মহাসচিব আবদুল্লাহ আল হারুন।
সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন ন্যাপ ভাসানী চেয়ারম্যান মো. আজহারুল ইসলাম, জাগপার সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির অতিরিক্ত মহাসচিব নুরুল কবির, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের সাংগঠিক সম্পাদক জাকির হোসেন প্রমুখ।
এই সংক্ষিপ্ত সমাবেশ শেষে পদযাত্রা শুরু করে ১২–দলীয় জোট। পদযাত্রা বিজয়নগর পানির ট্যাংক মোড় থেকে পুরানা পল্টন মোড়ে যায়। সেখান থেকে বাংলাদেশ হাউস বিল্ডিং করপোরেশনের গলি হয়ে আবার বিজয়নগর পানির ট্যাংক মোড়ে গিয়ে দুপুর ১২টার দিকে পদযাত্রা শেষ হয়।
পদযাত্রার সময় ১২–দলীয় জোটের নেতা–কর্মীরা বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দেন। স্লোগানের মধ্যে রয়েছে ‘১২–দলীয় ঐক্যজোট, জিন্দাবাদ জিন্দাবাদ/ এই মুহূর্তে দরকার, তত্ত্বাবধায়ক সরকার/ এক দফা এক দাবি, শেখ হাসিনা কবে যাবি/ গণতন্ত্রের শত্রুরা, হুঁশিয়ার সাবধান/ ইসলামের শত্রুরা, হুঁশিয়ার সাবধান/ আওয়ামী লীগের গুন্ডারা, হুঁশিয়ার সাবধান/ ভাত দে কাপড় দে, নইলে গদি ছাইড়া দে প্রভৃতি।’