
অন্তর্বর্তী সরকারের ‘আস্থাভাজন’ তিনটি রাজনৈতিক দলকে জুলাই সনদ বাস্তবায়নে সহযোগিতার আহ্বান জানিয়েছেন আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু। তিনি বলেছেন, এই তিন দলের ‘ইগো (অহংবোধ)’ ঐকমত্যের পথে অন্তরায় সৃষ্টি করছে।
শুক্রবার জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫ স্বাক্ষর অনুষ্ঠান শেষে দেওয়া প্রতিক্রিয়ায় এবি পার্টির চেয়ারম্যান এসব কথা বলেন। চেয়ারম্যানের পাশাপাশি দলটির সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান ফুয়াদও সনদে স্বাক্ষর করেন।
এর আগে বিকেল পাঁচটায় জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫-এ স্বাক্ষর করেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজসহ কমিশনের সদস্যরাও জুলাই সনদে স্বাক্ষর করেছেন।
এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান বলেন, বিএনপি সবচেয়ে বড় দল, তারা দীর্ঘদিন ক্ষমতায় ছিল এবং লম্বা সময় ধরে নির্যাতন–নিপীড়ন সয়ে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করেছে, তাদের মতো অভিজ্ঞ দল দ্বিতীয়টি নেই; এটা তাদের ইগো। জামায়াত সবচেয়ে সুসংগঠিত দল, চরম দমন–নিপীড়ন সয়েও তারা হাল ছাড়েনি, এই মুহূর্তে তাদের জনপ্রিয়তা ও গ্রহণযোগ্যতা ঊর্ধ্বমুখী; এটা হলো জামায়াতের ইগো।
তরুণদের নতুন রাজনৈতিক দল প্রসঙ্গে তিনি বলেন, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যাঁরা নেতৃত্ব দিচ্ছেন, তাঁরা ছিলেন জুলাই অভ্যুত্থানের শীর্ষ হিরো। তাঁদের আহ্বান ও নেতৃত্বে ফ্যাসিবাদের চূড়ান্ত পতন হয়েছে— দুর্ভাগ্যজনকভাবে এটাও তাদের মধ্যে ইগোর জন্ম দিয়েছে।
অন্তর্বর্তী সরকার এই তিন দলকে নানা সময়ে বড় দল, সরকারের অংশ বা খুব গুরুত্বপূর্ণ দল আকারে মর্যাদা দিয়েছে বলে মন্তব্য করেন মজিবুর রহমান। তিনি বলেন, এখন দেখছি এই তিন দলের ইগো ঐকমত্যের পথে অন্তরায় সৃষ্টি করছে। ইগো পরিহার করে অন্তর্বর্তী সরকারের আস্থাভাজন সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক দলগুলোকে জুলাই সনদ বাস্তবায়নে সহযোগিতার আহ্বান জানান এবি পার্টির চেয়ারম্যান।
এর আগে জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে উপস্থিত হন ২৫টি রাজনৈতিক দলের নেতারা। এর মধ্যে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, নাগরিক ঐক্য, গণসংহতি আন্দোলন, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি), খেলাফত মজলিস, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন, আমার বাংলাদেশ পাটি (এবি পার্টি), জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন (এনডিএম), বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডি, গণ অধিকার পরিষদ (জিওপি), বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি-জাগপা, বাংলাদেশ এলডিপি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, গণফোরাম, জাকের পার্টি, জাতীয় গণফ্রন্ট, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টি, বাংলাদেশ লেবার পার্টি, ভাসানী জনশক্তি পার্টি, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ, ইসলামী ঐক্যজোট এবং আমজনতার দলের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
তবে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) জুলাই সনদে স্বাক্ষর করেনি। এ ছাড়া বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ), বাসদ (মার্ক্সবাদী) ও বাংলাদেশ জাসদও সনদে স্বাক্ষর করেনি।