প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য দেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি। সোমবার, জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে
প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য দেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি। সোমবার, জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে

প্রথম আলো-ডেইলি স্টারে হামলা

সরকারের এই রহস্যজনক নীরবতার অর্থ কী, প্রশ্ন জোনায়েদ সাকির

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘কারা রাতের বেলায় হামলা করে পত্রিকা অফিসে আগুন লাগিয়ে দিচ্ছে। পুড়িয়ে দিচ্ছে। আমরা দেখলাম, সরকার এ ক্ষেত্রে রহস্যজনকভাবে নীরব। সরকারের এই রহস্যজনক নীরবতার অর্থ কী?’

প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারের কার্যালয়ে হামলার সময় সেখানে কর্মরত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন এই রাজনীতিবিদ। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সেখানে কী করছিল? সরকারের কোন কোন উপদেষ্টা ওখানে গিয়েছেন, সেই জবাবদিহি সরকারকে করতে হবে।’

আজ সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত এক প্রতিবাদ সমাবেশে প্রথম আলো-ডেইলি স্টারের কার্যালয়ে হামলা প্রসঙ্গে এ কথা বলেন জোনায়েদ সাকি। শহীদ ওসমান হাদি হত্যার ন্যায়বিচার নিশ্চিত, গণমাধ্যমে হামলা, দেশজুড়ে নৈরাজ্য, শ্রমিক দীপু চন্দ্র দাস হত্যা ও শিশু আয়েশা আক্তার হত্যার বিচারের দাবিতে এ প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করে গণসংহতি আন্দোলন।

সমাবেশে জোনায়েদ সাকি আরও বলেন, যারা প্রথম আলো আর ডেইলি স্টারের কার্যালয়ে হামলা করেছে, তারা নিজেরাই নতুন ফ্যাসিবাদী শক্তি হয়ে উঠতে চায়।

অন্তর্বর্তী সরকার ‘নতুন ভয়ের রাজত্ব’ কায়েমে পৃষ্ঠপোষকতা দিচ্ছে কি না, প্রশ্ন রেখে জোনায়েদ সাকি বলেন, পতিত ফ্যাসিস্টরা যে ভয়ের রাজত্ব কায়েম করেছিল, আজকে তার বিপরীতে আরেক দল নতুন ভয়ের রাজত্ব কায়েম করতে চায়। এক ফ্যাসিবাদের পাল্টা আরেক ফ্যাসিবাদের জন্ম কিংবা উত্থানে কে সহায়তা করছে, এই প্রশ্ন বাংলাদেশের মানুষকে করতে হবে।

অতীতে দেশের মানুষ কোনো ফ্যাসিবাদী শক্তিকে ঠাঁই দেয়নি উল্লেখ করে জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ আওয়ামী লীগের জাতিবাদী ফ্যাসিবাদ গ্রহণ করেনি। কোনো একটা শক্তি যদি আজকে ধর্মবাদী ফ্যাসিবাদ কায়েম করতে চায়, সেটাও মানুষ গ্রহণ করবে না।’

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বানচালের চেষ্টা হচ্ছে দাবি করে জোনায়েদ সাকি বলেন, জনগণের ঐক্যবদ্ধ হওয়া দরকার। যারা নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করবে, তাদের প্রতিহত করতে হবে। তিনি ময়মনসিংহে দীপু চন্দ্র দাস আর লক্ষ্মীপুরে শিশু আয়েশা আক্তার হত্যায় যারা সহযোগিতা করেছে, যারা হত্যায় অংশ নিয়েছে, তাদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবি জানান।

প্রতিবাদ সমাবেশ শেষে বিক্ষোভ মিছিল করেন দলটির নেতা-কর্মীরা। মিছিলটি প্রেসক্লাব থেকে পল্টন মোড়ে গিয়ে আবারও প্রেসক্লাবের সামনে এসে শেষ হয়। সমাবেশে দেওয়া বক্তব্যে গণসংহতি আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান আশা প্রকাশ করেন, দেশের মানুষ সাম্প্রতিক সময়ে ঘটা বিভিন্ন মব ও সন্ত্রাসী কাজকে প্রতিহত করবে।

এ সময় আরও বক্তব্য দেন গণসংহতি আন্দোলনের নেতা দীপক রায়, বাচ্চু ভুঁইয়া, তাসলিমা আক্তার প্রমুখ।