প্রতিবাদ সমাবেশে নিজেরাই চেয়ার নিয়ে মারামারিতে জড়িয়ে পড়েন চট্টগ্রাম নগর বিএনপির কর্মীরা। নাসিমন ভবন, কাজির দেউরি, চট্টগ্রাম নগর, ১৮ সেপ্টেম্বর
প্রতিবাদ সমাবেশে নিজেরাই চেয়ার নিয়ে মারামারিতে জড়িয়ে পড়েন চট্টগ্রাম নগর বিএনপির কর্মীরা। নাসিমন ভবন, কাজির দেউরি, চট্টগ্রাম নগর, ১৮ সেপ্টেম্বর

প্রতিবাদ সমাবেশে নিজেরাই মারামারি করল চট্টগ্রাম নগর বিএনপি

বিএনপির কর্মসূচিতে পুলিশ ও আওয়ামী লীগের হামলার প্রতিবাদে ডাকা সমাবেশে নিজেরাই চেয়ার মারামারিতে জড়িয়ে পড়েছে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির কর্মীরা। এতে আহত হন চারজন। গতকাল রোববার বিকেলে নগরের নাসিমন ভবনে দলীয় কার্যালয়ের সামনে এই ঘটনা ঘটে।

মূলত নগর বিএনপির জ্যেষ্ঠ কয়েকজন নেতাকে মঞ্চে না ডাকার জেরে এই ঘটনার সূত্রপাত হয়। আহত ব্যক্তিরা হলেন নগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক সৈয়দ আজম, নগর স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা সালাউদ্দিন, মো. রিপন ও মো. সায়মন। কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে ঢাকায় বিএনপির সমাবেশে পুলিশ ও আওয়ামী লীগের হামলার প্রতিবাদে ওই সমাবেশ ডাকা হয়েছিল।

প্রতিবাদ সমাবেশে নিজেরাই চেয়ার নিয়ে মারামারিতে জড়িয়ে পড়েন চট্টগ্রাম নগর বিএনপির কর্মীরা। নাসিমন ভবন, কাজির দেউরি, চট্টগ্রাম নগর, ১৮ সেপ্টেম্বর

প্রত্যক্ষদর্শী ও দলীয় সূত্রে জানা গেছে, নগর বিএনপির সদস্য কামরুল ইসলামের পরিচালনায় নাসিমন ভবনে দলীয় কার্যালয়ের সামনে ওই প্রতিবাদ সমাবেশ শুরু হয়। নগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক নাজিমুর রহমান, আবদুস সাত্তার, সৈয়দ আজম, কাজী বেলালসহ জ্যেষ্ঠ নেতাদের বেশ কয়েকজন মঞ্চের সামনে সাধারণ কর্মীদের চেয়ারে বসেন। আর মঞ্চে বসা ছিলেন তাঁদের চেয়ে কনিষ্ঠ নেতারা। তবে সমাবেশ শুরু পর দলের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা মঞ্চ থেকে কনিষ্ঠ নেতাদের সরাননি। পাশাপাশি জ্যেষ্ঠ নেতাদের ডেকে মঞ্চে তোলেননি। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে মঞ্চের সামনে বসা জ্যেষ্ঠ নেতারা সিদ্ধান্ত নেন নাম ঘোষণা হলেও তাঁরা মঞ্চে গিয়ে বক্তব্য দেবেন না।

পরে নগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক নাজিমুর রহমান, কাজী বেলাল, সৈয়দ আজমসহ কয়েকজনের নাম ঘোষণা করা হলেও তাঁরা কেউ বক্তব্য দিতে মঞ্চে ওঠেননি। যুগ্ম আহ্বায়ক আবদুর সাত্তারের নাম ঘোষণা করা হলে তিনিও মঞ্চে উঠতে রাজি হননি। একপর্যায়ে নগর বিএনপির সদস্যসচিব আবুল হাশেম বক্তব্য দেওয়ার জন্য আবদুস সাত্তারকে জোর অনুরোধ করেন। তাঁর সামনে মাউথ স্পিকার নিয়ে আসেন। তখনই যুগ্ম আহ্বায়ক নাজিমুর রহমান এর প্রতিবাদ করেন। একপর্যায়ে মঞ্চে বসতে না পারা জ্যেষ্ঠ নেতা ও অন্য নেতাদের অনুসারীদের মধ্যে চেয়ার নিয়ে মারামারি শুরু হয়। তিন থেকে চার মিনিট মারামারির পর পরিস্থিতি শান্ত হয়। পরে আবার সমাবেশ শুরু হয়।

জানতে চাইলে নগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আবদুস সাত্তার প্রথম আলোকে বলেন, ‘সাধারণ কর্মীর আসনে আমাদের বসিয়ে রাখা হয়েছিল। বিষয়টি বলতে চেয়েছিলাম। বক্তব্য দেওয়ার প্রশ্নই উঠে না।’

যুগ্ম আহ্বায়ক নাজিমুর রহমান বলেন, ‘সাংগঠনিক দুর্বলতার কারণে দলের মধ্যে শৃঙ্খলা রাখতে পারছেন না নেতারা। দলের আহ্বায়ক, সদস্যসচিবসহ দায়িত্বপ্রাপ্তরা জ্যেষ্ঠ নেতাদের মঞ্চে না বসিয়ে সাধারণ কর্মীর চেয়ারে বসিয়ে রাখে। তাই বক্তব্য না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম।’

নগর বিএনপির সদস্যসচিব আবুল হাশেম বলেন, সামান্য ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। পরে প্রতিবাদ সমাবেশ চলে। বারবার অনুরোধ করার পরও তাঁরা মঞ্চে আসেননি, বক্তব্যও দেননি।