জুলাই জাতীয় সনদে স্বাক্ষর করেছে ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন দল গণফোরাম। আজ শনিবার জাতীয় সংসদের এলডি হলে বেলা পৌনে একটার দিকে
জুলাই জাতীয় সনদে স্বাক্ষর করেছে ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন দল গণফোরাম। আজ শনিবার জাতীয় সংসদের এলডি হলে বেলা পৌনে একটার দিকে

জুলাই সনদে স্বাক্ষর করল গণফোরাম, অন্যদেরও সই করার আহ্বান কমিশনের

জুলাই জাতীয় সনদে স্বাক্ষর করেছে ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন দল গণফোরাম। আজ শনিবার জাতীয় সংসদের এলডি হলে বেলা পৌনে একটার দিকে সনদে স্বাক্ষর করে দলটি।

সনদে প্রথমে স্বাক্ষর করেন গণফোরামের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সুব্রত চৌধুরী। এরপর স্বাক্ষর করেন দলটির সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান।

এ নিয়ে ২৫টি রাজনৈতিক দল ও জোট জুলাই সনদে সই করলো। যাঁরা বাকি আছেন, তাঁদের জুলাই সনদে স্বাক্ষর করার আহ্বান জানান জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ।

জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ), বাসদ (মার্ক্সবাদী) ও বাংলাদেশ জাসদের নেতারা যাননি এবং স্বাক্ষর করেননি।

১৭ অক্টোবর জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে যোগদান করে গণফোরাম। তবে সনদে স্বাক্ষর করেনি দলটি।

তখন গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক জানিয়েছিলেন, সংবিধানের ১৫০-এর ২ অনুচ্ছেদ সংশোধন করে এবং সংবিধানের পঞ্চম, ষষ্ঠ ও সপ্তম তফসিলে বাদ রাখার বিষয়টি স্পষ্ট করার চূড়ান্ত কপি না পাওয়ায় তাঁরা স্বাক্ষর করেননি। চূড়ান্ত কপি পাওয়ায় তাঁরা আজ স্বাক্ষর করলেন।

জুলাই জাতীয় সনদে স্বাক্ষরের আগে গণফোরামের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সুব্রত চৌধুরী বলেন, ‘আমরা বলেছিলাম সংবিধানের ১৫০-এর ২ অনুচ্ছেদ সংশোধন করে এবং প্রক্লেমেশন অব ইনডিপেনডেন্টস যাতে রাখে। এটা না থাকলে আমাদের বাংলাদেশের অস্তিত্ব এবং মুক্তিযুদ্ধ প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে যাবে। আমরা আজ আনন্দিত যে ঐকমত্য কমিশন বলেছে, তারা ১৫০-এর ২ অনুচ্ছেদ পুরোপুরি বাতিল না করে ৭ তফসিল বহাল রাখবে। এ জন্য আমরা স্বাক্ষর করব।’

গণফোরামের ইমেরিটাস সভাপতি ড. কামাল হোসেনের পক্ষ থেকে কথা বলেন দলটির সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান। তিনি বলেন, গণফোরাম ঐকমত্য কমিশনকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করার চেষ্টা করেছে। সংবিধানের ১৫০-এর ২ অনুচ্ছেদের ৭ তফসিল বহাল রাখায় কমিশনকে ধন্যবাদ জানানো হয়।

বাকিদের স্বাক্ষর করার আহ্বান কমিশনের 

যাঁরা বাকি আছেন, তাঁদের জুলাই সনদে স্বাক্ষর করার আহ্বান জানান জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ–সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ। তিনি বলেন, ‘যাঁরা স্বাক্ষর করেননি, তাঁরা যেন স্বাক্ষর করেন। কারণ তাঁরা এ সনদের বড় অংশীদার।’

যে ৩০টি রাজনৈতিক দল এই প্রক্রিয়ায় ছিল, তাঁরা এই দলিলের সবচেয়ে বড় অংশীদার বলে মন্তব্য করেন আলী রীয়াজ। তাঁদের আলাপ–আলোচনা, পরামর্শ, প্রস্তাবগুলোকে সংশোধন, সংযোজন, বিয়োজন, পরিবর্ধন, পরিমার্জনের মধ্য দিয়েই এই দলিল তৈরি হয়েছে বলেন তিনি।

জুলাই সনদ সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টার রাজনৈতিক অঙ্গীকারপত্র বলে উল্লেখ করেন আলী রীয়াজ।

জুলাই সনদে স্বাক্ষর করার জন্য গণফোরামকে ধন্যবাদ জানান জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ–সভাপতি। তিনি বলেন, গোটা প্রক্রিয়ার সঙ্গে গণফোরাম যুক্ত ছিল। সবাইকে সনদে স্বাক্ষর করতে আহ্বান জানায় কমিশন।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজের সভাপতিত্বে এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন, কমিশনের সদস্য সফর রাজ হোসেন, ড. বদিউল আলম মজুমদার, ড. ইফতেখারুজ্জামান। সঞ্চালনা করেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (জাতীয় ঐকমত্য) মনির হায়দার।