তারেক রহমানের গণসংবর্ধনার জন্য পূর্বাচলের ৩০০ ফুট এলাকায় বাঁশ ও কাঠ দিয়ে তৈরি হচ্ছে ৪৮ ফুট বাই ৩৬ ফুটের বিশাল মঞ্চ। আজ বুধবার দুপুরে
তারেক রহমানের গণসংবর্ধনার জন্য পূর্বাচলের ৩০০ ফুট এলাকায় বাঁশ ও কাঠ দিয়ে তৈরি হচ্ছে ৪৮ ফুট বাই ৩৬ ফুটের বিশাল মঞ্চ। আজ বুধবার দুপুরে

তারেক রহমানের গণসংবর্ধনায় প্রস্তুত হচ্ছে মঞ্চ, বাড়ছে নেতা–কর্মীদের ভিড়

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেশে ফেরা উপলক্ষে গণসংবর্ধনার আয়োজন করছে দলটি। রাজধানীর পূর্বাচলের ৩০০ ফুট এলাকায় এ আয়োজনের প্রস্তুতি হিসেবে মঞ্চ তৈরির কার্যক্রম চলছে।

প্রায় দেড় যুগ পর আগামীকাল বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) দুপুরে লন্ডন থেকে দেশে ফিরছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

আজ বুধবার সকালে মঞ্চ এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, কুড়িল থেকে সংবর্ধনা মঞ্চের পরবর্তী অংশ পর্যন্ত রাস্তার দুই পাশে তারেক রহমানকে বাংলাদেশে স্বাগত জানিয়ে বিভিন্ন রঙের ব্যানার ও ফেস্টুন লাগানো হয়েছে। আর কুড়িল মোড় থেকে বেশ খানিকটা দূরে সড়কের উত্তর অংশে দক্ষিণমুখী করে বাঁশ ও কাঠ দিয়ে তৈরি হচ্ছে ৪৮ ফুট বাই ৩৬ ফুটের বিশাল মঞ্চ। ইতিমধ্যে মঞ্চের মূল কাঠামোর কাজ শেষ হয়েছে। এখন শুধু সাজানোর কাজ বাকি। মঞ্চের দুই পাশে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তাঁবু স্থাপন করা হয়েছে। রাস্তার ল্যাম্পপোস্টে লাগানো হয়েছে মাইক।

তারেক রহমানের সংবর্ধনা অনুষ্ঠােনে যোগ দিতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসছেন বিএনপি সমর্থকেরা

জানা গেছে, আগামীকাল বেলা ১১টা ৫৫ মিনিটে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তারেক রহমানকে বহনকারী উড়োজাহাজটির অবতরণের কথা আছে। দেশে ফেরার পর তাঁকে বিমানবন্দর থেকে স্বাগত জানাবেন দলের নেতা–কর্মীরা। এরপর দলের পক্ষ থেকে তারেক রহমানকে ৩০০ ফুট এলাকায় সংবর্ধনা দেওয়া হবে। সেখান থেকে তাঁর মা রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে দেখতে যাবেন। এরপর তাঁর গুলশানের বাসভবনে ফেরার কথা আছে।

এদিকে তারেক রহমানের আগমন উপলক্ষে ইতিমধ্যে বিভিন্ন জেলা থেকে নেতা–কর্মীরা ঢাকায় আসতে শুরু করেছেন। দলীয় কর্মসূচিতে অংশ নিতে তাঁরা নিজ উদ্যোগে বাস, ট্রাক ও মাইক্রোবাস ভাড়া করে হাতে বাংলাদেশ ও বিএনপির দলীয় পতাকা নিয়ে আসছেন।

ঢাকার কুড়িলের পাশের ৩০০ ফুট সড়ক এখন বিএনপি সমর্থকে মুখর

সরেজমিনে কুড়িল–সংলগ্ন সংবর্ধনা মঞ্চের সামনে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা বিপুলসংখ্যক নেতা–কর্মীর উপস্থিতি দেখা গেছে। তাঁরা খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে সমাবেশ এলাকায় আসছেন। তাঁদের কেউ কেউ মঞ্চের সামনে দাঁড়িয়ে ফেসবুক লাইভ করছেন, আবার কেউবা ‘মা–মাটি ডাকছে, তারেক রহমান আসছে’, ‘বীরের বেশে তারেক রহমান, আসবে এবার বাংলাদেশে’—এমন নানা স্লোগান দিয়ে এলাকা মুখর করে তুলছেন। সেখানে দায়িত্ব পালন করতে দেখা গেছে পুলিশ সদস্যদের। এ ছাড়া সেখানে বিএনপির চেয়ারপারসন সিকিউরিটি ফোর্সের (সিএসএফ) সদস্যরাও আছেন।

তারেক রহমানের গণসংবর্ধনার জন্য তৈরি হওয়া মঞ্চের সামনে কথা হয় নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি ছাত্রদলের সহসভাপতি ফেরদৌস নাভিদের সঙ্গে। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, আগামী দিনগুলোয় তারেক রহমানের নেতৃত্বে তাঁরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে নতুন বাংলাদেশ গড়ে তুলবেন। যেখানে থাকবে ন্যায়বিচার, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, মানুষের ভোটের অধিকার ও জনগণের শাসন। এই ঐতিহাসিক মুহূর্তের প্রত্যাশায় তাঁরা সবাই বুকভরা আশা নিয়ে তাঁর (তারেক রহমান) অপেক্ষায় আছেন।

তারেক রহমানের স্বদেশে ফিরে আসা উপলক্ষে আয়োজিত সংবর্ধনায় অংশ নিতে গতকাল মঙ্গলবার ঢাকায় এসেছেন টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক আনোয়ার হোসাইন। মঞ্চের সামনে দাঁড়িয়ে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘আগামী দিনের বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী এবং আমাদের নেতাকে স্বাগত জানাতে এসেছি। আমরা বিশ্বাস করি, মানুষ বিএনপিকে ভোট দিয়ে আমাদের নেতা তারেক রহমানকে প্রধানমন্ত্রী করবেন।’

ছাত্রদলের এক কর্মী সহকর্মীর মাথায় ব্যান্ড বেঁধে দিচ্ছেন

তারেক রহমানকে স্বাগত জানাতে গতকাল ঢাকায় এসেছেন পটুয়াখালী জেলা মহিলা দলের সেক্রেটারি ফারজানা ইয়াসমিন রুমা। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা আগেই চলে এসেছি। আমাদের আরও নেতা–কর্মী লঞ্চে আগামীকালের অনুষ্ঠানে আসবেন। আমরা আমাদের নেতাকে ঐতিহাসিক স্বাগত জানাতে চাই।’

তারেক রহমান ২০০৭ সালে এক–এগারোর পটপরিবর্তনের পর গ্রেপ্তার হন। ২০০৮ সালে কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে চিকিৎসার জন্য সপরিবার যুক্তরাজ্যে যান। এর পর থেকে তিনি সে দেশেই আছেন।