ফরিদপুরের মধুখালীতে এক মন্দিরের প্রতিমায় আগুন লাগানোকে কেন্দ্র করে বিক্ষুব্ধ লোকজনের পিটুনিতে দুজন শ্রমিকের মৃত্যুর ঘটনার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে হেফাজতে ইসলাম। আজ এক বিবৃতিতে কওমি মাদ্রাসাভিত্তিক এই সংগঠন বলেছে, শুধু সন্দেহের বশে শ্রমিকদের ওপর এই নিষ্ঠুর হামলা চালানো হয়। এ ঘটনা সাম্প্রদায়িক উসকানির শামিল।
হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির আল্লামা শাহ মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী ও মহাসচিব সাজিদুর রহমান আজ শনিবার এই বিবৃতি দিয়েছেন। বিবৃতিতে ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি করা হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক অনন্য দেশ। এ দেশের অধিবাসীদের ধর্মীয় বিশ্বাসে বৈচিত্র্য থাকলেও আবহমানকাল থেকেই নিজেদের মধ্যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিদ্যমান। কিন্তু গত পরশু (বৃহস্পতিবার) ফরিদপুর জেলার মধুখালী উপজেলার এক মন্দিরে আগুনের ঘটনায় নিছক সন্দেহের বশে স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন নৃশংসভাবে দুজন মুসলিম শ্রমিককে হত্যা ও পাঁচজনকে আহত করে।’
হেফাজতের শীর্ষ দুই নেতা বলেন, ‘এমন জঘন্যতম ঘটনায় আমরা বাকরুদ্ধ। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’
হেফাজতের আমির ও মহাসচিব বলেন, মধুখালী থানার ডুমাইন ইউনিয়নের পঞ্চপল্লি গ্রামের কালীমন্দিরে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আগুন লাগে। কীভাবে এর সূত্রপাত হয়, তা এখনো জানা যায়নি। সন্ধ্যায় মন্দিরে প্রদীপ জ্বালানোর ১০ থেকে ১৫ মিনিটের মধ্যেই সেখানে আগুনের সূত্রপাত ঘটে। তখন মন্দিরের পাশের বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণে সাতজন মুসলিম শ্রমিক ছিলেন। কিন্তু কেউ তাঁদের আগুন দিতে দেখেনি বা আগুন দেওয়ার হীন উদ্দেশ্য থাকতে পারে—এমন সন্দেহ করারও কোনো যৌক্তিক কারণ এখন পর্যন্ত খুঁজে পাওয়া যায়নি। তবু শুধু সন্দেহের বশে ওই শ্রমিকদের ওপর নিষ্ঠুর হামলা চালিয়েছে। এ ঘটনা স্পষ্টতর সাম্প্রদায়িক উসকানির শামিল।
বিবৃতিতে হেফাজতের দুই নেতা বিচার বিভাগীয় তদন্তের মাধ্যমে এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে সরকারের কাছে দাবি জানান। তাঁরা বলেন, সরকার যদি এ ক্ষেত্রে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হয়, আর এর ফলে পরিস্থিতি যদি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়, এর দায় সরকারকেই বহন করতে হবে।