রাজধানীর বিভিন্ন জায়গা থেকে মিছিল নিয়ে দলে দলে সমাবেশে যোগ দিচ্ছেন জামায়াতের নেতা-কর্মীরা। আজ শনিবার দুপুরে
রাজধানীর বিভিন্ন জায়গা থেকে মিছিল নিয়ে দলে দলে সমাবেশে যোগ দিচ্ছেন জামায়াতের নেতা-কর্মীরা। আজ শনিবার দুপুরে

শাহবাগে জামায়াতের নেতা-কর্মীদের ভিড়, স্ক্রিনে সমাবেশ দেখছেন অনেকে

রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ‘জাতীয় সমাবেশে’ যোগ দিচ্ছেন নেতা-কর্মীরা। আজ শনিবার সকাল থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন জায়গা থেকে মিছিল নিয়ে দলে দলে সমাবেশে যোগ দিচ্ছেন নেতা-কর্মীরা।

সকাল ১০টায় পবিত্র কোরআন তিলাওয়াতের মধ্য দিয়ে সমাবেশের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছে। সমাবেশস্থলে নেতা-কর্মীদের বিপুল উপস্থিতি দেখা গেছে। সকালে হামদ, নাত ও ইসলামি সংগীত পরিবেশন করা হয়। সমাবেশের মূল পর্ব শুরু হবে বেলা দুইটায়। সমাবেশ ঘিরে শাহবাগে নেতা-কর্মীদের ভিড় দেখা গেছে।

ভিড়ের কারণে সমাবেশের মূল মাঠে ঢুকতে না পেরে অনেকেই শাহবাগ মোড়, রমনা পার্ক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার বিভিন্ন সড়কে বসে পড়েন। শাহবাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় বসানো ডিজিটাল পর্দায় সমাবেশ দেখছেন তাঁরা।

সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত রাজধানীর মোহাম্মদপুর, ধানমন্ডি, ফার্মগেট, কারওয়ান বাজার, বাংলামোটর, শাহবাগ, গুলিস্তান, নিউমার্কেট এলাকা ঘুরে জামায়াতের নেতা-কর্মীদের সরব উপস্থিতি দেখা গেছে। সরেজমিনে এসব এলাকা ঘুরে দেখা যায়, কারও কারও পরনে জামায়াতের লোগোসংবলিত টি-শার্ট। কারও কারও মাথায় বাঁধা দলীয় সাদা ফিতা। আবার কেউ কেউ এনেছেন দলীয় প্রতীক দাঁড়িপাল্লা।

মিছিল নিয়ে স্লোগান দিয়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশস্থলের দিকে যাচ্ছেন তাঁরা। ট্রাফিক পুলিশের পাশাপাশি রাস্তার মোড়ে মোড়ে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করছেন জামায়াতের স্বেচ্ছাসেবকেরা।

সমাবেশ ঘিরে সকাল থেকেই ঢাকায় গণপরিবহন চলাচল সীমিত রয়েছে। শাহবাগ এলাকায় বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। শুধু ব্যক্তিগত গাড়ি, মোটরসাইকেল, রিকশা ও অ্যাম্বুলেন্স চলছে।

শাহবাগ মোড়ে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করছেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণের স্বেচ্ছাসেবক রাকিবুল ইসলাম। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘শাহবাগ এলাকায় দুটি বড় হাসপাতাল রয়েছে। সেখানে রোগীদের আসা–যাওয়ায় যাতে সমস্যা না হয়, সেটি আমরা খেয়াল রাখছি। কোনো অ্যাম্বুলেন্স আসলে অগ্রাধিকার দিয়ে পার করে দিচ্ছি।’

রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জামায়াতের সমাবেশে নেতা-কর্মীদের বিপুল উপস্থিতি। আজ শনিবার দুপুরে

জামায়াতের জাতীয় সমাবেশের মূল মঞ্চ করা হয়েছে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের পূর্ব পাশে। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যা থেকেই দেশের বিভিন্ন জেলা, উপজেলা থেকে সমাবেশস্থলে জড়ো হতে শুরু করেন দলটির নেতা-কর্মীরা।

সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলা থেকে এসেছেন আবু বকর সিদ্দিক। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘সকাল ৯টায় ঢাকায় এসে পৌঁছেছি। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ঢুকতে পেরে শাহবাগেই বসে পড়েছি। এখানে বড় পর্দায় দেখছি।’

রাজশাহী শহর থেকে সমাবেশে যোগ দিতে আসা আসাদুল আলম বলেন, ‘সকালে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ঢুকেছিলাম। মানুষের ভিড়ে কিছুই দেখা যায় না। তাই বের হয়ে শাহবাগ বড় পর্দার সামনে এসে বসেছি। এখান থেকেই সমাবেশ দেখব।’

জাতীয় সমাবেশে সভাপতিত্ব করবেন দলের আমির শফিকুর রহমান। এতে দলের কেন্দ্রীয় নেতারা বক্তব্য দেবেন। জামায়াতে ইসলামী গত বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলন করে জানিয়েছে, সমাবেশে তারা বিএনপি, এনসিপি, ইসলামী আন্দোলনসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের আমন্ত্রণ জানিয়েছে। তাঁরাও বক্তব্য দেবেন।

জামায়াত জানিয়েছে, এই সমাবেশে তাদের মূল দাবি হবে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ এবং শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে সবার জন্য সমান সুযোগ তৈরি করা, মৌলিক সংস্কার, জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র বাস্তবায়ন, সংখ্যানুপাতিক (পিআর) পদ্ধতিতে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠান প্রভৃতি।

সমাবেশ সফল করতে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে দলটি। সমাবেশে নেতা-কর্মীদের যাতায়াতের জন্য ময়মনসিংহ, সিরাজগঞ্জ, রাজশাহী ও চট্টগ্রাম থেকে চার জোড়া বিশেষ ট্রেন ভাড়া করেছে দলটি। এই ৪ ট্রেন ভাড়া করতে দলটিকে গুনতে হয়েছে প্রায় ৩২ লাখ টাকা।