সুপ্রিম কোর্টের কনফারেন্স কক্ষের সামনে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক। ঢাকা, ১১ অক্টোবর
সুপ্রিম কোর্টের কনফারেন্স কক্ষের সামনে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক। ঢাকা, ১১ অক্টোবর

জাতীয় পার্টিকে সমাবেশ করতে না দেওয়ায় পুলিশের প্রশংসা নুরুল হকের

রাজধানীর কাকরাইলে জাতীয় পার্টিকে সমাবেশ করতে না দেওয়ায় পুলিশের প্রশংসা করেছেন গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক। তিনি বলেছেন, সারা দেশ থেকে নেতা-কর্মী এনে, আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী জড়ো করে তারা এই সমাবেশ করতে চেয়েছিল। এর মাধ্যমে বিশৃঙ্খলা ও নৈরাজ্য তৈরি করতে চেয়েছিল দলটি। পুলিশ তাদের সে সুযোগ দেয়নি, বিষয়টি ইতিবাচক।

আজ শনিবার রাতে সুপ্রিম কোর্টের কনফারেন্স কক্ষের সামনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে নুরুল হক এসব কথা বলেন। সেখানে গত আগস্ট মাসে গণ অধিকার পরিষদের সভাপতিসহ দলের নেতা-কর্মীদের ওপর হওয়া হামলার ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিশনের সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন নুরুল হক। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন গণ অধিকার পরিষদ সভাপতি।

আজ বিকেলে কাকরাইলে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে পুলিশের বাধায় দলটির সমাবেশ পণ্ড হয়ে যায়। পুলিশের ভাষ্য, মৌখিকভাবে জাতীয় পার্টিকে বলা হয়েছিল রাস্তা দখল না করে কর্মসূচি পালন করতে। কিন্তু তারা রাস্তার ওপর চেয়ার বসিয়ে মঞ্চ স্থাপন করে। কয়েকবার তাদের সতর্ক করার পরও শোনেনি।

রাতে জাতীয় পার্টি প্রসঙ্গে নুরুল হক বলেন, আওয়ামী লীগের নেতাদের পাশাপাশি জাতীয় পার্টির অনেক নেতার বিরুদ্ধেও মামলা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে গত ১৫ বছরে লুটপাট, গুম, খুন, মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ রয়েছে। কিন্তু এত দিনেও তাঁদের বিচার না হওয়া দুঃখজনক।

কেন্দ্রীয় কার্যালয় হিসেবে জাতীয় পার্টি যে ভবনটি ব্যবহার করে, সেটি এস আলম গ্রুপের বলে দাবি করেন নুরুল হক। তিনি বলেন, জাতীয় পার্টি সেখানে বসে বিশৃঙ্খলা করতে চাইলে বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখার দায়িত্ব আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর। তিনি বলেন, ‘আজকে তারা দেখেছে। আশা করি, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী শক্ত হবে এবং তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।’

গত ২৯ আগস্ট রাতে কাকরাইলে জাতীয় পার্টি ও গণ অধিকার পরিষদের নেতা-কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। পরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হামলায় গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হকসহ বেশ কয়েকজন আহত হন। এ ঘটনায় গুরুতর আহত নুরুল হককে পরবর্তী সময়ে সরকারি খরচে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসা শেষে ৪ অক্টোবর দেশে ফেরেন তিনি।

ওই দিনের ঘটনায় সেনাবাহিনীর কমান্ডিং কর্মকর্তাদের সম্পৃক্ততা ছিল দাবি করে গণ অধিকার পরিষদ সভাপতি সাংবাদিকদের বলেন, ‘গণ অধিকার পরিষদের ওপর হামলা করা হয়েছিল সেনা কর্মকর্তাদের একটি অংশ বা তাদের নির্দেশে। জাতীয় পার্টিকেও পৃষ্ঠপোষকতা দিতে চাইছে সেনাবাহিনীর মধ্যে থাকা ফ্যাসিবাদের দোসররা। জাতীয় পার্টির মধ্য দিয়ে তারা আওয়ামী লীগ বা ফ্যাসিবাদকে আবার ফিরিয়ে আনতে চায়। সে জন্য জাতীয় পার্টিকে যারা রাজনৈতিকভাবে স্পেস দিতে চাইছে, তাদের খুঁজে বের করা দরকার।’

নুরুল হক বলেন, যারা রিফাইন্ড আওয়ামী লীগের নামে দলটিকে নির্বাচনে চাইছে বা জাতীয় পার্টিকে নির্বাচনে চাইছে, তারা বিনা উসকানিতে এই হামলা চালিয়েছে। এর মাধ্যমে তারা দেশকে অস্থিতিশীল করার ও ক্ষমতা দখলের চেষ্টা হতে পারে।

গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি বলেন, তদন্ত কমিটি তাঁর কথা শুনেছে, বক্তব্য রেকর্ড করেছে। ঘটনাস্থলের ভিডিও এবং বিষয়টি নিয়ে লিখিত বক্তব্য চেয়েছে। কমিশন তাঁকে আশ্বস্ত করেছে, একটি নিরপেক্ষ তদন্ত করে তারা একটি সঠিক প্রতিবেদন দেবে। তার ভিত্তিতে সরকারও ব্যবস্থা নেবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন নুর।

এর আগে ৬ অক্টোবর একই ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিশনের সঙ্গে বৈঠক করেন গণ অধিকার পরিষদের নেতা–কর্মীরা। বৈঠকে পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খানসহ উচ্চতর পরিষদ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।