জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান আজ শুক্রবার ঢাকার মিরপুর-১০-এর সেনপাড়া পর্বতা ঈদগাহ মাঠে দলের এক সমাবেশে বক্তব্য দেন
জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান আজ শুক্রবার ঢাকার মিরপুর-১০-এর সেনপাড়া পর্বতা ঈদগাহ মাঠে দলের এক সমাবেশে বক্তব্য দেন

‘জুলাই বিপ্লবীদের’ প্রতি সুবিচারে সরকার ব্যর্থ: জামায়াত আমির

জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের আগে ‘জুলাই যোদ্ধাদের’ সঙ্গে সরকারের আচরণের সমালোচনা করেছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান।

শফিকুর রহমান বলেছেন, ‘জুলাই বিপ্লবীরা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান। কিন্তু অন্তর্বর্তীকালীন সরকার তাঁদের সাংবিধানিক স্বীকৃতি দিচ্ছে না। অর্জিত এ বিপ্লব ও বিপ্লবীদের যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করতে হলে জুলাই সনদকে সাংবিধানিক স্বীকৃতি দিতে হবে। কিন্তু সরকার তাঁদের সঙ্গে সুবিচার করতে ব্যর্থ হয়েছে।’

আজ শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর মিরপুর-১০-এর সেনপাড়া পর্বতা ঈদগাহ মাঠে জামায়াত আয়োজিত এক শ্রমিক সমাবেশে শফিকুর রহমান এ কথা বলেন বলে দলটির ঢাকা মহানগর উত্তর শাখার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।

এই সমাবেশ চলার মধ্যে কয়েক কিলোমিটার দূরে জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠান হয়। অপরাপর রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সেই অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে জুলাই সনদে সই করেন জামায়াতের নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের ও সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার।

ওই অনুষ্ঠান শুরুর আগে সকালে মঞ্চের সামনে অবস্থান নেন ‘জুলাই যোদ্ধা’ পরিচয়ে কয়েক শ জন। তাঁরা জুলাই আন্দোলনে অবদানের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি, আইনি সুরক্ষা, পুনর্বাসন বাস্তবায়নের দাবি জানাতে থাকে। দুপুরে পুলিশ পিটিয়ে তাঁদের সেখান থেকে তুলে দেয়।

সেই ঘটনার দিকে ইঙ্গিত করে মিরপুরের সমাবেশে জামায়াতের আমির শফিকুর বলেন, ‘দাবি আদায়ে তাঁদেরকে আবারও রাজপথে নামতে হচ্ছে। আর সে দাবি আদায়ের লক্ষ্যেই তাঁরা জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় অবস্থান গ্রহণ করেছেন। সরকার তাঁদের সঙ্গে কী ধরনের আচরণ করেছে, তা আমার কাছে এখনো স্পষ্ট নয়। তবে যা শোনা যাচ্ছে, তাতে আমি লজ্জিত ও ব্যথিত।’

জুলাই অভ্যুত্থানে ত্যাগের দিকটি তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘মূলত ছাত্র, তরুণ-যুবক ও শ্রমিক সমাজের ঐক্যবদ্ধ বিপ্লবের কাছে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা ক্ষমতা ছেড়ে বিদেশে পালাতে বাধ্য হয়েছেন। এ জন্য রাজপথে অনেকেই জীবন দিয়েছেন। হাজার হাজার মানুষ আহত ও পঙ্গুত্ববরণ করেছেন। অনেকে ব্যবসা-বাণিজ্য, চাকরিবাকরিসহ জীবন-জীবিকার অনুষঙ্গ হারিয়েছেন। ভিটেছাড়া করা হয়েছে অনেককেই। এমনকি বিরোধী মতের লোকজনের বাড়িঘর ভেঙে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দিয়ে আশ্রয়হীন করা হয়েছে।’

আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে জামায়াতের ওপর নজিরবিহীন জুলুম–নির্যাতন হয়েছে দাবি করে শফিকুর রহমান বলেন, ‘শেষ পর্যন্ত ফ্যাসিবাদীরা জামায়াতকে নিষিদ্ধ করেছিল, কিন্তু তাদের শেষ রক্ষা হয়নি। আজ তারা ইতিহাসের আস্তাকুঁড়ে নিক্ষিপ্ত হয়েছে।’

সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের নায়েবে আমির আবদুর রহমান মুসা। বিশেষ অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগর উত্তরের আমির মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি লস্কর মোহাম্মদ তসলিম এবং ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি মাওলানা মুহিব্বুল্লাহ।

সেলিম উদ্দিন বলেন, আসন্ন নির্বাচন দেশ ও জাতির ভাগ্য নির্ধারণ করবে। তাই কোনো শ্রেণি বা পেশার মানুষকে ঘরে বসে থাকার সুযোগ নেই। সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে ময়দানে কাজ করতে হবে।