ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার শাসনামলে সংঘটিত সব গুম, খুন ও অপহরণের বিচার দ্রুত সম্পন্ন করার দাবি জানিয়েছেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হক। তিনি বলেছেন, অপরাধী যত প্রভাবশালীই হোক না কেন, আইনের আওতায় আনতে হবে।
রাজধানীর পুরানা পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আজ শনিবার সকালে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের নির্বাহী কমিটির বৈঠকে এ কথাগুলো বলেন মামুনুল হক। তিনি বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন।
বৈঠকে জাতীয় নির্বাচনে সবার জন্য সমান সুযোগ তৈরিসহ পাঁচ দফা দাবিতে আগামী ২৯ নভেম্বর ঢাকায় মহাসমাবেশের কর্মসূচি নেওয়া হয়। বৈঠকে জুলাই সনদ দ্রুত বাস্তবায়নের দাবিতে আগামীকাল রোববার জেলা প্রশাসকদের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টাকে স্মারকলিপি প্রদান কর্মসূচি সফল করার আহ্বান জানানো হয়। সেই সঙ্গে আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণের প্রক্রিয়া নির্ধারণে ২৫ অক্টোবর কেন্দ্রীয় সাধারণ পরিষদের অধিবেশন আহ্বান করা হয়।
পরে নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির বলেন, আগামী নির্বাচনে খেলাফত মজলিস এককভাবে, সমঝোতার ভিত্তিতে বা জোটগতভাবে—যেভাবেই অংশগ্রহণ করুক না কেন, দলের মূল দৃষ্টিভঙ্গি থাকবে ভারতীয় আধিপত্যবাদ প্রতিরোধ, ফ্যাসিবাদবিরোধী ঐক্য সুসংহত করা এবং ‘বাংলাদেশ পন্থা’র জাগরণ ঘটানো। তিনি বলেন, ‘কোনোভাবেই পরাজিত ফ্যাসিবাদকে ফিরে আসতে দেব না, ফ্যাসিবাদ যে নামেই ফিরুক না কেন।’
মাওলানা মামুনুল হক বলেন, ‘জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি তৈরি করে সে অনুযায়ী জাতীয় নির্বাচনের আয়োজন ছাড়া রাজনৈতিক ব্যবস্থায় কোনো গুণগত পরিবর্তন আসবে না। অন্যথায় আবারও ফ্যাসিবাদী, স্বৈরাচারী শাসন ফিরে আসবে এবং ভারতীয় আধিপত্যবাদের খবরদারি শুরু হবে। আমরা ২০২৪ সালের আগের বন্দোবস্তে ফেরার যেকোনো কৌশল জনগণকে সঙ্গে নিয়ে রুখে দেব, ইনশা আল্লাহ।’
গুম, খুন ও অপহরণের বিচারের প্রসঙ্গে তুলে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির বলেন, বিগত ফ্যাসিস্ট হাসিনার আমলে সংঘটিত শাপলা হত্যাকাণ্ড, বিডিআর হত্যাকাণ্ডসহ প্রতিটি গুম, খুন ও অপহরণের বিচার দ্রুত সম্পন্ন করতে হবে। অপরাধীরা যত প্রভাবশালীই হোক না কেন, তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে।
মাওলানা মামুনুল হক বলেন, এসব অপরাধীই অতীতে ভারতীয় আধিপত্যবাদকে বাংলাদেশে বৈধতা দিতে এবং তখনকার শাসন টিকিয়ে রাখতে ‘জঙ্গি নাটক’ সাজিয়েছিল। এর মাধ্যমে আন্তর্জাতিক মহলে বাংলাদেশ সম্পর্কে আতঙ্ক ছড়ানো হয়। হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, এই অপরাধীদের দায়মুক্তি দেওয়ার কোনো চেষ্টা হলে প্রতিরোধ করা হবে।
দলের মহাসচিব মাওলানা জালালউদ্দীন আহমদের পরিচালনায় বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন নায়েবে আমির মাওলানা ইউসুফ আশরাফ, রেজাউল করিম জালালী, মাওলানা আলী উসমান, মুফতি সাঈদ নূর, মাওলানা মুহিউদ্দীন রব্বানী, মাওলানা শাহীনুর পাশা চৌধুরী, মাওলানা কোরবান আলী কাসেমী, মাওলানা মাহবুবুল হক, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আতাউল্লাহ আমীন, মাওলানা আবদুল আজীজ, মুফতি শরাফত হোসাইন, মাওলানা তোফাজ্জল হোসাইন মিয়াজী, মাওলানা শরীফ সাইদুর রহমান প্রমুখ।