
দেশের বেশির ভাগ ভোটার নির্বাচনে সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) পদ্ধতি চান বলে দাবি করেছেন জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার। তিনি বলেন, পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন হলে মনোনয়ন–বাণিজ্য বন্ধ হবে।
আজ সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক গোলটেবিল বৈঠকে এ কথা বলেন মিয়া গোলাম পরওয়ার। ‘পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন ও জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকটির আয়োজক ফোরাম অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স, বাংলাদেশ (এফডিইবি)। বৈঠকে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন এফডিইবির সাধারণ সম্পাদক জয়নুল আবেদীন।
নির্বাচনে মনোনয়ন–বাণিজ্য নিয়ে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘দোকান খুলে বসে থাকে দোকানদারের মতো, যাও সিট (আসন) বিক্রি হবে। টাকা কে কত দেবে? নিলাম হতে হতে হায়েস্ট (সর্বোচ্চ) যে পায়, তারে দিয়ে দেয়। টাকা কিন্তু নেতার পকেটে চলে যায়।’
পিআর নিয়ে একটি রাজনৈতিক দল দেশের মানুষকে বিভ্রান্তিকর তথ্য দিচ্ছে অভিযোগ করে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, প্রধান আট-নয়টি দল এখন পিআর চাচ্ছে। হ্যাঁ, এখানে কিছু ভিন্নমত আছে। কেউ বলছে শুধু আপার হাউসে (উচ্চকক্ষ) এবার হোক; কেউ বলছে, না, আপার হাউস ও লোয়ার হাউস (নিম্নকক্ষ) দুই হাউসেই হোক। সেটা আলোচনা সাপেক্ষে হতে পারে।
মিয়া গোলাম পরওয়ার প্রশ্ন তোলেন, সংস্কার বাস্তবায়ন না করতে পারলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের এত আলোচনা কেন হলো? তিনি বলেন, ‘একটি দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য এ কথা বলেছেন, “এখন আপনারা যা সংস্কার করেন, যা আইন বানান, আমরা ক্ষমতায় গিয়ে সব মুছে দেব।” মনে আছে না? ডকুমেন্টস (প্রমাণ) আছে।’
ওই দলকে ইঙ্গিত করে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল আরও বলেন, ‘তারা আগামী পার্লামেন্টে আসার হয়তো স্বপ্ন দেখেন। কোন স্বপ্ন কাজে লাগে, কোন স্বপ্ন দুঃস্বপ্ন হয়ে যায়, আল্লাহ ভালো জানেন। মনে মনে সব...মানে সরকারে যাওয়ার আগে, সরকার দখলের আগে বাসস্ট্যান্ড, টেম্পোস্ট্যান্ড দখল হয়ে যাইতেছে।’
পিআর পদ্ধতির কথা সংবিধানে নেই—প্রধান নির্বাচন কমিশনারের এ মন্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘কোন পদ্ধতিতে নির্বাচন হবে, জনগণ, ইলেকশন কমিশন উইল ডিসাইড (সিদ্ধান্ত নেবে)। পিআর পদ্ধতিতে হবে না, তা–ও তো লেখা নেই।’ আগামী ২০২৬ সালের নির্বাচনও কোনো সংবিধানের আওতায় পড়বে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
গোলটেবিল বৈঠকে এফডিইবির সভাপতি আবদুছ ছাত্তার বলেন, পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন হলে সবার অংশগ্রহণ নিশ্চিত হবে।
বৈঠকে অন্যদের বক্তব্য দেন সাপ্তাহিক সোনার বাংলা পত্রিকার চেয়ারম্যান এ কে এম রফিকুন্নবী, চট্টগ্রাম ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম প্রমুখ।