
বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে দেখতে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালের সামনে ভিড় করছেন দলের নেতা–কর্মীরা।
আজ রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে এভারকেয়ার হাসপাতালের সামনে ভিড় দেখা যায়।
রাজধানীর উত্তরখান থেকে এসেছেন থানা বিএনপির সাবেক জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সম্পাদক শাহাদাত হোসেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘এখানে আসছি আপডেটটা জানার জন্য। আসতে নিষেধ করা হলেও মন তো মানে না। মনের টানে, ভালোবাসা টানে আসছি।’
সকাল সাড়ে ১০টার দিকে হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন গাজীপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক এ কে এম ফজলুল হক মিলন। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা তাঁর চিকিৎসকেরা বলতে পারবেন। খালেদা জিয়া যাতে সুস্থ হয়ে যান, সে জন্য তিনি সবাইকে দোয়া করার আহ্বান জানান।
খালেদা জিয়াকে দেখতে এসেছেন সিংড়া উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আবিদুর রহমান খান রোমান। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘দেশনেত্রী খালেদা জিয়া অসুস্থ। তিনি ফিরে আসুন—এটি আমাদের চাওয়া। আমরা বলি, আল্লাহ, তুমি তাঁকে রোগমুক্ত করে আমাদের ১৮ কোটি মানুষের মধ্যে ফিরিয়ে দাও।’ হাসপাতালের ভেতরে গেলেও দেখা করার সুযোগ পাননি বলে জানান বিএনপির এই নেতা। কেবল চিকিৎসকেরাই খালেদা জিয়ার কাছে যেতে পারছেন বলে জানান তিনি।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের গুজবে কান না দিতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান মানিকগঞ্জ থেকে আসা বিএনপির এই নেতা।
টাঙ্গাইল থানা বিএনপির সহসভাপতি আসিফুজ্জামান আসিফ দাঁড়িয়ে ছিলেন হাসপাতালের সামনে। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘বাইরে অপেক্ষা করতেছি, তাঁর সুস্থতার জন্য দোয়া করতেছি। শুনলাম, আজকে সকাল থেকে তিনি কথা বলতেছেন। শুনে খুব ভালো লাগল।’
৮০ বছর বয়সী খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে হৃদ্রোগ, ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিস, লিভার সিরোসিস, কিডনির জটিলতাসহ নানা শারীরিক জটিলতায় ভুগছেন। গত রোববার শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে দ্রুত তাঁকে এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। তিনি এখন হাসপাতালের করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) রয়েছেন। মেডিকেল বোর্ডের দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর চিকিৎসা চলছে। গত শুক্রবার রাতে তাঁর অবস্থা অত্যন্ত সংকটাপন্ন হওয়ার কথা জানিয়েছিলেন বিএনপির নেতারা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছে, গত বুধ, বৃহস্পতি ও শুক্রবারের চেয়ে গতকাল খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থায় সামান্য উন্নতি দেখা গেছে। তবে সামগ্রিক সংকট কাটেনি। বিশেষত কিডনির কার্যকারিতা মারাত্মকভাবে কমে যাওয়ায় তাঁকে টানা চার দিন ডায়ালাইসিস করতে হয়েছে।
চিকিৎসকেরা পরিস্থিতিকে এখনো ‘গুরুতর’ হিসেবে বিবেচনা করছেন। তাঁদের পর্যবেক্ষণ হচ্ছে, আগামী কয়েকটি দিন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিডনি কার্যক্ষমতায় স্থিতিশীলতা ছাড়া তাঁর সামগ্রিক শারীরিক অবস্থায় স্থায়ী উন্নতি আসা কঠিন।
খালেদা জিয়ার অসুস্থতার খবরে এভারকেয়ার হাসপাতালের সামনে ভিড় করছেন নেতা-কর্মীরা। কেউ কেউ বিভিন্ন ব্যানারে গণমোনাজাত কর্মসূচি করেছেন। এতে ওই এলাকায় যান চলাচলে ব্যাঘাত সৃষ্টি করছে। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নেতা-কর্মীদের সেখানে ভিড় না করার অনুরোধ জানিয়েছেন।